নিউইয়র্ক ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিভক্ত ইসরাইলের মন্ত্রিপরিষদ, ‘নেতানিয়াহুকে কেউ বিশ্বাস করেন না’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৩১:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৫১ বার পঠিত

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিভক্ত ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিপরিষদ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউ আর নেতানিয়াহুকে বিশ্বাস করেন না। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলেছে, সপ্তাহান্তে একটি এক্সে (সাবেক টুইটার) টুইট করেন নেতানিয়াহু। তাতেই ইসরাইলের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ফাটল বেরিয়ে আসে। রোববার মধ্যরাতের সামান্য পরে নেতানিয়াহু টুইটে লিখেছেন, ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে হামাস যে রকেট হামলা চালিয়েছে সে বিষয়ে তাকে কখনোই সতর্কতামূলক তথ্য জানানো হয়নি। পক্ষান্তরে তিনি এর জন্য সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা প্রধানদের ঘাড়ে দোষ চাপান। কারণ, হামাসের হামলার আগে তাদের কাছে এ সম্পর্কিত তথ্য ছিল।

নেতানিয়াহুর এই টুইট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা ওঠে। বলা হয়, গাজায় যখন জটিল সামরিক অভিযানের মধ্যে দেশ, তখন নেতানিয়াহু রাজনৈতিক খেলা খেলছেন। এই ক্ষোভ এত বেশি হয় যে, প্রধানমন্ত্রী তার টুইট মুছে দেন। অস্বাভাবিকভাবে তিনি এ জন্য ক্ষমা চান।

বলেন, আমি ভুল করেছি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক মহলে বিরোধের সৃষ্টি করেছে। জাতীয় স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যুদ্ধের সময় নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব ও যুদ্ধে নিজের সক্ষমতা নিয়ে একজন প্রশ্ন তুলেছেন। চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক কর্মসূচির অ্যাসোসিয়েট ফেলো ইয়োসি মেকেলবার্গ বলেছেন, তিনি নিয়মের বাইরে ছিলেন এটা হবে বছরের সেরা বিষয়। দেশ একটি অত্যন্ত জটিল সামরিক অভিযানে। এ সময় দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজন ইসরাইলে। সরকারে এমন একজন ব্যক্তিও নেই, যিনি নেতানিয়াহুর ওপর আস্থা রাখেন। এটাই এই মন্ত্রিপরিষদের প্রধান ইস্যু।

৭ই অক্টোবর হামাসের হামলার পরপরই জরুরি যুদ্ধকালীন একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন নেতানিয়াহু। এতে সাবেক সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের যুক্ত করেন। বিরোধী দলকেও পদ দেয়া হয়। এর মধ্যে আছেন সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ। নেতানিয়াহু ওই বিতর্কিত পোস্ট দেয়ার পর দ্রুততার সঙ্গে এতে প্রক্রিয়া দিয়েছিলেন বেনি গান্টজ। তিনি সেনাবাহিনী এবং আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন পাওয়ার জন্য নেতানিয়াহুর পোস্ট সরিয়ে ফেলার দাবি জানান। অন্য নেতারাও সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন। নেতানিয়াহুর এক সময়ের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতা আভিগডোর লিবারম্যান বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই নেতানিয়াহুর। তিনি জিম্মিদের বিষয়ে আগ্রহী নন। তিনি আগ্রহী শুধু রাজনীতি নিয়ে। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র ডানিয়েল হাগারি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, আমরা এখন যুদ্ধে আছি।
এমন সমালোচনামূলক মন্তব্যই ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদসহ রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনার ইঙ্গিত বহন করে। এটা এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন দেশটির সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা ব্যর্থতা সামনে চলে এসেছে। নেতানিয়াহু বাদে দেশটির বেশির ভাগ নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে। ওই টুইট করার আগে গত শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেন নেতানিয়াহু। এ সময় এই ব্যর্থতার জন্য তিনি নিজে দায়ী কিনা এমন একটি প্রশ্ন এড়িয়ে যান। বলেন, যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে আমিসহ সবাইকে কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক পরিচালক অ্যালন লিয়েন বলেন, যুদ্ধ যখন শেষ হবে তখন ইসরাইলের এস্টাবলিশমেন্টে কি ঘটতে যাচ্ছে এটা হলো সেই বরফচাঁইয়ের অগ্রভাগ। তিনি কি যুক্তি দেবেন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বিভক্ত ইসরাইলের মন্ত্রিপরিষদ, ‘নেতানিয়াহুকে কেউ বিশ্বাস করেন না’

