পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ

- প্রকাশের সময় : ১২:০৪:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০২৩
- / ৭৩ বার পঠিত
বাংলাদেশ ডেস্ক : বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ডের বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি বিএনপিসহ সমমনাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির বিপরীতে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। গতকাল দলীয় সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা বলেন, তৃণমূল কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতে হবে। আওয়ামী লীগের ডাকে প্রতিটি কর্মসূচি সফল করতে হবে। এজন্য নিজেদের মধ্যে কোনো ধরনের বিভেদ রাখা চলবে না। সমসাময়িক রাজনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচি ও দেশের ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। এরমধ্যে বেশির ভাগ সময় আলোচনার বিষয়বস্তু হিসেবে থাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম ইস্যু। বৈঠকের শুরুতে সমসাময়িক রাজনীতির প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়।
সেখানে বলা হয়, রাজপথে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কর্মসূচি আরও বাড়াতে হবে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে বিরোধী শক্তিরা মাঠ দখলের চেষ্টা করছে। তারা একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করছে। তাদের কর্মসূচিগুলোর ওপর নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যেন কোনো ধরনের অরাজকতা তৈরি করতে না পারে সে বিষয়টি দেখতে হবে। মানুষের জানমালের কোনো ক্ষতি যেন তারা করতে না পারে সেজন্য সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বৈঠকে জানানো হয়, এ বিষয়ে দলীয় সভাপতির সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের সেভাবেই কাজ করা উচিত। প্রতিটি কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বৈঠকে দেশের ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা হয়। দলের প্রার্থীদের পক্ষে কীভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, বিভেদ মিটিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে সেসব নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনার বিষয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী মানবজমিনকে বলেন, দেশের সার্বিক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ৯টি জেলার কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে বৈঠকে আওয়ামী লীগের নেতাদের সিটি করপোরেশনের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ প্রচারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও সুজিত রায় নন্দী, প্রচার সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম এবং উপদপ্তর বিষয়ক সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরোও পড়ুন। তৃণমূল থেকে আন্দোলনের নতুন ‘ঢেউ’ তুলতে চায় বিএনপি
বিএনপি’র কূটকৌশল সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে : কাদের
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি’র যেকোনো কূটকৌশল সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। তারা হুমকি দিচ্ছে নির্বাচন হতে দেবে না। নির্বাচনে আসবে না এটা তাদের ইচ্ছা। তবে নির্বাচন হতে দেবে না এটা সম্ভব নয়। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন বানচালের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেয়া হবে। আওয়ামী লীগ কচু পাতার ওপর ভোরের শিশির বিন্দু নয়। বিএনপি’র আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি ও তাদের দোসররা নাকি আন্দোলনের ঝড় সৃষ্টি করবে, আর সেই ঝড়ে নাকি সরকারের পতন হবে। বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপি’র ঝড় তোলার কোনো সামর্থ্য নেই, তাই গলাবাজি দিয়ে নিজেদের অক্ষমতা ঢাকতে চাইছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও গণ-আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকলে কখনো তা সফল হয়নি। বিদেশি দূতাবাসগুলোতে নালিশ করে দেশকে ছোট করছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একটা কথা বার বার বলেছি, পরিষ্কার বলছি, তাদের (বিএনপি’র) কর্মসূচির পাল্টাপাল্টিতে আমরা নেই। আমরা একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। সে কারণে আমরা শান্তির সমাবেশ করছি।
তিনি বলেন, তারা হুমকি দিচ্ছে নির্বাচন করতে দেবে না। নির্বাচনে তারা আসবে না এটা তাদের ইচ্ছা, নির্বাচন হতে দেবে না এমন ধরনের যে সংকল্প ব্যক্ত করে তারা রুখে দাঁড়াবে, আমরাও দেখবো, কে কাকে রুখে দাঁড়ায়। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে দেশ দুটি ধারায় বিভক্ত। একদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারা, অপরদিকে সাম্প্রদায়িক ধারা যার নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি’র রাষ্ট্র মেরামতের কর্মসূচিতে মানুষ বিভ্রান্ত হয়নি। আজকে তাদের নেতাকর্মীরা বুঝে গেছে মুখের গলাবাজি বাস্তবে মরীচিকা। আন্দোলনের পথরেখা থেকে নিজেরা সরে গেছে। তাদের জোটে অনৈক্য। উইকেটের পতন ঘটছে। এখন ১৪/১৫ টা দল আছে মনে হয়। তাদের নেতা নেই। নেতা ছাড়া আন্দোলন দুঃস্বপ্ন। জিয়াউর রহমানের নামে হত্যা মামলা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মামলা দল বা সরকার দায়ের করেনি। একজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মামলা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রশাসনকে বিভিন্ন নির্দেশনাও দিচ্ছেন তিনি। সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রস্তুতি ছিল। ঘূর্ণিঝড়ে কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হোক আমরা সেটাই চাই। দলের পক্ষ থেকেও সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দকে করণীয় সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
সুমি/হককথা