নিউইয়র্ক ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অস্বাভাবিক খরচ, কঠিন হচ্ছে সাধারণের হজ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৫০:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৮৫ বার পঠিত

বাংলােদশ ডেস্ক : চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন গমনেচ্ছু ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তাঁরা বলছেন, এক লাফে বিপুল অঙ্কের খরচ বাড়াটা স্বাভাবিক ঘটনা নয়। ধর্ম মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের স্বার্থ সঠিকভাবে রক্ষা করছে কিনা- সেই প্রশ্ন তুলে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ দাবি করছেন কেউ কেউ। গত বছর সরকারিভাবে হজ প্যাকেজের সর্বনিম্ন খরচ ছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা। এবার সরকারিভাবে হজযাত্রীদের জন্য একটি মাত্র প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে জনপ্রতি খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো তাদের সর্বনিম্ন হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকারের চেয়ে ১০ হাজার ৩৯৭ টাকা কমে। তাদের খরচ ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। অন্যান্য বছর সরকারি প্যাকেজের চেয়ে বেসরকারি হজ পাকেজের খরচ বেশি থাকে, এবার তার উল্টো চিত্র। হজে গমনেচ্ছুরা বলছেন, হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাবের পক্ষ থেকে সরকারের চেয়ে কম খরচে প্যাকেজ ঘোষণা করার মানে সরকার চাইলে আরও কম টাকা নিতে পারত। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয়, ধর্ম মন্ত্রণালয় খরচের বিষয়ে সাধারণ হজযাত্রীদের সামর্থ্যের কথা গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করেনি।

এ ব্যাপারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান সমকালকে বলেন, ‘হজের ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের নেই। ডলার ও রিয়ালের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে হজ প্যাকেজে।’ তিনি বলেন, সরকার ঘোষিত হজ প্যাকেজটি ‘সি’ ক্যাটাগরির। আর বেসরকারি এজেন্সিগুলো সর্বনিম্ন হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ‘ডি’ ক্যাটাগরির। তাই তাদের দাম কিছুটা কম। তিনি আরও বলেন, ঘোষিত প্যাকেজের চেয়ে খরচ কম হলে হজযাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আগেও এভাবে ফেরত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি এবং বেসরকারি হজ প্যাকেজের খরচ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সরকারের মতো বেসরকারি হজ প্যাকেজের ঘোষণায়ও ‘সি’ ক্যাটাগরির সুযোগ-সুবিধার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।

আরোও পড়ুন । হজ পালনে সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ

হজ এজেন্সির মালিকরা বলছেন, হাবের ঘোষিত প্যাকেজে পবিত্র হারাম শরিফ থেকে ১৫০০ মিটারের মধ্যে হজযাত্রীদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে সরকারি প্যাকেজে দুই হাজার মিটারের মধ্যে বাসস্থানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
গত বছর হজে যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়েছিলেন রাজধানীর বাড্ডার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী সোহেল রানা। পরিবারের আরেক সদস্যসহ দু’জনের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে হজে যেতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ২ লাখ উদ্ধার করতে পারলেও বাকি টাকা পাননি। তাঁরা এবারও হজে যাওয়ার নিয়ত করেছেন। কিন্তু হজ প্যাকেজের এত বেশি খরচের কারণে দোটানায় আছেন সোহেল।

তিনি সমকালকে বলেন, হজে যাওয়ার নিয়ত ছাড়িনি। প্রতারিত হয়েও আশায় ছিলাম যাব। কিন্তু এত বেশি টাকা খরচ বাড়ায় জমি বিক্রি করা ছাড়া হজে যেতে পারব না। তাই ভাবছি কী করব। তিনি আরও বলেন, হজের খরচের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেখা হলে টাকা আরও কম লাগত বলে আমাদের বিশ্বাস। খরচ বৃদ্ধির কারণে কেউ কেউ হজযাত্রা না করার সিদ্ধান্তও নিচ্ছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব সমকালকে জানান, তাঁর এক নিকট আত্মীয় হজে যাওয়ার নিয়ত করেছিলেন। কিন্তু হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, আরও কম খরচে সরকারি প্যাকেজ ঘোষণা করা সম্ভব ছিল কিনা- সেটা সরকারের প্রতিনিধিরা বলতে পারবেন। এ বিষয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য নেই। হাব সদস্যরা নিজেদের মতো করে প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। সরকারি প্যাকেজে বাড়তি খরচের কারণ সম্পর্কে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম বলেন, সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে সরকারি ব্যবস্থাপনার হাজিদের জন্য উন্নতমানের বেশি সংখ্যক এসি বাসের ব্যবস্থা থাকবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাওয়া হজযাত্রীদের চেয়ে সরকারি যাত্রীরা এরকম কিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জাহাজে করে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রার বিষয়ে যে আলোচনা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে হচ্ছে, সেটা খুবই প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। চলতি বছর এটা সম্ভব নয়। সূত্র : সমকাল

সাথী/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

অস্বাভাবিক খরচ, কঠিন হচ্ছে সাধারণের হজ

প্রকাশের সময় : ১২:৫০:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বাংলােদশ ডেস্ক : চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার খরচ অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন গমনেচ্ছু ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তাঁরা বলছেন, এক লাফে বিপুল অঙ্কের খরচ বাড়াটা স্বাভাবিক ঘটনা নয়। ধর্ম মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের স্বার্থ সঠিকভাবে রক্ষা করছে কিনা- সেই প্রশ্ন তুলে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ দাবি করছেন কেউ কেউ। গত বছর সরকারিভাবে হজ প্যাকেজের সর্বনিম্ন খরচ ছিল ৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা। এবার সরকারিভাবে হজযাত্রীদের জন্য একটি মাত্র প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে জনপ্রতি খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো তাদের সর্বনিম্ন হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকারের চেয়ে ১০ হাজার ৩৯৭ টাকা কমে। তাদের খরচ ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। অন্যান্য বছর সরকারি প্যাকেজের চেয়ে বেসরকারি হজ পাকেজের খরচ বেশি থাকে, এবার তার উল্টো চিত্র। হজে গমনেচ্ছুরা বলছেন, হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাবের পক্ষ থেকে সরকারের চেয়ে কম খরচে প্যাকেজ ঘোষণা করার মানে সরকার চাইলে আরও কম টাকা নিতে পারত। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয়, ধর্ম মন্ত্রণালয় খরচের বিষয়ে সাধারণ হজযাত্রীদের সামর্থ্যের কথা গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করেনি।

এ ব্যাপারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান সমকালকে বলেন, ‘হজের ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের নেই। ডলার ও রিয়ালের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে হজ প্যাকেজে।’ তিনি বলেন, সরকার ঘোষিত হজ প্যাকেজটি ‘সি’ ক্যাটাগরির। আর বেসরকারি এজেন্সিগুলো সর্বনিম্ন হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ‘ডি’ ক্যাটাগরির। তাই তাদের দাম কিছুটা কম। তিনি আরও বলেন, ঘোষিত প্যাকেজের চেয়ে খরচ কম হলে হজযাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আগেও এভাবে ফেরত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি এবং বেসরকারি হজ প্যাকেজের খরচ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সরকারের মতো বেসরকারি হজ প্যাকেজের ঘোষণায়ও ‘সি’ ক্যাটাগরির সুযোগ-সুবিধার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।

আরোও পড়ুন । হজ পালনে সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ

হজ এজেন্সির মালিকরা বলছেন, হাবের ঘোষিত প্যাকেজে পবিত্র হারাম শরিফ থেকে ১৫০০ মিটারের মধ্যে হজযাত্রীদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে সরকারি প্যাকেজে দুই হাজার মিটারের মধ্যে বাসস্থানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
গত বছর হজে যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়েছিলেন রাজধানীর বাড্ডার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী সোহেল রানা। পরিবারের আরেক সদস্যসহ দু’জনের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে হজে যেতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ২ লাখ উদ্ধার করতে পারলেও বাকি টাকা পাননি। তাঁরা এবারও হজে যাওয়ার নিয়ত করেছেন। কিন্তু হজ প্যাকেজের এত বেশি খরচের কারণে দোটানায় আছেন সোহেল।

তিনি সমকালকে বলেন, হজে যাওয়ার নিয়ত ছাড়িনি। প্রতারিত হয়েও আশায় ছিলাম যাব। কিন্তু এত বেশি টাকা খরচ বাড়ায় জমি বিক্রি করা ছাড়া হজে যেতে পারব না। তাই ভাবছি কী করব। তিনি আরও বলেন, হজের খরচের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেখা হলে টাকা আরও কম লাগত বলে আমাদের বিশ্বাস। খরচ বৃদ্ধির কারণে কেউ কেউ হজযাত্রা না করার সিদ্ধান্তও নিচ্ছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব সমকালকে জানান, তাঁর এক নিকট আত্মীয় হজে যাওয়ার নিয়ত করেছিলেন। কিন্তু হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, আরও কম খরচে সরকারি প্যাকেজ ঘোষণা করা সম্ভব ছিল কিনা- সেটা সরকারের প্রতিনিধিরা বলতে পারবেন। এ বিষয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য নেই। হাব সদস্যরা নিজেদের মতো করে প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। সরকারি প্যাকেজে বাড়তি খরচের কারণ সম্পর্কে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম বলেন, সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে সরকারি ব্যবস্থাপনার হাজিদের জন্য উন্নতমানের বেশি সংখ্যক এসি বাসের ব্যবস্থা থাকবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাওয়া হজযাত্রীদের চেয়ে সরকারি যাত্রীরা এরকম কিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জাহাজে করে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রার বিষয়ে যে আলোচনা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে হচ্ছে, সেটা খুবই প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। চলতি বছর এটা সম্ভব নয়। সূত্র : সমকাল

সাথী/হককথা