নিউইয়র্ক ০৯:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবীর মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • / ৭৮৯ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: কেন্দ্রীয় নেতা এম কে আনোয়ার ও সাংবাদিক শওকত মাহমুদসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবীর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র উদ্যোগে নিউইয়র্কে বিএনপি’র ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হলো। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ব্যতিক্রমী এক সমাবেশে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে নানা শ্লোগানে মুখরিত করে তোলেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। সেই সাথে রং ওেব রং এর একগুচ্ছ বেলুন উড়ানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর নেতৃত্বে দলের পক্ষ থেকে জ্যাকসন হাইটস্থ ডাইভারসিটি প্লাজার খোলা আকাশের নীচে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এই সমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র আব্দুস সালাম, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার এবং জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ও কেন্দ্রীয় জাসাস নেত্রী বেবী নাজনীন।
জিল্লুর রহমান জিল্লুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার ও বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন খোকন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা এবাদ চৌধুরী ও আব্দুল বাসেত, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সহ সভাপতি সারোয়ার খান বাবু, যুগ্ম সম্পাদক আমানত হোসেন আমান, যুবদল নেতা ইকবাল হায়দার, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সভাপতি এম এ বাসেত প্রমুখ। খবর ইউএনএ’র।
সমাবেশে আব্দুস সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যে দেশে কথা বলার সুযোগ নেই, আমাদেরকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হয় না। দেশে গণতন্ত্র বলতে কিছুই নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকেই আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। ৭৫-এ যেভাবে ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগের নেতারা শেখ মুজিবকে হত্যা করেছিলো। শেখ হাসিনাও নাকি তেমন ষড়যন্ত্রে জীবননাসের আশংকায় ভুগছেন। আওয়ামী লীগের নেতারাই এমন আশংকা করছেন। তিনি বলেন, রাজনীতিতে শূণ্যতা, গণতন্ত্র আর বিরোধীদল না থাকলে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
আব্দুস সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ আকস্মিকভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দিলেও বিএনপি জনগনের সম্যান্ডেট ছাড়া ক্ষমতায় যাবে না। বিএনপি ষড়যন্ত্র করে নয়, ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল। বিএনপি ধ্বংস করা যাবে না আর বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর হামলা-মামলা, গ্রেফতার, জুলুম-নির্যাতন করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি তো ক্ষমতায় নেই তো বিএনপিকে এতো ভয় কেনো? নির্বাচন দিতে আওয়ামী লীগের এতো ভয় কেনো?
আব্দুস সালাম দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কথা স্মরণ করে বলেন, শেখ মুজিব হত্যার সময় বিএনপি’র জন্মই হয়নি। দেশ ও জাতির ক্রান্তিকাল আর বাস্তবতায় জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। যেমন প্রয়োজনে জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি বলেন, জিয়া ক্যু করে ক্ষমতায় আসেননি। সিপাহী-বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণই জিয়াকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসায়। আর জিয়া ক্ষমতায় বসে আওয়ামী লীগের হত্য করা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আওয়ামী লীগ-জাসদ সনহ সকল দলকে রাজনীতি করার আর শেখ হাসিনাকে দেশে আসার সুযোগ করে দেন।
আব্দুস সালাম বলেন, জিয়াউর রহমান ঐক্যের মন্ত্রে উদ্দীপ্ত হয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গড়েন। জিয়ার জনপ্রিয়তা ঘরে ঘরে। জিয়ার মাজার সরিয়ে ফেললেও যেমন জনগণের মন থেকে তাকে মুছে ফেলা যাবে না। তেমনী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকেও জনগণের কাছ থেকে সড়িয়ে রাখা যাবে না। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবী করে বলেন, গণতন্ত্রই রাজনীতিকদের ভালো পথ দেখাতে পারে।
ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং জনপ্রিয় দল। ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবে না। তিনি কেন্দ্রীয় নেতা এম কে আনোয়ার ও চেয়াপর্সনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শওকত মাহমুদসহ গ্রেফতারকৃত দলের সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবী করেন।
বেবী নাজনীন তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ এবং গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবী করেন।
জিল্লুর রহমান জিল্লু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘অবৈধ সরকার’ আখ্যায়িত করে বলেন, এই সরকার দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। কিন্তু সরকারের নিপীড়ণ-নির্যাতন বেধ করে সূর্যের আলো একদিন বেড়িয়ে আসবেই, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবেই। বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর সরকারের যত বেশী নির্যাতন আসবে, গনতন্ত্রের পথ ততই প্রশস্ত হবে। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
