এক স্লিপ
- প্রকাশের সময় : ১১:২৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
- / ৮৬৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: পৃথিবীতে পেশার শেষ নেই। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবি, শিক্ষকতা, সরকারী চাকুরী, সাংবাদিকতা, লেখা-লেখি, ব্যবসা এমন কি রাজনীতিও হাজারো পেশার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। পেশাগত ভিন্নতার কারণে পেশারও মর্যাদা ভিন্নতর। এটাই বাস্তবতা। ১০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার আমার এক বন্ধুতুল্য অগ্রজের সাথে ফোনে কথা বলতেই হঠাৎ করেই বললেন, আমাদের কমিউনিটিতে ‘অধ্যাপক’-এর সংখ্যা বেড়ে গেছে। কে, কিভাবে, অধ্যাপক হন বা অধ্যাপক হওয়ার যোগ্যতা বা কোয়ালিফিকেশন কি তা নিয়ে কি লেখা-লেখি করা যায় না? মনে হলো একটু ক্ষোভের সাথেই প্রশ্নটি করলেন। বন্ধুবর অগ্রজের আকস্মিক এই প্রশ্নের জন্য আমার কোন প্রস্তুতি ছিল না। কিন্তু বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, প্রাসঙ্গিক ও যৌক্তিক বলে ছোট করে দেখারও কোন অবকাশ নেই। তার মনোভাব বুঝে হাস্যস্বরে বললাম, অবশ্যই লেখা যাবে, লেখা যাবে না কেনো। প্রত্যুত্তরে তিনি বললেন, অবশ্যই লিখবেন। যে যা না তাকে তা বলা বা বানানো ঠিক নয়। ফোনটা রেখে বিষয়টি নিয়ে ভাবলাম। আসলে এই ভাবনা দীর্ঘদিন ধরেই আমার মনের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছিলো। পেশাগত কারণেই এই প্রবাসে হাজারো মানুষের সাথে পরিচয়। অনেকেরই ভালো-মন্দ, সুখ-দু:খ, অভাব-অভিযোগ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আমাদেরও নিত্যদিনের সাথী। তারপরও বললে অতুক্তি হবে না যে, আমাদের কমিউনিটিতে এমন অনেক ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন যাদের পরিচয়ের আগে মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক, প্রফেসর, ডাক্তার, ড. প্রভৃতি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ পেশাগত পদবী ব্যবহৃত হচ্ছে যা তারা ‘ভুল’, ‘মিথ্যা’ বা ‘সঠিক নয়’ জেনেও নিজের জাহির করতে দ্বিধা করছেন না। বিষয়টি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা জানি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরাই ‘মুক্তিযোদ্ধা’, যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা বিষয়ক পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই আমেরিকাতে ‘এমডি বা ডাক্তার’, কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক থেকে শুরু করে কয়েক ধাপ পেরিয়েই না ‘অধ্যাপক’, কোন বিষয়ে গবেষণা করার পর সার্টিফেকেট পাওয়ার পরই না ‘ড. (পিএইচডি)’। কিন্তু যারা এই সব পদ-পদবী ব্যবহার করছেন তারা কি সত্যিকারার্থেই তা। এমন প্রশ্ন হাজারো সচেতন প্রবাসীর। এসব পদবী ব্যবহারে তারা কতটুক গৌরববোধ করেন তা আমি জানি না। তবে একজন সংবাদকর্মী, সচেতন ব্যক্তি আর বিবেকবান মানুষ হিসেবে প্রবাসীদের মতো আমার কাছে বিষয়টি চরম লজ্জারই মনে হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর’২০১৫