সানায় হুথিদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসছে সৌদি আরব

- প্রকাশের সময় : ০১:৪৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩
- / ১০৭ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধবিরতির আলোচনার জন্য ইয়েমেনের সানায় হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে বসতে যাচ্ছে সৌদি আরবের একটি প্রতিনিধি দল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির এই আলোচনায় ইয়েমেনের প্রতিবেশী ওমানের প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করবে। আলোচনা প্রক্রিয়ায় জড়িত দুই ব্যক্তি রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।গত মাসে চীনের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব ও ইরান। এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক সংঘাত ও উত্তেজনা নিরসনে পক্ষে ইতিবাচক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। কারণ ইয়েমেনে চলমান সংঘাতে সৌদি আরব ও ইরান পরস্পরবিরোধী পক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে।
ওমানের মধ্যস্থতায় সানায় সৌদি কর্মকর্তাদের সফর এবং ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলমান সংঘাত নিরসনে অগ্রগতির একটি ইঙ্গিত। যা জাতিসংঘের শান্তি প্রচেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। দীর্ঘ দিন ধরে ওমান বিবদমান সৌদি আরব ও ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরাজমান দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে। ইয়েমেনে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি মধ্যপ্রাচ্য স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হবে। রয়টার্সকে সূত্র জানিয়েছে, যদি যুদ্ধবিরতির সমঝোতা হয় তাহলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে এই ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। এই বিষয়ে সৌদি আরব ও জাতিসংঘ সমর্থিত ইয়েমেন সরকার রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
আরোও পড়ুন। তাইওয়ানকে ঘিরে আবার চীনের সামরিক মহড়া
২০১৪ সালের শেষ দিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেনের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। ২০১৫ সালে ইয়েমেন সরকারের সমর্থনে হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব সামরিক জোট। বর্তমানে হুথিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইয়েমেনের উত্তরাংশ। এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ইয়েমেনি জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। সূত্র জানায়, ইয়েমেনের বন্দর ও বিমানবন্দরগুলো পুনরায় চালু, সরকারি কর্মীদের মজুরি প্রদান, একটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনার ওপর মনোযোগ দেওয়া হবে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনা ব্যর্থ হলে হুথিদের সঙ্গে পুনরায় সরাসরি আলোচনা শুরু করে সৌদি আরব। সংঘাতের অবসানে একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরুর প্রত্যাশা করছে জাতিসংঘ। যে প্রক্রিয়ায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলে একটি অন্তর্বর্তীকালীন ঐক্য সরকারের দিকে এগিয়ে যাবে বিবদমান পক্ষগুলো।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত হ্যান্স গ্রুন্ডবার্গ এই সপ্তাহে ওমানের রাজধানী মাস্কটে সিনিয়র ওমানি এবং হুথি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তার কার্যালয় জানিয়েছে, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ইয়েমেনি-নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার দিকে অগ্রগতির উপায় নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন। বৈরি প্রতিদ্বন্দ্বীতা ও সশস্ত্র দ্বন্দ্বের কয়েক বছর পর সৌদি আরব ও ইরান তাদের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার চীনের সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় দুই দেশ সম্পর্কে উন্নতি ঘটানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চীনের তেলের চাহিদার বেশিরভাগ পূরণ করে মধ্যপ্রাচ্য। ফলে অঞ্চলটির স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন বেইজিং। এই উদ্বেগ থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে বৃহত্তর ভূমিকা রাখার দিকে অগ্রসর হচ্ছে দেশটি।
সুমি/হককথা