নিউইয়র্ক ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইসরায়েলে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে নেতানিয়াহু-মোদির ফোনালাপ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪৬:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪৫ বার পঠিত

ফিলিস্তিনিদের পরিবর্তে ১ লাখ ভারতীয়কে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেবে ইসরায়েল। ছবি : টুইটার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  ইসরায়েলে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এক ফোনালাপে এ দুই নেতা ইসরায়েলে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগ ত্বরান্বিত করা নিয়ে আলোচনা করেছেন। জাতিসংঘে গাজায় জরুরি যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেওয়ার এক সপ্তাহ পরই এই ফোনালাপে যুক্ত হন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এ নিয়ে দুবার আলোচনা করেছেন মোদি ও নেতানিয়াহু। হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ২০ হাজার লোক নিহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) নরেন্দ্র মোদি বলেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে ‘চলমান ইসরায়েল–হামাস দ্বন্দ্ব’ সম্পর্কে ‘ফলপ্রসূ’ মতবিনিময় করেছেন। এ সময় তাঁরা লোহিতসাগর এলাকায় সামুদ্রিক যান চলাচল সম্পর্কেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে ইয়েমেনভিত্তিক হুতি বিদ্রোহীরা লোহিতসাগরে ইসরায়েল অভিমুখী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে মোদির পোস্টে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা না থাকলেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলছে, হুতিদের এই হামলাকে উসকে দিচ্ছে ইরান।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মোদি উল্লেখ করেছেন, নৌ চলাচলের স্বাধীনতা একটি অপরিহার্য বৈশ্বিক প্রয়োজনীয়তা, যা নিশ্চিত করা আবশ্যক। এ ছাড়া ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অব্যাহত মানবিক সহায়তার মাধ্যমে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার দ্রুত পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে ভারতের ধারাবাহিক অবস্থান তুলে ধরেন।

মোদি গত ৭ অক্টোবরেই ইসরায়েলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং ৯ অক্টোবরই নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক ফোন কলে তা আবার উল্লেখ করেন।

গত ২৬ অক্টোবর ভারত ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রথম প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। ওই প্রস্তাবে গাজায় চলমান যুদ্ধে মানবিক বিরতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তখন ভারতের যুক্তি ছিল, প্রস্তাবটির ভাষ্যে গত ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলার কোনো উল্লেখ নেই।

এরপর দুই মাস পরই প্রস্তাবের ভাষ্যে হামাসের উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও গাজায় যুদ্ধ বিরতির দ্বিতীয় প্রস্তাবে হ্যাঁ ভোট দিয়েছে ভারত।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলার পর থেকেই দেশটিতে কাজ করা প্রায় ৯০ হাজার ফিলিস্তিনির ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করা হয়। তাঁদের পরিবর্তে ১ লাখ ভারতীয়কে কাজে নিতে অনুমতি দিতে সরকারকে অনুরোধ জানান ইসরায়েলি আবাসন ব্যবসায়ীরা।

ভয়েস অব আমেরিকাকে ইসরায়েল বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাইম ফেইগলিন বলেন, ‘বর্তমানে আমরা ভারতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। ইসরায়েল সরকার আমাদের এ বিষয়ে অনুমতি দেবে, আমরা সেই অপেক্ষায় রয়েছি। আমরা আশা করছি, এই খাতে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ভারতীয়কে কাজে লাগানো সম্ভব হবে এবং খুব শিগগিরই এই খাত আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে।’

ফেইগলিন জানান, ইসরায়েলি আবাসন খাতের শ্রমিকদের মধ্যে শতকরা ২৫ জনই ফিলিস্তিনি। কিন্তু হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলি আবাসন খাতের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয় শ্রমিকের অভাবে। ফেইগলিন বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এবং এ কারণে আমাদের আবাসন খাতের শতকরা ২৫ শতাংশ শ্রমিক যারা আবার সবাই ফিলিস্তিনি কাজে আসতে পারছে না, তাদের ইসরায়েলে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।’