প্রকাশের সময় : ০৫:৩১:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিভক্ত ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিপরিষদ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউ আর নেতানিয়াহুকে বিশ্বাস করেন না। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলেছে, সপ্তাহান্তে একটি এক্সে (সাবেক টুইটার) টুইট করেন নেতানিয়াহু। তাতেই ইসরাইলের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ফাটল বেরিয়ে আসে। রোববার মধ্যরাতের সামান্য পরে নেতানিয়াহু টুইটে লিখেছেন, ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে হামাস যে রকেট হামলা চালিয়েছে সে বিষয়ে তাকে কখনোই সতর্কতামূলক তথ্য জানানো হয়নি। পক্ষান্তরে তিনি এর জন্য সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা প্রধানদের ঘাড়ে দোষ চাপান। কারণ, হামাসের হামলার আগে তাদের কাছে এ সম্পর্কিত তথ্য ছিল।

নেতানিয়াহুর এই টুইট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনা ওঠে। বলা হয়, গাজায় যখন জটিল সামরিক অভিযানের মধ্যে দেশ, তখন নেতানিয়াহু রাজনৈতিক খেলা খেলছেন। এই ক্ষোভ এত বেশি হয় যে, প্রধানমন্ত্রী তার টুইট মুছে দেন। অস্বাভাবিকভাবে তিনি এ জন্য ক্ষমা চান।

বলেন, আমি ভুল করেছি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক মহলে বিরোধের সৃষ্টি করেছে। জাতীয় স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যুদ্ধের সময় নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব ও যুদ্ধে নিজের সক্ষমতা নিয়ে একজন প্রশ্ন তুলেছেন। চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক কর্মসূচির অ্যাসোসিয়েট ফেলো ইয়োসি মেকেলবার্গ বলেছেন, তিনি নিয়মের বাইরে ছিলেন এটা হবে বছরের সেরা বিষয়। দেশ একটি অত্যন্ত জটিল সামরিক অভিযানে। এ সময় দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজন ইসরাইলে। সরকারে এমন একজন ব্যক্তিও নেই, যিনি নেতানিয়াহুর ওপর আস্থা রাখেন। এটাই এই মন্ত্রিপরিষদের প্রধান ইস্যু।

৭ই অক্টোবর হামাসের হামলার পরপরই জরুরি যুদ্ধকালীন একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন নেতানিয়াহু। এতে সাবেক সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের যুক্ত করেন। বিরোধী দলকেও পদ দেয়া হয়। এর মধ্যে আছেন সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ। নেতানিয়াহু ওই বিতর্কিত পোস্ট দেয়ার পর দ্রুততার সঙ্গে এতে প্রক্রিয়া দিয়েছিলেন বেনি গান্টজ। তিনি সেনাবাহিনী এবং আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন পাওয়ার জন্য নেতানিয়াহুর পোস্ট সরিয়ে ফেলার দাবি জানান। অন্য নেতারাও সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন। নেতানিয়াহুর এক সময়ের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতা আভিগডোর লিবারম্যান বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই নেতানিয়াহুর। তিনি জিম্মিদের বিষয়ে আগ্রহী নন। তিনি আগ্রহী শুধু রাজনীতি নিয়ে। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র ডানিয়েল হাগারি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, আমরা এখন যুদ্ধে আছি।
এমন সমালোচনামূলক মন্তব্যই ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদসহ রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনার ইঙ্গিত বহন করে। এটা এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন দেশটির সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা ব্যর্থতা সামনে চলে এসেছে। নেতানিয়াহু বাদে দেশটির বেশির ভাগ নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে। ওই টুইট করার আগে গত শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেন নেতানিয়াহু। এ সময় এই ব্যর্থতার জন্য তিনি নিজে দায়ী কিনা এমন একটি প্রশ্ন এড়িয়ে যান। বলেন, যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে আমিসহ সবাইকে কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক পরিচালক অ্যালন লিয়েন বলেন, যুদ্ধ যখন শেষ হবে তখন ইসরাইলের এস্টাবলিশমেন্টে কি ঘটতে যাচ্ছে এটা হলো সেই বরফচাঁইয়ের অগ্রভাগ। তিনি কি যুক্তি দেবেন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

হককথা/নাছরিন