বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার দাম বিশ্বে সবচেয়ে বেশি!
- প্রকাশের সময় : ০৯:২৫:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩
- / ৫৪ বার পঠিত
অর্থনীতি ডেস্ক : দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা প্রতি টন ১৭৬ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। মূল্য বিবেচনায় যেটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কয়লার দামের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় ২০-২৫ শতাংশ কমে কয়লা বিক্রি করছে কয়লার আন্তর্জাতিক বাজার ইন্দোনেশিয়া কোল প্রাইস ইনডেক্স বা নিউক্যাসেল কোল প্রাইস ইনডেক্স। এসব কারণে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার দাম কমানোর দাবি জানিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
বিদ্যুৎ বিভাগে এই বিষয়ে পিডিবির পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির কয়লার দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কমানো বা সমন্বয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিবকে অনুরোধ করতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, পিডিবি ২০০৬ সাল থেকে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করছে। ওই সময় কয়লার দাম ছিল প্রতি টন ৬০ ডলার। ১০ বছরের মধ্যে সেই দাম চার দফা বাড়িয়ে ১৩০ ডলার করা হয়। এর ছয় বছর পর কয়লার দাম আরও একদফা বাড়ানো হয়। তবে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে বড়পুকুরিয়ার কয়লার দাম বাড়ানো হলেও জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ বর্ধিত মূল্য ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর করে। এই মূল্য নিয়েই আপত্তি জানিয়ে পিডিবি সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে।
ওই চিঠিতে পিডিবি ১৪ জুন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কয়লার দাম তুলে ধরে। সংস্থাটির তথ্যমতে, সে সময় বিশ্বে কয়লার দাম সবচেয়ে কম ছিল চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশ দুটিতে কয়লার দাম ছিল প্রতি টন ১০১ দশমিক ৬০ ডলার। ভারতে এ দাম ছিল ১১০ দশমিক ৭০ ডলার। আর রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক ও ভিয়েতনামে প্রতি টন কয়লার দাম ১১২ দশমিক ৭০ ডলার। এ ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৪০ দশমিক ৮০ ডলারে কয়লা বিক্রি হয়। আর বাংলাদেশে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার দাম ১৭৬ ডলার। অর্থাৎ বড়পুকুরিয়ার কয়লার দাম অন্যান্য দেশের চেয়ে ২৬ থেকে ৭২ শতাংশ পর্যন্ত বেশি।
পিডিবি আরও জানায়, কয়লার দাম প্রতি টন ১৩০ ডলার থেকে ১৭৬ ডলারে বৃদ্ধি করায় এবং ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশি টাকায় বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি খরচ ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে পিডিবি বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে গড়ে কম মূল্যে বিক্রি করায় বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে, যা না পেলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে জটিলতা ও জন-অসন্তোষ সৃষ্টির কারণ হতে পারে। এ কারণে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির কয়লার দাম কমানো উচিত।
প্রসঙ্গত, বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। এ জন্য প্রতিদিন কয়লার প্রয়োজন হয় সাড়ে পাঁচ হাজার টন। কিন্তু খনিতে বর্তমানে দৈনিক উৎপাদিত হয় দুই থেকে তিন হাজার টন। এ ছাড়া খনির যে স্তর থেকে বর্তমানে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে, সেখান থেকে প্রতিদিন তিন হাজার টনের বেশি কয়লা পাওয়া সম্ভব নয়। এতে প্রতিদিন ঘাটতি থাকে আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টন। এর মধ্যে আবার বছরে শিফট পরিবর্তনের জন্য খনির কয়লা উত্তোলন তিন মাস বন্ধ থাকে। এসব কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এক বা একাধিক ইউনিট প্রায়ই বন্ধ থাকে। তথ্যসূত্র : শেয়ার বিজ