নিউইয়র্ক ০১:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের তিক্ততা সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিছু গোষ্ঠী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৮৪ বার পঠিত

হককথা ডেস্কযুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। তবে কিছু গোষ্ঠী তিক্ততা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।

স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের বাঙালি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র শাখা আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা যে নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র সেই নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ হচ্ছে সেই দেশ যেখানে গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি। আমরা জনগণের ভোটে জয়লাভ করলেও ১৯৭১ সালে আমাদের সরকার গঠন করতে দেয় নাই। বরং আমাদের উপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল। তখন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

ড. মোমেন বলেন, আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলাম গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এজন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের ত্রিশ লক্ষ মানুষের প্রাণ দিতে হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য এতো অল্প সময়ে এতো মানুষ আত্মত্যাগ করেনি। আমরা পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র জাতি যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য এতো বড় ত্যাগ স্বীকার করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের মতের, চিন্তার মিল আছে। নীতিগতভাবে আমাদের দু’দেশের মধ্যে মিল রয়েছে। তবে তাদের কোনো কোনো ব্যক্তিবিশেষ হয়তো আমাদের উন্নয়ন পছন্দ করছেন না, তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

কেউ বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করলে তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করতে দলমত নির্বিশেষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান তিনি।

ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট সংশোধনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে যেসব ভালো পরামর্শ দেয় আমরা সেটা গ্রহণ করি। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে আর আমরাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু লোক আছে যারা নির্বাচন বয়কট করতে চায়, নির্বাচন ভয় পায়। নির্বাচন বানচাল করতে তারা সবরকমের চেষ্টা করে থাকেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে আমরা ২৬তম বড় অর্থনীতিতে পরিণত হব। আমাদের রয়েছে ১৭ কোটি মানুষ, তাই আমাদের নিজস্ব বাজারও অনেক বড়। সেজন্য আমাদের দেশের প্রতি অনেকেরই আগ্রহ বেড়েছে, কারণ আমাদের মাথাপিছু আয় ৫ গুন বেড়েছে। দারিদ্রের হার অর্ধেকের বেশি কমেছে। এসবই শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্যভিত্তিক পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কারণে সম্ভব হয়েছে।

ড. মোমেন আরো বলেন, আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাছ এবং সবজি উৎপাদনে আমরা বিশ্বে তৃতীয়। চাল উৎপাদনে আমরা বিশ্বে চতুর্থ। আমাদের কৃষি জমি অনেক কমে গেছে কিন্তু খাদ্য উৎপাদন চারগুণ বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। তবে আমরা এই উন্নতি করছি বলে অনেকেরই গাত্রদাহ হচ্ছে। আমাদের দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে না। কারণ এখন আমরা বিদেশির পয়সায় চলি না। আর আমরা উন্নতি করেছি বলে অনেকের আগ্রহ বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই আমাদের কাছে টানার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা কারো লেজুরবৃত্তি করতে চাই না। আমরা একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমরা বিজয়ের জাতি। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি সুন্দর পররাষ্ট্রনীতি দিয়ে গেছেন। আর এই নীতি হচ্ছে- “সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়।” আমরা এই নীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা একটা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করি।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি ড. মসিউর মালেক। অন্যান্যের মধ্যে কবি ও সাহিত্যিক ফকির ইলিয়াস, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আব্দুল খালেক মিয়াসহ নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের তিক্ততা সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিছু গোষ্ঠী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

হককথা ডেস্কযুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। তবে কিছু গোষ্ঠী তিক্ততা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।

স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের বাঙালি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র শাখা আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা যে নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র সেই নীতি ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ হচ্ছে সেই দেশ যেখানে গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি। আমরা জনগণের ভোটে জয়লাভ করলেও ১৯৭১ সালে আমাদের সরকার গঠন করতে দেয় নাই। বরং আমাদের উপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল। তখন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

ড. মোমেন বলেন, আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলাম গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এজন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের ত্রিশ লক্ষ মানুষের প্রাণ দিতে হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য এতো অল্প সময়ে এতো মানুষ আত্মত্যাগ করেনি। আমরা পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র জাতি যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য এতো বড় ত্যাগ স্বীকার করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের মতের, চিন্তার মিল আছে। নীতিগতভাবে আমাদের দু’দেশের মধ্যে মিল রয়েছে। তবে তাদের কোনো কোনো ব্যক্তিবিশেষ হয়তো আমাদের উন্নয়ন পছন্দ করছেন না, তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

কেউ বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যাচার করলে তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করতে দলমত নির্বিশেষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান তিনি।

ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট সংশোধনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে যেসব ভালো পরামর্শ দেয় আমরা সেটা গ্রহণ করি। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে আর আমরাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু লোক আছে যারা নির্বাচন বয়কট করতে চায়, নির্বাচন ভয় পায়। নির্বাচন বানচাল করতে তারা সবরকমের চেষ্টা করে থাকেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে আমরা ২৬তম বড় অর্থনীতিতে পরিণত হব। আমাদের রয়েছে ১৭ কোটি মানুষ, তাই আমাদের নিজস্ব বাজারও অনেক বড়। সেজন্য আমাদের দেশের প্রতি অনেকেরই আগ্রহ বেড়েছে, কারণ আমাদের মাথাপিছু আয় ৫ গুন বেড়েছে। দারিদ্রের হার অর্ধেকের বেশি কমেছে। এসবই শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্যভিত্তিক পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কারণে সম্ভব হয়েছে।

ড. মোমেন আরো বলেন, আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাছ এবং সবজি উৎপাদনে আমরা বিশ্বে তৃতীয়। চাল উৎপাদনে আমরা বিশ্বে চতুর্থ। আমাদের কৃষি জমি অনেক কমে গেছে কিন্তু খাদ্য উৎপাদন চারগুণ বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। তবে আমরা এই উন্নতি করছি বলে অনেকেরই গাত্রদাহ হচ্ছে। আমাদের দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে না। কারণ এখন আমরা বিদেশির পয়সায় চলি না। আর আমরা উন্নতি করেছি বলে অনেকের আগ্রহ বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই আমাদের কাছে টানার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা কারো লেজুরবৃত্তি করতে চাই না। আমরা একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমরা বিজয়ের জাতি। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি সুন্দর পররাষ্ট্রনীতি দিয়ে গেছেন। আর এই নীতি হচ্ছে- “সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়।” আমরা এই নীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা একটা ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করি।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি ড. মসিউর মালেক। অন্যান্যের মধ্যে কবি ও সাহিত্যিক ফকির ইলিয়াস, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আব্দুল খালেক মিয়াসহ নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন