‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ এবং ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ দেশের মানুষকে উৎসর্গ : সংবর্ধনা সভায় বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার প্রতিজ্ঞা প্রধানমন্ত্রীর
- প্রকাশের সময় : ১১:০৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০১৫
- / ৭০৯ বার পঠিত
ঢাকা: জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ এবং ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ দেশের মানুষকে উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারও করেন। প্রধানমন্ত্রী ৫ অক্টোবর সোমবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ওই দুই পুরস্কার পাওয়ায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন তাকে এই সংবর্ধনা দেয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রতিজ্ঞা হল; বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত করে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা। আর আজকে যারা শিশু; তাদের জন্য একটি বাস উপযোগী সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলা আজকের দিনে এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।’ তিনি বলেন, দেশের মানুষের উন্নত এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত জীবন গড়ে তোলা তার একমাত্র লক্ষ্য। এজন্যই তিনি সবকিছু হারিয়ে নিজের ছেলেমেয়েদের মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করে দেশে ফিরেছিলেন। যে কোনো ত্যাগ স্বীকারেও তিনি প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে জাতি যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে, সে জাতি পিছিয়ে থাকতে পারে না। আজ বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। তাই দেশের মানুষ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলবে; কারও প্রতি মুখাপেক্ষী হয়ে নয়। কারও কাছে ভিক্ষা চেয়ে নয়। নিজেদের সীমিত সম্পদ আছে তা যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজে লাগিয়ে এ দেশের উন্নয়ন করা তার লক্ষ্য বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করা, পরিবেশ রক্ষা করা, জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করার কাজ শুরু করি। তাই আজকে আমাদের এসব উদ্যোগ বিশ্বের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নীত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে।
দেশবাসীকে সব পুরস্কার উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে অর্জন। যে পুরস্কার, যা কিছুই প্রাপ্তি, সবকিছুই উৎসর্গ করে দিচ্ছি বাংলার জনগণের জন্য।
শেখ হাসিনা বলেন, একদিকে পরিবেশ রক্ষা করা অন্যদিকে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এটা যে শুধু সরকার গঠন করার পর করে যাচ্ছি তা নয়। রাজনৈতিক দল হিসেবেও ১৯৮৩ সাল থেকে কৃষক লীগের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি।
দেশবাসীকে সব পুরস্কার উৎসর্গ করে তিনি বলেন, ‘আজকে যে অর্জন। যে পুরস্কার, যা কিছুই প্রাপ্তি, সবকিছুই উৎসর্গ করে দিচ্ছি বাংলার জনগণের জন্য। বাংলার জনগণই এর একমাত্র দাবিদার। কারণ পিতা-মাতা, ভাইসহ সবাইকে হারিয়ে এই বাংলার মানুষের মধ্যেই আমি পেয়েছিলাম হারানো বাবা-মা ও ভাইয়ের স্নেহ। কাজেই এই বাংলার মানুষের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে আমি সদা প্রস্তুত আছি। তিনি আরও বলেন, ‘যে বাংলাদেশ আমার পিতা স্বাধীন করে দিয়ে গেছে। যে বাঙালী জাতি তার ডাকে সাড়া দিয়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে বিজয় অর্জন করেছে। সেই বিজয়ী জাতি মাথা নিচু করে চলবে; তা কখনো হতে পারে না। সেই বাঙালি জাতি বিশ্বসভায় যাতে মর্যাদার আসন পায়, সেটাই তার সরকারের লক্ষ্য বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবর্ধনা উপলক্ষে দৃষ্টিনন্দন, সৃষ্টিশীল ও চমৎকার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংবর্ধিত করার জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের মেয়রদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে আর্থ প্যারেডের আয়োজন করা হয়। দেশাত্মবোধক গান, নাচ, সাইকেল র্যালি, শিশুদের পারফরম্যান্স এবং দুই শিশুর মানপত্র পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে উপভোগ্য।
অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে একটি বনসাই বটবৃক্ষ উপহার দেয়া হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন। বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক রফিকুল হক। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।(দৈনিক যুগান্তর)