নিউইয়র্ক ষ্টেটের মানব সেবার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ সিডিপ্যাপ সার্ভিস রক্ষার জন্য ষ্টেট ও সিটির সকল জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশী কমিউনিটিতে হোম কেয়ার সেবার পথিকৃৎ, গ্লোবাল পিস অ্যাম্ব্যাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। তিনি নিউইয়র্ক ষ্টেটের অ্যাসেম্বলী ও সিনেট মেম্বারদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করে বলেন, আপনারা রাজনীতিক। আপনারা আমাদের ভোটে নির্বাচিত। মনে রাখতে হবে, আগামী নির্বাচনেও আপনাদের ভোটের প্রয়োজন আছে। আমরা এখন অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবো, কে মানুষের জন্য কাজ করছেন, কে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আর কে জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। আমরাও তাদের এই ভূমিকা দেখেই আগামীতে সিদ্ধান্ত নিতে চাই। শিগগিরই ষ্টেট হাউজ এ বিষয়ে বিল উত্থাপন হবে। সে সময় এগিয়ে আসছে। সেখানে আমরা আপনাদের সমর্থন চাই।ড. জাফর মাহমুদ গত ১৩ জানুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যামাইকার আল আকসা পার্টি হলে নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাব, নিউ আমেরিকান ইয়ুথ ফোরাম ও নিউ আমেরিকান উইমেনস ফোরাম আয়োজিত বার্ষিক সুধি সমাবেশ ও নৈশভোজ অনুষ্ঠানে সম্মাণিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউএস কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং, নিউইয়র্ক সিটি পাবলিক এডভোকেট জুমানি উইলিয়ামস, ষ্টেট সিনেটর লিরয় কমরি, ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু, অ্যাসেম্বলী মেম্বার জোহরান মান্দানি, অ্যাসেম্বলী মেম্বার এলিসায়া হ্যান্ডমান, অ্যাসেম্বলী মেম্বার স্টিভেন রাগা, সিটি কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণাণ, সিটি কাউন্সিলওমেন লিন্ডা লি, সিটি কাউন্সিলওমেন সান্দ্রা উং, ডিস্ট্রিক্ট লিডার প্রেস্টন ব্রেকার, ডিস্ট্রিক্ট লিডার মুফাজ্জাল হোসাইন, ডিস্ট্রিক্ট লিডার ও কমিউনিটি বোর্ড-৮ এর চেয়ারপারসন মার্থা টেইলর, ডিস্ট্রিক্ট লিডার ফামেলা বন্টুফোর্ড, ডিস্ট্রিক্ট লিডার এট-লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, কমিউনিটি বোর্ড ১২ চেয়ারপারসন রেভেন ক্যারোল্যান থ্রোবস, কমিউনিটি বোর্ড ১২ ভাইস চেয়ারপারসন বেলাল কারীমসহ বিভিন্ন কমিউনিটির উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অতিথি। এশীয় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।আবু জাফর মাহমুদ তার বক্তব্যের প্রথম অংশে নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মোরশেদ আলমের সঙ্গে সংগঠনের সূচনালগ্ন থেকে সম্পৃক্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, আজ যেসব তরুণরা এই সংগঠনের নেতৃত্বের সারিতে কাজ করছেন, তারাও আগামী দিনের মূলধারার রাজনীতির জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করছেন এবং অন্যদের জন্য ক্ষেত্র তৈরি করছেন। এটি অনেক বড় কাজ। এরা আমাদের সন্তান। তাদেরকে এগিয়ে নেয়া আমাদের দায়িত্ব। তাদেরকে উজ্জীবিত করা ও পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্যই পাশে দাঁড়িয়েছি।তিনি নিউইয়র্ক ষ্টেট এর সিডিপ্যাপ সার্ভিসের সংকট নিয়ে বলেন, সিডিপ্যাপ সার্ভিসকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। বড় বড় কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের সিডিপ্যাপ সার্ভিসের ওপর খড়গ নামিয়ে আনা হয়েছে। ২১৭টি সিডিপ্যাস সার্ভিস এজেন্সিকে চিঠি দেয়া হয়েছে তাদের কার্যক্রম বন্ধের জন্য। এটি মেডিকেয়ার ও মেডিকেড বহনকারী বয়ষ্ক ও শারিরীকভাবে অক্ষম মানুষের জন্য এক অশনী সংকতে। এটি শুধু আমার মতো উদ্যোক্তাদের ক্ষতি, তা-ই নয়। এটি সিডিপ্যাপ ও হোম কেয়ার সেবার সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য মানুষ। এই নিউইয়র্ক স্টেটে আমাদের নয়টি অফিসের মাধ্যমে হোম কেয়ার ও সিডিপ্যাস সেবা দেয়া হচ্ছে। গত পনের বছরে বহু সংখ্যক এজেন্সি তৈরি হয়েছে। তাদেরও অনেক শাখা অফিস রয়েছে, কর্মী রয়েছেন। আমরা সবাই মিলে মিলিয়ন মিলিয়ন ব্যক্তি ও পরিবারের সেবা, কর্মসংস্থান ও জীবনধারণের জন্য কাজ করে চলেছি। এখন যদি এই মাঝারি ও ক্ষুদ্র সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যায়, তা শুধু এই বিপুল জনগোষ্ঠির স্বাভাবিক জীবন যাপনের ওপর প্রভাব পড়বে না, এর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে গোটা নিউইয়র্ক স্টেট তথা আমেরিকার ভাবমূর্তির ওপর।আবু জাফর মাহমুদ বলেন, সকল হোম কেয়ার এজেন্সির পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি নিয়োগ করে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ করেছি। আশার কথা হচ্ছে, নিউইয়র্ক ষ্টেট এর অ্যাসেম্বলীম্যান শেইগ ইতোমধ্যে নিউইয়র্ক ষ্টেট এর উচ্চ ও নিম্নকক্ষে বিষয়টি উত্থাপনের জন্য স্পন্সর হয়েছেন। আরো অনেক ষ্টেট অ্যাসেম্বলী মেম্বার সিনেট মেম্বার ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এ আমাদের সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন জাতিগেষ্ঠির প্রায় অর্ধশত এজেন্সি সিডিপ্যাপ রক্ষার জন্য আমার সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন। তিনি বলেন, এই সময়ে আমরা আপনাদের আহবান জানাই, আসুন একসঙ্গে বসে আলোচনা করি। নিউইয়র্ক সিটি ও ষ্টেট এর মানবিক প্লাটফরম সুরক্ষায় স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখি।অনুষ্ঠানে পুরো বছরের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন নুসরাত আলম। অনুষ্ঠানটি পর্ব আকারে উপস্থাপনা করেছেন নুসরাত আলম, পল গোপাল, অসিম সাহা এবং আহনাফ আলম। আমেরিকা ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন আলভান চৌধুরী ও সঙ্গীত মজুমদার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওমেন্স ফোরামের রুবাইয়া রহমান, ইয়ুথ ফোরামের আনুভা হোসেন।কংগ্রেসওমেন গ্রেস মেং তার বক্তব্যে বাংলাদেশী জনসমাজের এমন সংগঠিত কার্যক্রমে তার অব্যাহত সমর্থনের কথা জানান।নিউইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা বলেন, বাংলাদেশীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যতবেশী এগিয়ে যাবে, দেশের বাইরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ততবেশি এগিয়ে যাবে।অনুষ্ঠানে অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক প্রবাসী সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, সাপ্তাহিক প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরীসহ বিভিন্ন কমিউনিটির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অতিথি অনুষ্ঠানমালায় যোগ দেন। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্র্যান্ট সোসাইটিতে অবদান রাখার জন্য বেশ কয়েকজনকে বিশেষভাবে সম্মাণিত করা হয়। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।