পরে কেন্দ্রীয় বিএনপি ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হাত দিয়ে রং বে রং-এর একগুচ্ছ বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হয়। সমাবেশ থেকে ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, এক হও’, ‘শওকত ভাই জেলে কেনো খুনি হাসিনা জবাব চাই’,‘কে বলেছে জিয়া নাই, জিয়া সারা বাংলায়’ প্রভৃতি শ্লোগান দেয়া হয়।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীর সমাবেশ ঘটে। এসময় উল্লেখযোগ্য নেতা-কর্মীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু, মনজুর আহমেদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, সাবেক কোষাধ্যক্ষ শাহাদ হোসেন, ডা. গুলজার হোসেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার আলী হোসেন, বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান চৌধুরী, এমলাক হোসেন ফয়সাল, আব্দুল কদ্দুস, ওয়াহেদ আলী মন্ডল, ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম, ডা. তারেক, ইঞ্জিনিয়ার সায়েম, আনোয়ার তুহিন, মহিলাদল নেত্রী শাহানা বেগম ও নীরা রব্বানী, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পরিষদের সভাপতি পারভেজ সাজ্জাদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সহ সভাপতি আহবাব হোসেন চৌধুরী খোকন ও আতিকুল হক আহাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, নিউইয়র্ক ষ্টেট যুবদলের সভাপতি কাজী আমিনুল ইসলাম স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আজাদ ভুইয়া, নিউইয়র্ক সিটি যুবদলের সভাপতি বিলাল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শেখ হায়দার আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মজনু ও সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুর রহমান সহ বিএনপি-যুবদলের মধ্যে জীবন শফিক, শরীফুল খালিশদার, শামীম মাহমুদ মিজান, সোহেব আহমেদ চৌধুরী, নাজিম চৌধুরী রিংকু, কাওসার আহমেদ, আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ আলী রাজা, মার্শাল মুরাদ, জাহিদ খান, খাদেমুল মলক, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুস সামাদ টিটু, অপু আহমেদ, দিলদার হোসেন, ছাইদ আহমেদ, ফেরদৌস আলম, কাজী মজিবুর রহমান, আমিনুর রসুল, এমদাদ উল্লাহ, জিয়াউল আলম, আজগর হোসেন, সাজেদুল ইসলাম রফিক, আফরোজা বেগম রোজী, মাহবুব হোসেন, খালেদ খান, ফাহিম শাকিল অপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির কর্মকান্ড চলছে কমিটি বিহীন। দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নেই। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র একাংশ সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটস্থ ডাইভারসিটি প্লাজায় আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জিল্লুর রহমান জিল্লুর আমন্ত্রণে যোগ দেন ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অপরাংশে নেতা-কর্মীরা। পরবর্তীতে এই সমাবেশ শেষে জিল্লুর রহমান জিল্লু ও তার সমর্থকরা ডা. মুজিব নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র অপরাংশ স্থানীয় হাটবাজার মিলনায়তনে আয়োজিত দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবীর মধ্য দিয়ে নিউইয়র্কে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

নিউইয়র্ক: কেন্দ্রীয় নেতা এম কে আনোয়ার ও সাংবাদিক শওকত মাহমুদসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবীর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র উদ্যোগে নিউইয়র্কে বিএনপি’র ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হলো। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ব্যতিক্রমী এক সমাবেশে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে নানা শ্লোগানে মুখরিত করে তোলেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। সেই সাথে রং ওেব রং এর একগুচ্ছ বেলুন উড়ানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর নেতৃত্বে দলের পক্ষ থেকে জ্যাকসন হাইটস্থ ডাইভারসিটি প্লাজার খোলা আকাশের নীচে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এই সমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র আব্দুস সালাম, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার এবং জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ও কেন্দ্রীয় জাসাস নেত্রী বেবী নাজনীন।
জিল্লুর রহমান জিল্লুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার ও বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন খোকন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা এবাদ চৌধুরী ও আব্দুল বাসেত, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সহ সভাপতি সারোয়ার খান বাবু, যুগ্ম সম্পাদক আমানত হোসেন আমান, যুবদল নেতা ইকবাল হায়দার, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সভাপতি এম এ বাসেত প্রমুখ। খবর ইউএনএ’র।
সমাবেশে আব্দুস সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যে দেশে কথা বলার সুযোগ নেই, আমাদেরকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হয় না। দেশে গণতন্ত্র বলতে কিছুই নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকেই আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। ৭৫-এ যেভাবে ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগের নেতারা শেখ মুজিবকে হত্যা করেছিলো। শেখ হাসিনাও নাকি তেমন ষড়যন্ত্রে জীবননাসের আশংকায় ভুগছেন। আওয়ামী লীগের নেতারাই এমন আশংকা করছেন। তিনি বলেন, রাজনীতিতে শূণ্যতা, গণতন্ত্র আর বিরোধীদল না থাকলে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
আব্দুস সালাম বলেন, আওয়ামী লীগ আকস্মিকভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দিলেও বিএনপি জনগনের সম্যান্ডেট ছাড়া ক্ষমতায় যাবে না। বিএনপি ষড়যন্ত্র করে নয়, ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল। বিএনপি ধ্বংস করা যাবে না আর বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর হামলা-মামলা, গ্রেফতার, জুলুম-নির্যাতন করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি তো ক্ষমতায় নেই তো বিএনপিকে এতো ভয় কেনো? নির্বাচন দিতে আওয়ামী লীগের এতো ভয় কেনো?
