ফের সহিংস রাজনীতি ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ
- প্রকাশের সময় : ০৮:৩৫:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৩
- / ৭৭ বার পঠিত
বাংলাদেশ ডেস্ক : মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে শুরু হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি। এর আগে রবিবার (২৯ অক্টোবর) বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপি সকাল-সন্ধ্যা হরতালে চারজনের মৃত্যু হয়। আগের দিন শনিবার (২৮ অক্টোবর) মহাসমাবেশ ঘিরে পুলিশসদস্যসহ দুজনের প্রাণহানি ঘটে। এই অবস্থার মধ্যে মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিনের রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধ করবে বিএনপি-জামায়াত।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এসব কর্মসূচি ও সেই সঙ্গে প্রাণহানির ঘটনায় দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শংকিত। বিশেষ করে ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিক, শিক্ষার্থীরা ক্ষতির আশংকা করছেন। তারা বলছেন, এসব কর্মসূচির মাধ্যমে আবার সহিংস রাজনীতির দিকেই যাচ্ছে দেশ।
এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচির ফলে দেশে দিনে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। আমরা এ ধরনের কর্মসূচি মানতে পারি না। আমরা মঙ্গলবার (আজ) এ বিষয়ে বৈঠক করে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে চিঠি পাঠাব-যাতে এ ধরনের কর্মসূচি না দেওয়া হয়। কারণ আমরা চাই ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ।
ঢাকা চেম্বারের সদস্য মো. নুর আলম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমরা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ চাই। সহিংস রাজনীতি চাই না। আন্দোলনের নামে গাড়িতে আগুন, ভাংচুরের ঘটনা আমরা দেখতে চাই না।
বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ কর্মসূচির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, বিএনপি-জামায়াত সমাবেশ ও হরতাল কর্মসূচির নামে দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে ১৩টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। তারা শতাধিক গাড়ি ভাংচুর করেছে। এছাড়া ঢাকার অছিম পরিবহনে নাঈম নামে একজন পরিবহন শ্রমিককে হত্যা করেছে। আন্দোলনের নামে গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ কোনোভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসুচি চলাকালে সহিংসতার কারনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরাও শংকিত।
শনিবার বিএনপি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয় রাজধানীতে, রবিবার দেশব্যাপী হরতাল হয়। আবার শুরু হয়েছে অবরোধ- এ কারণে বছরের শেষ দিকে সব শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা, এসএসসির প্রস্তুতি, এইচএসসি প্রাক-নির্বাচনীসহ বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা ব্যহত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
জানা গেছে, প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় ৫ কোটি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা এসব পরীক্ষা সময়মতো হবে কিনা বা ভেস্তে যায় কিনা এ নিয়ে সংশয়ে আছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়ার কথা। এরপর শুরু হবে নতুন শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা। নভেম্বর মাসের শেষে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার কথা রয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। রাজনৈতিক সহিংসতার জেরে তাদের প্রস্তুতিতেও ব্যাঘাত ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) বেলাল হোসাইন গতকাল বিকেলে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেছেন, সব শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার জন্য স্কুলগুলো প্রস্তুতি নিয়েছে। নভেম্বরের মধ্যে সব শ্রেণির লটারিসহ অন্য আনুষাঙ্গিক কাজও শেষ করা হবে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান জিয়াউল কবির দুলু গণমাধ্যমকে বলেছেন, রাজনীতি দেশের ও মানুষের কল্যাণের জন্য। তাহলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে কর্মসূচি দেওয়া উচিৎ।
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কেকা রায় চৌধুরী বলেন, আমাদের কাছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বারবার পরীক্ষার তারিখ জানতে চাইছেন ও সেই সঙ্গে সংশয়ও প্রকাশ করছেন। সূত্র : প্রতিদিনের সংবাদ
হককথা/নাছরিন