গির্জা ও খ্রিস্টানদের ওপর ইসরায়েলি হামলাকে ভয়াবহ বলছে যুক্তরাজ্য
- প্রকাশের সময় : ০৬:৫১:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৫৯ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গির্জা ও খ্রিস্টানদের ওপর ইসরায়েলি হামলাকে ‘ভয়াবহ’ বলে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। একইসঙ্গে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বানও জানিয়েছে দেশটি। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
গাজা উপত্যকায় প্রায় আড়াই মাস ধরে নির্বিচারে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর সঙ্গে চলছে স্থলপথেও অভিযান। অবিরাম এই হামলায় গাজা অনেকটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি এই আগ্রাসন থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার স্কুল, মসজিদ, গির্জা, শরণার্থী শিবির এমনকি হাসপাতালের মতো স্থাপনাও।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় গির্জা ও খ্রিস্টানদের ওপর ইসরায়েলের হামলাকে ‘ভয়াবহ’ বলে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে আনাদোলুর এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাজ্যের একজন সরকারি মুখপাত্র বলেছেন: ‘গাজার চার্চে আশ্রয় নেওয়া বেসামরিক নাগরিকদের নিহত ও আহত হওয়ার খবর ভয়ঙ্কর।’
সম্প্রতি গাজার এক গির্জার ভেতরে ইসরায়েলি স্নাইপারদের গুলিতে দুই ক্যাথলিক নারী নিহত হন। এই ঘটনার মতো সাম্প্রতিক বেসামরিক হতাহতের বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওই মুখপাত্র বলেন: ‘সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গাজা ও ইসরায়েলে সংঘটিত ট্র্যাজেডির দীর্ঘ তালিকার মধ্যে এটি আরও একটি ট্র্যাজেডি। আমরা বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্বাস করি, টেকসই শান্তির দিকে যাওয়ার জন্য টেকসই যুদ্ধবিরতি জরুরিভাবে প্রয়োজন।’
গাজার স্থানীয় ল্যাটিন ক্যাথলিক চার্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার একমাত্র ক্যাথলিক চার্চে গত শনিবার ইসরায়েলি স্নাইপার গুলি চালিয়ে একজন মা ও তার মেয়েকে হত্যা করেছে এবং আরও সাতজনকে আহত করেছে।
ব্রিটিশ ওই মুখপাত্র বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে আত্মরক্ষার জন্য আমরা ইসরায়েলের প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি। আরও বিস্তৃতভাবে, আমরা অবিলম্বে মানবিক বিরতির গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলেছি যা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি টেকসই যুদ্ধবিরতির দিকে নিয়ে যাবে। এবং আমরা সেই অবস্থান বজায় রাখব।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েল কেন আত্মরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে তা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ । হামাস বর্বরভাবে ইসরায়েল আক্রমণ করে এবং এখনও প্রতিদিন রকেট নিক্ষেপ করছে। আমরা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সাথে সঙ্গতি রেখে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার অব্যাহত রাখায় সমর্থন বজায় রাখব।’
গাজার সুড়ঙ্গে সমুদ্রের পানি প্রবেশ করানোর ইসরায়েলি পদক্ষেপের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের অবস্থান কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হচ্ছে ইসরায়েলের এমন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত নয় যা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে দুর্বল করে এবং এর বাইরে বাস্তবে কী ঘটছে সে সম্পর্কে আমি মন্তব্য করতে পারবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাজার সাংবাদিকরা অবিশ্বাস্যভাবে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তারা মানবিক আইনের অধীনে সুরক্ষিত। এবং আমরা সব পক্ষকে তাদের বিরুদ্ধে হামলা এড়ানোর আহ্বান জানাই।’
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকে টানা প্রায় আড়াই মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি এই আগ্রাসনের নিহত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজারের বেশি মানুষ।
হককথা/নাছরিন