নিউইয়র্ক ০২:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মানুষ একালের হাতেম তাই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৩৬:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩
  • / ৭২ বার পঠিত

যশোরের ঝিকরগাছার বল্লা গ্রামে রেজা নুর যশোরের ঝিকরগাছার বল্লা গ্রামে রেজা নুর। ছবি : আজকের পত্রিকা

হককথা ডেস্ক : পিচের রাস্তা থেকে পশ্চিম দিকে চলে গেছে ইটের সলিং। সেই রাস্তা দিয়ে মিনিটখানেক হেঁটে যাওয়ার পর দক্ষিণ পাশে বাড়ির ভেতর দিয়ে যাওয়া রাস্তাটিও ইটের সলিং করা। কিছু দূর গিয়ে রাস্তাটি একটি বাড়ির সীমানায় শেষ হয়েছে। যেন বাড়ি থেকে বাড়ি যাওয়ার রাস্তা। এমনটা সাধারণত সিটি করপোরেশন বা পৌর এলাকায় দেখা যায়। কিন্তু গ্রামের রাস্তার এমন দৃশ্য যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বল্লা গ্রামের নজুর মোড় এলাকায়। বাড়ির ভেতর ইটের সলিং করা রাস্তাটির নাম আনোয়ারা সড়ক।

শুধু নজুর মোড়েই নয়, এমন রাস্তা আরও দেখা যায় বল্লা গ্রামের কলোনিপাড়ায়। এ ছাড়া নিচের পাড়া, বল্লা বাজারসহ গ্রামের আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় আছে এমন রাস্তা। তবে এসব রাস্তার প্রতিটির আলাদা নাম রয়েছে।

বল্লা গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমান নায়েবের ছেলে আমেরিকাপ্রবাসী রেজা নুর এসব রাস্তা নির্মাণ করেছেন। শুধু রাস্তা নয়, একাধিক উপাসনালয়, পাবলিক লাইব্রেরি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও তৈরি করেছেন তিনি। এ ছাড়া তৈরি করে দিয়েছেন পুকুরঘাট, বসিয়েছেন নলকূপ, সংস্কার করেছেন খেলার মাঠ এবং তৈরি করেছেন কবরস্থান। নিজ অর্থে এসব কর্মকাণ্ডে তিনি মানুষের কাছে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তাঁর এসব কর্মকাণ্ড নিজ গ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে বিস্তৃত হয়েছে আত্মীয়স্বজনের গ্রামেও।

রেজা নুর ১৯৯৫ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে অ্যাকাউন্টিং পড়েছেন নিউইয়র্কের ড্রেইক বিজনেস স্কুলে। ঝিকরগাছা মহিলা কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু হলেও ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে তিনি আমেরিকায় পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুসেটস স্টেটের বোস্টন সিটির অদূরে ইস্টন শহরে বসবাস করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজ অর্থায়নে বল্লার নিচের পাড়ায় দাদার নামে ২০১৬ সালে উসমান সড়ক, দাদির নামে ২০১৯ সালে সৈয়েদা জান সড়ক তৈরি করেন। একই বছর ফুফুর নামে আনোয়ারা সড়ক ও ২০১৮ সালে বল্লা বাজার সড়ক নির্মাণ করেন। সে বছরই মনিরামপুর উপজেলার হানুয়ারে নানার নামে মোক্তার মাস্টার সড়ক, ২০২২ সালে বল্লা কলোনিপাড়া মসজিদ সড়ক এবং ২০১৯ সালে বরিশাল বাবুগঞ্জের ইসলামপুরে শ্বশুর-শাশুড়ির নামে আলেয়া-কবীর সড়কসহ মোট আটটি সড়ক নির্মাণ করেছেন। পাশাপাশি ২০১৭ সালে বল্লা বাজারে তাঁর বাবার নামে আতিয়ার রহমান পাবলিক লাইব্রেরি, ২০১৯ সালে মায়ের নামে ময়না এতিমখানা, বোনের নামে শিউলি শিক্ষালয়, বল্লা দাখিল মাদ্রাসায় ৫০ শতাংশ জমি দান, বাবার নামে মসজিদ নির্মাণসহ এলাকাবাসীর জন্য কবরস্থান এবং বিশুদ্ধ পানির জন্য একাধিক নলকূপ বসিয়েছেন।

উন্নয়নমূলক এসব কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সাহিত্যচর্চায় মন টানে রেজা নুরের। এ পর্যন্ত তাঁর ১৭টি উপন্যাস ও কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। বল্লা গ্রামের শিক্ষার্থী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘খেলাধুলাসহ নানান সামাজিক কর্মকাণ্ডে রেজা নুর আর্থিক সহযোগিতা করেন। বড় কোনো টুর্নামেন্ট হলে আমরা তাঁর শরণাপন্ন হই। এর আগে তিনি গোলপোস্ট উপহার দিয়েছেন। এবার টুর্নামেন্টেও তিনি বড় অঙ্কের সহযোগিতা করেন।’

সব সময় জনকল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকতে চান রেজা নুর। তিনি বলেন, ‘আমি বল্লা গ্রামের সন্তান। যেখানেই থাকি, আমার উপার্জনে গ্রামবাসীর হক রয়েছে। সে কারণে গ্রামের উন্নয়ন এবং সব সামাজিক কর্মকাণ্ডে আমি সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মানুষ একালের হাতেম তাই