আব্দুস সালাম দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কথা স্মরণ করে বলেন, শেখ মুজিব হত্যার সময় বিএনপি’র জন্মই হয়নি। দেশ ও জাতির ক্রান্তিকাল আর বাস্তবতায় জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। যেমন প্রয়োজনে জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি বলেন, জিয়া ক্যু করে ক্ষমতায় আসেননি। সিপাহী-বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণই জিয়াকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসায়। আর জিয়া ক্ষমতায় বসে আওয়ামী লীগের হত্য করা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আওয়ামী লীগ-জাসদ সনহ সকল দলকে রাজনীতি করার আর শেখ হাসিনাকে দেশে আসার সুযোগ করে দেন।
আব্দুস সালাম বলেন, জিয়াউর রহমান ঐক্যের মন্ত্রে উদ্দীপ্ত হয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গড়েন। জিয়ার জনপ্রিয়তা ঘরে ঘরে। জিয়ার মাজার সরিয়ে ফেললেও যেমন জনগণের মন থেকে তাকে মুছে ফেলা যাবে না। তেমনী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকেও জনগণের কাছ থেকে সড়িয়ে রাখা যাবে না। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবী করে বলেন, গণতন্ত্রই রাজনীতিকদের ভালো পথ দেখাতে পারে।
ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং জনপ্রিয় দল। ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবে না। তিনি কেন্দ্রীয় নেতা এম কে আনোয়ার ও চেয়াপর্সনের উপদেষ্টা সাংবাদিক শওকত মাহমুদসহ গ্রেফতারকৃত দলের সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবী করেন।
বেবী নাজনীন তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ এবং গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবী করেন।
জিল্লুর রহমান জিল্লু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘অবৈধ সরকার’ আখ্যায়িত করে বলেন, এই সরকার দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। কিন্তু সরকারের নিপীড়ণ-নির্যাতন বেধ করে সূর্যের আলো একদিন বেড়িয়ে আসবেই, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবেই। বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর সরকারের যত বেশী নির্যাতন আসবে, গনতন্ত্রের পথ ততই প্রশস্ত হবে। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
পরে কেন্দ্রীয় বিএনপি ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হাত দিয়ে রং বে রং-এর একগুচ্ছ বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হয়। সমাবেশ থেকে ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, এক হও’, ‘শওকত ভাই জেলে কেনো খুনি হাসিনা জবাব চাই’,‘কে বলেছে জিয়া নাই, জিয়া সারা বাংলায়’ প্রভৃতি শ্লোগান দেয়া হয়।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীর সমাবেশ ঘটে। এসময় উল্লেখযোগ্য নেতা-কর্মীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু, মনজুর আহমেদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, সাবেক কোষাধ্যক্ষ শাহাদ হোসেন, ডা. গুলজার হোসেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার আলী হোসেন, বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান চৌধুরী, এমলাক হোসেন ফয়সাল, আব্দুল কদ্দুস, ওয়াহেদ আলী মন্ডল, ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম, ডা. তারেক, ইঞ্জিনিয়ার সায়েম, আনোয়ার তুহিন, মহিলাদল নেত্রী শাহানা বেগম ও নীরা রব্বানী, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পরিষদের সভাপতি পারভেজ সাজ্জাদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সহ সভাপতি আহবাব হোসেন চৌধুরী খোকন ও আতিকুল হক আহাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, নিউইয়র্ক ষ্টেট যুবদলের সভাপতি কাজী আমিনুল ইসলাম স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আজাদ ভুইয়া, নিউইয়র্ক সিটি যুবদলের সভাপতি বিলাল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শেখ হায়দার আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মজনু ও সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুর রহমান সহ বিএনপি-যুবদলের মধ্যে জীবন শফিক, শরীফুল খালিশদার, শামীম মাহমুদ মিজান, সোহেব আহমেদ চৌধুরী, নাজিম চৌধুরী রিংকু, কাওসার আহমেদ, আব্দুর রহিম, মোহাম্মদ আলী রাজা, মার্শাল মুরাদ, জাহিদ খান, খাদেমুল মলক, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুস সামাদ টিটু, অপু আহমেদ, দিলদার হোসেন, ছাইদ আহমেদ, ফেরদৌস আলম, কাজী মজিবুর রহমান, আমিনুর রসুল, এমদাদ উল্লাহ, জিয়াউল আলম, আজগর হোসেন, সাজেদুল ইসলাম রফিক, আফরোজা বেগম রোজী, মাহবুব হোসেন, খালেদ খান, ফাহিম শাকিল অপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির কর্মকান্ড চলছে কমিটি বিহীন। দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নেই। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র একাংশ সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটস্থ ডাইভারসিটি প্লাজায় আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জিল্লুর রহমান জিল্লুর আমন্ত্রণে যোগ দেন ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অপরাংশে নেতা-কর্মীরা। পরবর্তীতে এই সমাবেশ শেষে জিল্লুর রহমান জিল্লু ও তার সমর্থকরা ডা. মুজিব নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র অপরাংশ স্থানীয় হাটবাজার মিলনায়তনে আয়োজিত দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন।