নিউইয়র্ক ০১:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অধিকাংশ যুক্তরাষ্ট্র মনে করেন ইরাক যুদ্ধ ছিল ভুল সিদ্ধান্ত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৪০:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩
  • / ৬৯ বার পঠিত

সাদ্দাম হোসেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ২০০৩ সালের ১৯ মার্চ ইরাকে বিমান হামলা এবং ২০ মার্চ থেকে স্থল হামলা শুরু করেছিল। তখন এই আগ্রাসনের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকানের সমর্থন ছিল। কিন্তু ইরাক যুদ্ধের ২০ বছর পর সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা যায়, এখন ৬১ শতাংশ আমেরিকানই ইরাক আগ্রাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের ভুল সিদ্ধান্ত মনে করেন। অনলাইন সংবাদমাধ্যম এক্সিয়স ও জরিপ সংস্থা ইপসস এই জরিপ চালিয়েছে। অবশ্য এখনো ২৬ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ও ৫৮ শতাংশ রিপাবলিকান ইরাক আগ্রাসনের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মনে করেন। গত সপ্তাহে আঠারোর্ধ্ব ১ হাজার ১৮ জন আমেরিকানের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। এতে আরও দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৭ শতাংশই মনে করেন, এই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে কোনোভাবেই নিরাপদ করেনি।

আরোও পড়ুন । মালয়েশিয়া সরকার নতুন করে বিদেশি কর্মী নেওয়ার সব ধরনের আবেদন ও প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে। 

জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক নেতৃত্বে থাকুক, প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আমেরিকানই তা চান। গত দুই দশকে জাতীয় প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ওপর ওয়াশিংটনের সার্বিক মনযোগ যুক্তরাষ্ট্রকে আরও নিরাপদ করেছে বলে মনে করছেন ৫৪ শতাংশ আমেরিকান। ইরাকের সাদ্দাম হোসেনের কাছে ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র (উইপনস অব মাস ডেস্ট্রাকশন)’ আছে অভিযোগে দেশটিতে আগ্রাসন চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো। এই যুদ্ধের প্রতি অধিকাংশ প্রাথমিক সমর্থন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের এ ধরনের মিথ্যা দাবির ওপর ভিত্তি করে।

ইরাক বডি কাউন্ট প্রজেক্ট নামের একটি সংস্থার হিসাবমতে, ওই আগ্রাসন ও তৎপরবর্তী যুক্তরাষ্ট্র দখলদারত্বে ইরাকে ২ লাখ ১০ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ইরাকিদের মুক্ত ও গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০০৩ সালে ওই আগ্রাসন চালানো হলেও আজকের ইরাক সেই বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। আগ্রাসনের ফলে চরম অস্থিতিশীলতার মধ্যে পড়ে ইরাক। দেশটি সন্ত্রাসবাদের উৎসস্থলে পরিণত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ২০১১ সালে আংশিক সেনা প্রত্যাহার করে নিলে ইরাকের উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

আরোও পড়ুন । নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদ নোটিশ!

ইরাকে বর্তমানে আড়াই হাজারের মতো আমেরিকান সেনা রয়েছে। যদিও তিন বছর আগেই তাদের ইরাক ছাড়তে বলেছিল দেশটির সরকার। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের ২০১৯ সালের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, ইরাকে যুদ্ধের পুরোটা সময় দেশটিতে ৪ হাজার ৪৮৭ আমেরিকান সেনা নিহত হন। অবশ্য শুরু থেকেই ইরাক যুদ্ধের প্রতি যাঁরা সমর্থন দিয়ে আসছেন অথবা বিরোধিতা করে আসছেন কিংবা এ বিষয়ে যাঁরা নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করেছেন—এই তিন ধরনের লোকদের মধ্যে যুদ্ধের বিষয়ে কাদের অবস্থান সঠিক, সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি জরিপে অংশ নেওয়া ৪৪ শতাংশই।

ব্লেয়ারের সাফাই

আরটি জানায়, সম্প্রতি ইরাক যুদ্ধের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। তিনি দাবি করেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানের তুলনায় ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন হামলা অনেক বেশি যৌক্তিক ছিল। ব্লেয়ারের এমন সাফাই অবশ্য নতুন নয়। আগেও তিনি যুদ্ধের পক্ষে এ রকম সাফাই গেয়েছেন। পরে সবই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সূত্র : প্রথম আলো পত্রিকা

সাথী / হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

অধিকাংশ যুক্তরাষ্ট্র মনে করেন ইরাক যুদ্ধ ছিল ভুল সিদ্ধান্ত

প্রকাশের সময় : ০২:৪০:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ২০০৩ সালের ১৯ মার্চ ইরাকে বিমান হামলা এবং ২০ মার্চ থেকে স্থল হামলা শুরু করেছিল। তখন এই আগ্রাসনের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকানের সমর্থন ছিল। কিন্তু ইরাক যুদ্ধের ২০ বছর পর সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা যায়, এখন ৬১ শতাংশ আমেরিকানই ইরাক আগ্রাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের ভুল সিদ্ধান্ত মনে করেন। অনলাইন সংবাদমাধ্যম এক্সিয়স ও জরিপ সংস্থা ইপসস এই জরিপ চালিয়েছে। অবশ্য এখনো ২৬ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ও ৫৮ শতাংশ রিপাবলিকান ইরাক আগ্রাসনের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মনে করেন। গত সপ্তাহে আঠারোর্ধ্ব ১ হাজার ১৮ জন আমেরিকানের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। এতে আরও দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৭ শতাংশই মনে করেন, এই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে কোনোভাবেই নিরাপদ করেনি।

আরোও পড়ুন । মালয়েশিয়া সরকার নতুন করে বিদেশি কর্মী নেওয়ার সব ধরনের আবেদন ও প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে। 

জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক নেতৃত্বে থাকুক, প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আমেরিকানই তা চান। গত দুই দশকে জাতীয় প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ওপর ওয়াশিংটনের সার্বিক মনযোগ যুক্তরাষ্ট্রকে আরও নিরাপদ করেছে বলে মনে করছেন ৫৪ শতাংশ আমেরিকান। ইরাকের সাদ্দাম হোসেনের কাছে ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র (উইপনস অব মাস ডেস্ট্রাকশন)’ আছে অভিযোগে দেশটিতে আগ্রাসন চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো। এই যুদ্ধের প্রতি অধিকাংশ প্রাথমিক সমর্থন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের এ ধরনের মিথ্যা দাবির ওপর ভিত্তি করে।

ইরাক বডি কাউন্ট প্রজেক্ট নামের একটি সংস্থার হিসাবমতে, ওই আগ্রাসন ও তৎপরবর্তী যুক্তরাষ্ট্র দখলদারত্বে ইরাকে ২ লাখ ১০ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ইরাকিদের মুক্ত ও গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০০৩ সালে ওই আগ্রাসন চালানো হলেও আজকের ইরাক সেই বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। আগ্রাসনের ফলে চরম অস্থিতিশীলতার মধ্যে পড়ে ইরাক। দেশটি সন্ত্রাসবাদের উৎসস্থলে পরিণত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ২০১১ সালে আংশিক সেনা প্রত্যাহার করে নিলে ইরাকের উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

আরোও পড়ুন । নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদ নোটিশ!

ইরাকে বর্তমানে আড়াই হাজারের মতো আমেরিকান সেনা রয়েছে। যদিও তিন বছর আগেই তাদের ইরাক ছাড়তে বলেছিল দেশটির সরকার। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের ২০১৯ সালের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, ইরাকে যুদ্ধের পুরোটা সময় দেশটিতে ৪ হাজার ৪৮৭ আমেরিকান সেনা নিহত হন। অবশ্য শুরু থেকেই ইরাক যুদ্ধের প্রতি যাঁরা সমর্থন দিয়ে আসছেন অথবা বিরোধিতা করে আসছেন কিংবা এ বিষয়ে যাঁরা নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করেছেন—এই তিন ধরনের লোকদের মধ্যে যুদ্ধের বিষয়ে কাদের অবস্থান সঠিক, সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি জরিপে অংশ নেওয়া ৪৪ শতাংশই।

ব্লেয়ারের সাফাই

আরটি জানায়, সম্প্রতি ইরাক যুদ্ধের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। তিনি দাবি করেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানের তুলনায় ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন হামলা অনেক বেশি যৌক্তিক ছিল। ব্লেয়ারের এমন সাফাই অবশ্য নতুন নয়। আগেও তিনি যুদ্ধের পক্ষে এ রকম সাফাই গেয়েছেন। পরে সবই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সূত্র : প্রথম আলো পত্রিকা

সাথী / হককথা