আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নামিবিয়ার পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চিতা আনছে ভারত। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দর যাদব। রাজধানী নয়াদিল্লিতে মন্ত্রালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতে চিতা ফিরিয়ে আনা সম্পর্কিত প্রকল্পের অংশ হিসেবে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আরও ১২টি চিতা আনা হচ্ছে। এবার চিতা আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে।’

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসার পর প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে এসব চিতাকে মধ্যপ্রদেশের কুনো-পালপুর ন্যাশনাল পার্কে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। বিশ্বে বর্তমানে দু’ধরনের চিতা রয়েছে— এশীয় এবং আফ্রিকান। এক সময় ভারত এশীয় চিতার অভয়ারণ্য ছিল। কিন্তু শিকারীদের দৌরাত্ম্য ও আবাসস্থল সংকটের কারণে ৭ দশক আগে দেশটি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় প্রাণীটি। বর্তমানে একমাত্র ইরানে গুটিকয় এশীয় চিতা টিকে আছে। তবে তাদের সংখ্যা কত— সেই সংক্রান্ত কোনো হালনাগাদ তথ্য কোথাও নেই।

ভারতের শেষ তিনটি এশীয় চিতা বিলুপ্ত হয় ১৯৪৮ সালে। ছত্তিশগড় রাজ্যের মহারাজা স্যাল জাতীয় উদ্যানে সেই চিতা ৩টি শিকার করেছিলেন। ১৯৫২ সালে ভারতে চিতাকে সরকারিভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। চিতাই ভারতে বিচরণকারী একমাত্র বৃহৎ বিড়ালজাতীয় প্রাণী, যেটি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, বিশ্বে বর্তমানে আফ্রিকান চিতার সংখ্যা ৭ হাজারের কিছু বেশি। দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া এবং বতসোয়ানাজুড়ে আছে এসব চিতা। এই তিন দেশের মধ্যে নামিবিয়ায় চিতার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত বছর ভারতে ফের চিতা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেই অনুযায়ী গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা আনা হয়। ওই দিনটি ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন।

নামিবিয়া থেকে আনা চিতাগুলোকেও কুনো-পালপুর ন্যাশনাল পার্কেই রাখা হয়েছে। চিতা আনার কয়েক মাস আগে তাদের শিকারের জন্য ৭৪০ বর্গকিলোমিটারের সেই পার্কটিতে ছাড়া হয়েছিল কয়েক শ’ হরিণ ও বুনো শুয়োর। আশপাশের ২৪টি গ্রামের বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের পরিবেশের সঙ্গে বেশ ভালোভাবেই খাপ খাইয়ে নিয়েছে নামিবিয়ার চিতারা।

গত জানুয়ারি মাসে চিতা আনতে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে চুক্তি করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানিয়েছেন, অদূর ভবিষ্যতে নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও চিতা আনার পরিকল্পনা আছে কেন্দ্রীয় সরকারের। সূত্র : ঢাকা পোষ্ট