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ইসরায়েলে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে নেতানিয়াহু-মোদির ফোনালাপ

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৬:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  ইসরায়েলে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এক ফোনালাপে এ দুই নেতা ইসরায়েলে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগ ত্বরান্বিত করা নিয়ে আলোচনা করেছেন। জাতিসংঘে গাজায় জরুরি যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেওয়ার এক সপ্তাহ পরই এই ফোনালাপে যুক্ত হন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এ নিয়ে দুবার আলোচনা করেছেন মোদি ও নেতানিয়াহু। হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ২০ হাজার লোক নিহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) নরেন্দ্র মোদি বলেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে ‘চলমান ইসরায়েল–হামাস দ্বন্দ্ব’ সম্পর্কে ‘ফলপ্রসূ’ মতবিনিময় করেছেন। এ সময় তাঁরা লোহিতসাগর এলাকায় সামুদ্রিক যান চলাচল সম্পর্কেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে ইয়েমেনভিত্তিক হুতি বিদ্রোহীরা লোহিতসাগরে ইসরায়েল অভিমুখী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে মোদির পোস্টে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা না থাকলেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলছে, হুতিদের এই হামলাকে উসকে দিচ্ছে ইরান।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মোদি উল্লেখ করেছেন, নৌ চলাচলের স্বাধীনতা একটি অপরিহার্য বৈশ্বিক প্রয়োজনীয়তা, যা নিশ্চিত করা আবশ্যক। এ ছাড়া ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অব্যাহত মানবিক সহায়তার মাধ্যমে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার দ্রুত পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে ভারতের ধারাবাহিক অবস্থান তুলে ধরেন।

মোদি গত ৭ অক্টোবরেই ইসরায়েলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং ৯ অক্টোবরই নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক ফোন কলে তা আবার উল্লেখ করেন।

গত ২৬ অক্টোবর ভারত ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রথম প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। ওই প্রস্তাবে গাজায় চলমান যুদ্ধে মানবিক বিরতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তখন ভারতের যুক্তি ছিল, প্রস্তাবটির ভাষ্যে গত ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলার কোনো উল্লেখ নেই।

এরপর দুই মাস পরই প্রস্তাবের ভাষ্যে হামাসের উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও গাজায় যুদ্ধ বিরতির দ্বিতীয় প্রস্তাবে হ্যাঁ ভোট দিয়েছে ভারত।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলার পর থেকেই দেশটিতে কাজ করা প্রায় ৯০ হাজার ফিলিস্তিনির ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করা হয়। তাঁদের পরিবর্তে ১ লাখ ভারতীয়কে কাজে নিতে অনুমতি দিতে সরকারকে অনুরোধ জানান ইসরায়েলি আবাসন ব্যবসায়ীরা।

ভয়েস অব আমেরিকাকে ইসরায়েল বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাইম ফেইগলিন বলেন, ‘বর্তমানে আমরা ভারতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। ইসরায়েল সরকার আমাদের এ বিষয়ে অনুমতি দেবে, আমরা সেই অপেক্ষায় রয়েছি। আমরা আশা করছি, এই খাতে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ভারতীয়কে কাজে লাগানো সম্ভব হবে এবং খুব শিগগিরই এই খাত আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে।’

ফেইগলিন জানান, ইসরায়েলি আবাসন খাতের শ্রমিকদের মধ্যে শতকরা ২৫ জনই ফিলিস্তিনি। কিন্তু হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলি আবাসন খাতের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয় শ্রমিকের অভাবে। ফেইগলিন বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এবং এ কারণে আমাদের আবাসন খাতের শতকরা ২৫ শতাংশ শ্রমিক যারা আবার সবাই ফিলিস্তিনি কাজে আসতে পারছে না, তাদের ইসরায়েলে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।’

হককথা/নাছরিন