নিউইয়র্ক ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আইলার মতো বেশি ক্ষতি হতে পারে জলোচ্ছ্বাসে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:১১:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৯৭ বার পঠিত

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুন উপকূলের দিকে এগিয়ে এসেছে। ছবি: উইনডি

২০০৯ সালে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় আইলা। বাতাসের গতিবেগ ও চরিত্র বিবেচনায় বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের সঙ্গে আইলার কিছুটা মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আইলার মতো ব্যাপক না হলেও ঘূর্ণিঝড় হামুনে বেশি ক্ষতি হতে পারে জলোচ্ছ্বাসে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ আজ মঙ্গলবার দুপুরে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হামুন চলতি বছরের মে মাসে হ‌ওয়া মোখার মতো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় নয়।

এর বৈশিষ্ট্য আইলার মতো। এর মূল ক্ষতি হতে পারে জলোচ্ছ্বাসে।’ বজলুর রশিদ বলেন, যেহেতু ঘূর্ণিঝড়টি সন্দ্বীপ চ্যানেল দিয়ে যাবে এবং এসব জায়গা নিচু এলাকা, ফলে জলোচ্ছ্বাসে এসব জায়গায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে। নিচু এলাকা ও জনবসতি বেশি হ‌ওয়ায় বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না । এসব জায়গায় তিন ফুট পানি মানেও অনেক উঁচু। এ ছাড়া ভারি বর্ষণের কারণেও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। আইলাতে মূল ক্ষতি হয়েছিল বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে যাওয়ায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

অতিভারি বৃষ্টির ফলে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। এদিকে, যেরকম ধারণা করা হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় হামুন এর চেয়ে কিছুটা বেশি শক্তিশালী হয়ে এরই মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। বজলুর রশিদ বলেন, ‘শুরুতে আমরা বলেছিলাম এটি উপকূল অতিক্রম করার সময় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা হলেও শক্তিশালী হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা দেখছি, এটি ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সন্দ্বীপ চ্যানেল দিয়ে যাবে।

বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। স্থলভাগে ওঠার পর এটা গভীর নিম্নচাপ হবে।’
বজলুর রশিদ আরো বলেন, ‘আইলার মতো ঘূর্ণিঝড় হামুনের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯২ কিলোমিটার যা কোথাও কোথাও দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার হতে পারে। সেক্ষেত্রে এটি প্রথম পর্যায়ের ঘূর্ণিঝড় (সবচেয়ে কম শক্তিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়) হিসেবে অতিক্রম করতে পারে।

বৃষ্টি কম হ‌ওয়ায় ঘূর্ণিঝড় হামুন কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে উল্লেখ করে বজলুর রশিদ বলেন, ‘বৃষ্টি কমে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা হলেও শক্তিশালী বা সংগঠিত হয়েছে। এরপরও এটি প্রবল থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়‌ও যদি হয়, পরের ধাপে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে।’

ঘূর্ণিঝড় হামুন আগামীকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ভোলার কাছে দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও এগুলোর কাছাকাছি দ্বীপ ও চর ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৭, কক্সবাজারে ৬ এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলো নিয়ে জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সূত্র : কালের কণ্ঠ

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আইলার মতো বেশি ক্ষতি হতে পারে জলোচ্ছ্বাসে

প্রকাশের সময় : ০৫:১১:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

২০০৯ সালে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় আইলা। বাতাসের গতিবেগ ও চরিত্র বিবেচনায় বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের সঙ্গে আইলার কিছুটা মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আইলার মতো ব্যাপক না হলেও ঘূর্ণিঝড় হামুনে বেশি ক্ষতি হতে পারে জলোচ্ছ্বাসে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ আজ মঙ্গলবার দুপুরে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হামুন চলতি বছরের মে মাসে হ‌ওয়া মোখার মতো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় নয়।

এর বৈশিষ্ট্য আইলার মতো। এর মূল ক্ষতি হতে পারে জলোচ্ছ্বাসে।’ বজলুর রশিদ বলেন, যেহেতু ঘূর্ণিঝড়টি সন্দ্বীপ চ্যানেল দিয়ে যাবে এবং এসব জায়গা নিচু এলাকা, ফলে জলোচ্ছ্বাসে এসব জায়গায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে। নিচু এলাকা ও জনবসতি বেশি হ‌ওয়ায় বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না । এসব জায়গায় তিন ফুট পানি মানেও অনেক উঁচু। এ ছাড়া ভারি বর্ষণের কারণেও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। আইলাতে মূল ক্ষতি হয়েছিল বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে যাওয়ায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

অতিভারি বৃষ্টির ফলে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। এদিকে, যেরকম ধারণা করা হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় হামুন এর চেয়ে কিছুটা বেশি শক্তিশালী হয়ে এরই মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। বজলুর রশিদ বলেন, ‘শুরুতে আমরা বলেছিলাম এটি উপকূল অতিক্রম করার সময় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা হলেও শক্তিশালী হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা দেখছি, এটি ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সন্দ্বীপ চ্যানেল দিয়ে যাবে।

বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। স্থলভাগে ওঠার পর এটা গভীর নিম্নচাপ হবে।’
বজলুর রশিদ আরো বলেন, ‘আইলার মতো ঘূর্ণিঝড় হামুনের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯২ কিলোমিটার যা কোথাও কোথাও দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার হতে পারে। সেক্ষেত্রে এটি প্রথম পর্যায়ের ঘূর্ণিঝড় (সবচেয়ে কম শক্তিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়) হিসেবে অতিক্রম করতে পারে।

বৃষ্টি কম হ‌ওয়ায় ঘূর্ণিঝড় হামুন কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে উল্লেখ করে বজলুর রশিদ বলেন, ‘বৃষ্টি কমে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা হলেও শক্তিশালী বা সংগঠিত হয়েছে। এরপরও এটি প্রবল থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়‌ও যদি হয়, পরের ধাপে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে।’

ঘূর্ণিঝড় হামুন আগামীকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ভোলার কাছে দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও এগুলোর কাছাকাছি দ্বীপ ও চর ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৭, কক্সবাজারে ৬ এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলো নিয়ে জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সূত্র : কালের কণ্ঠ