তৃণমূল থেকে আন্দোলনের নতুন ‘ঢেউ’ তুলতে চায় বিএনপি
- প্রকাশের সময় : ১১:৫৫:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মে ২০২৩
- / ৯০ বার পঠিত
বাংলাদেশ ডেস্ক : নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় এবং সরকার পতনের লক্ষ্য নিয়ে চলমান আন্দোলন আরও জোরদার করতে চাইছে বিএনপি। নতুন করে তৃণমূল থেকে আবার আন্দোলনের নতুন ঢেউ তুলতে চাইছেন দলটির নেতারা। এজন্য তৃণমূল থেকে নতুন কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার আগে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি যাচাই করতেই এই কর্মসূচি হাতে নেয়ার কথা জানিয়েছেন নেতারা। মাঠ পর্যায়ে শক্তি বাড়িয়ে চলমান আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করতে ইতিমধ্যে ৮২টি সাংগঠনিক জেলায় নতুন কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। আগামী শুক্রবার থেকে চারধাপে জেলা, মহানগর ও রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করবেন দলটির নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, গত বছরের বিভাগীয় সমাবেশের মতো আবারো সরকারবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে চান তারা। এজন্য জেলায় জেলায় কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। জেলা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে ঢাকাসহ সারা দেশে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করতে চায় বিএনপি।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, বিএনপি ধারাবাহিকভাবে এক দফার আন্দোলনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শিগগিরই কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে। তার আগে আরেকবার জেলাপর্যায় থেকে সমাবেশের মধ্যদিয়ে নতুনভাবে আন্দোলন শুরু হচ্ছে।ক্ষমতাসীন সরকার আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। সরকার দাবি না মানলে ঢাকা ও জেলা অবরোধের কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মানবজমিনকে বলেন, তৃণমূল থেকে আন্দোলনের ঢেউ তোলা এটা আমাদের রাজনৈতিক কৌশল। সরকার শুধু চেয়ারের দিকেই তাকিয়ে আছে। সেখান থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য সরকারকে একটু ব্যতিব্যস্ত রাখতে চাইছি। কারণ ইতিমধ্যে দেখা গেছে ঈদের পরে আমাদের প্রায় হাজার সংখ্যক নেতাকর্মীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায় বাতিল করে নিন্ম আদালত কারাগারে পাঠিয়েছে। এদের বেশির ভাগ নেতাই তৃণমূলের। এখন ঢাকায় ও সকল সাংগঠনিক জেলায় কর্মসূচির মধ্যেদিয়েই আন্দোলন জোরদার করা হবে। আমরা আর কেউ ঘরে বসে থাকবো না।
আরোও পড়ুন। যে কারণে উত্তরার বাসা ছেড়ে গুলশানে উঠলেন মির্জা ফখরুল
বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ মানবজমিনকে বলেন, এই মুর্হূতে জেলাপর্যায়ে কর্মসূচি ঘোষণা করার কারণ হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য। ক্ষমতাসীন সরকারের পতন আন্দোলনকে আমরা সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ দিয়েছি। এর মধ্যদিয়ে সরকারকে আরেকটি হুঁশিয়ারি বার্তা দেয়া হবে।
বিএনপি’র একাধিক নেতা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে বেশকিছু সমস্যা খুঁজে পেয়েছেন তারা। এরমধ্যে বছরের পর বছর কমিটি হালানাগাদ না হওয়া এবং কমিটিতে পদে থেকেও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে শৈথিল্য দেখানোর কারণে কয়েকটি জেলায় আন্দোলনে সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রায় দেড় যুগ ধরেও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটিও পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়নি। যারা দীর্ঘদিন ধরে দলের স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের সঙ্গে অনেকেরই দূরত্ব তৈরি হয়েছে। চলমান যুগপৎ আন্দোলন সফল করতে সেই দূরত্ব মিটিয়ে সংগঠনকে আরও গতিশীল করার কোনো বিকল্প নেই। জানা যায়, ২০২১ সালের ২৫শে আগস্ট মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপি’র ৫৮ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছিল। তখন পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশও দেয়া হয়। একইসঙ্গে গত বছরের ১৫ই জানুয়ারি লৌহজং উপজেলাসহ কয়েকটি উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এমনকি সকল ইউনিয়ন কমিটির খসড়া লৌহজং থানায় জমা হলেও এখনো কার্যকর হয়নি।
জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আব্দুল হাই অসুস্থ থাকায় জেলা কাউন্সিল দ্রুত সম্পন্ন করতে চলতি বছরের ২১শে মার্চ আহ্বায়ক কমিটিতে আরও ৫ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু সম্মেলন ও কোনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, আগামী কিছুদিনের মধ্যেই ঢাকার বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কাউন্সিলিং শুরু হবে। যে সকল জেলায় কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি আশা করি শিগগিরই তার সমাধান করা হবে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে সবাইকে নিয়েই অংশগ্রহণ করবো। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
সুমি/হককথা