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৬:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩

হককথা ডেস্ক : পিচের রাস্তা থেকে পশ্চিম দিকে চলে গেছে ইটের সলিং। সেই রাস্তা দিয়ে মিনিটখানেক হেঁটে যাওয়ার পর দক্ষিণ পাশে বাড়ির ভেতর দিয়ে যাওয়া রাস্তাটিও ইটের সলিং করা। কিছু দূর গিয়ে রাস্তাটি একটি বাড়ির সীমানায় শেষ হয়েছে। যেন বাড়ি থেকে বাড়ি যাওয়ার রাস্তা। এমনটা সাধারণত সিটি করপোরেশন বা পৌর এলাকায় দেখা যায়। কিন্তু গ্রামের রাস্তার এমন দৃশ্য যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বল্লা গ্রামের নজুর মোড় এলাকায়। বাড়ির ভেতর ইটের সলিং করা রাস্তাটির নাম আনোয়ারা সড়ক।

শুধু নজুর মোড়েই নয়, এমন রাস্তা আরও দেখা যায় বল্লা গ্রামের কলোনিপাড়ায়। এ ছাড়া নিচের পাড়া, বল্লা বাজারসহ গ্রামের আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় আছে এমন রাস্তা। তবে এসব রাস্তার প্রতিটির আলাদা নাম রয়েছে।

বল্লা গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমান নায়েবের ছেলে আমেরিকাপ্রবাসী রেজা নুর এসব রাস্তা নির্মাণ করেছেন। শুধু রাস্তা নয়, একাধিক উপাসনালয়, পাবলিক লাইব্রেরি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও তৈরি করেছেন তিনি। এ ছাড়া তৈরি করে দিয়েছেন পুকুরঘাট, বসিয়েছেন নলকূপ, সংস্কার করেছেন খেলার মাঠ এবং তৈরি করেছেন কবরস্থান। নিজ অর্থে এসব কর্মকাণ্ডে তিনি মানুষের কাছে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তাঁর এসব কর্মকাণ্ড নিজ গ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে বিস্তৃত হয়েছে আত্মীয়স্বজনের গ্রামেও।

রেজা নুর ১৯৯৫ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে অ্যাকাউন্টিং পড়েছেন নিউইয়র্কের ড্রেইক বিজনেস স্কুলে। ঝিকরগাছা মহিলা কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু হলেও ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে তিনি আমেরিকায় পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি ম্যাসাচুসেটস স্টেটের বোস্টন সিটির অদূরে ইস্টন শহরে বসবাস করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজ অর্থায়নে বল্লার নিচের পাড়ায় দাদার নামে ২০১৬ সালে উসমান সড়ক, দাদির নামে ২০১৯ সালে সৈয়েদা জান সড়ক তৈরি করেন। একই বছর ফুফুর নামে আনোয়ারা সড়ক ও ২০১৮ সালে বল্লা বাজার সড়ক নির্মাণ করেন। সে বছরই মনিরামপুর উপজেলার হানুয়ারে নানার নামে মোক্তার মাস্টার সড়ক, ২০২২ সালে বল্লা কলোনিপাড়া মসজিদ সড়ক এবং ২০১৯ সালে বরিশাল বাবুগঞ্জের ইসলামপুরে শ্বশুর-শাশুড়ির নামে আলেয়া-কবীর সড়কসহ মোট আটটি সড়ক নির্মাণ করেছেন। পাশাপাশি ২০১৭ সালে বল্লা বাজারে তাঁর বাবার নামে আতিয়ার রহমান পাবলিক লাইব্রেরি, ২০১৯ সালে মায়ের নামে ময়না এতিমখানা, বোনের নামে শিউলি শিক্ষালয়, বল্লা দাখিল মাদ্রাসায় ৫০ শতাংশ জমি দান, বাবার নামে মসজিদ নির্মাণসহ এলাকাবাসীর জন্য কবরস্থান এবং বিশুদ্ধ পানির জন্য একাধিক নলকূপ বসিয়েছেন।

উন্নয়নমূলক এসব কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সাহিত্যচর্চায় মন টানে রেজা নুরের। এ পর্যন্ত তাঁর ১৭টি উপন্যাস ও কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। বল্লা গ্রামের শিক্ষার্থী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘খেলাধুলাসহ নানান সামাজিক কর্মকাণ্ডে রেজা নুর আর্থিক সহযোগিতা করেন। বড় কোনো টুর্নামেন্ট হলে আমরা তাঁর শরণাপন্ন হই। এর আগে তিনি গোলপোস্ট উপহার দিয়েছেন। এবার টুর্নামেন্টেও তিনি বড় অঙ্কের সহযোগিতা করেন।’

সব সময় জনকল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকতে চান রেজা নুর। তিনি বলেন, ‘আমি বল্লা গ্রামের সন্তান। যেখানেই থাকি, আমার উপার্জনে গ্রামবাসীর হক রয়েছে। সে কারণে গ্রামের উন্নয়ন এবং সব সামাজিক কর্মকাণ্ডে আমি সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা