নিউইয়র্ক ০৩:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রানা-মুক্তি শহরে : টাঙ্গাইলে পৌরমেয়রের বাসা থেকে ২৭ জন আটক

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:২৫:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০১৫
  • / ৬০০ বার পঠিত

টাঙ্গাইল: বীর মুক্তিযোদ্ধা, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খানের (মুক্তি) বাসা থেকে ২৭ জনকে আটক করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ১৭ জুলাই শুক্রবার দুপুর থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল জেলা শহরের কলেজপাড়া এলাকায় সহিদুরের বাসায় তল্লাশি অভিযান চালায়। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আট মাস আত্মগোপনে থাকার পর সহিদুর রহমান খান বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইলে ফেরেন। গোয়েন্দা পুলিশ শুক্রবার দুপুরেই কলেজপাড়ায় তাঁর বাসভবন ঘেরাও করে অভিযানে নামে। বাসার নিচ তলায় তল্লাশির সময় ২৭ জনকে আটক করা হয়। টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মাহফীজুর রহমান আটকের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান (রানা) ও তাঁর ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খানকে প্রতিরোধের ডাক দিয়ে স্থানীয় লোকজন বৃহস্প্রতিবার শহরে লাঠিমিছিল ও সমাবেশ করে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার রাজা ও মোহাম্মদ আলী আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই হত্যাকান্ডে সংসদ সদস্য আমানুর রহমান রানা ও তাঁর তিন ভাই জড়িত বলে উল্লেখ করেন। অন্য দুজন হলেন ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান (কাকন) ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সানিয়াত খান (বাপ্পা)। ফারুক হত্যার পর থেকে আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপন করেন।
এদিকে গত ১২ জুলাই রোববার আমানুর ও সহিদুর হাইকোর্টে হাজির হয়ে ফারুক হত্যা মামলায় আগাম জামিনের আবেদন করেন। বিচারপতি ফরিদ আহম্মদ ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ শুনানি শেষে গত ১৪ জুলাই মঙ্গলবার আমানুর ও সহিদুরকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এ সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতেও পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরই তাঁরা টাঙ্গাইলে ফিরে আসছেন বলে প্রচার হয়। আমানুরের নির্বাচনী এলাকা ঘাটাইলসহ টাঙ্গাইল শহরে তাঁদের সমর্থকেরা প্রস্তুতি নিতে থাকেন তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে। মঙ্গলবার রাতেই টাঙ্গাইলে ফারুক হত্যার বিচারের দাবিতে মিছিল বের হয়। সেই মিছিল থেকে সংসদ সদস্যের কয়েকজন সমর্থককে লাঞ্ছিত করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারী রাতে ফারুক আহমেদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল থানায় মামলা করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানার পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তী সময়ে এর তদন্ত ভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়।
এদিকে রানা-মুক্তির টাঙ্গাইল ফিরে আসার খবরে শহরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। বিরাজ করছে উত্তেজনা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

রানা-মুক্তি শহরে : টাঙ্গাইলে পৌরমেয়রের বাসা থেকে ২৭ জন আটক

প্রকাশের সময় : ০৫:২৫:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০১৫

টাঙ্গাইল: বীর মুক্তিযোদ্ধা, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খানের (মুক্তি) বাসা থেকে ২৭ জনকে আটক করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ১৭ জুলাই শুক্রবার দুপুর থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল জেলা শহরের কলেজপাড়া এলাকায় সহিদুরের বাসায় তল্লাশি অভিযান চালায়। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আট মাস আত্মগোপনে থাকার পর সহিদুর রহমান খান বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইলে ফেরেন। গোয়েন্দা পুলিশ শুক্রবার দুপুরেই কলেজপাড়ায় তাঁর বাসভবন ঘেরাও করে অভিযানে নামে। বাসার নিচ তলায় তল্লাশির সময় ২৭ জনকে আটক করা হয়। টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মাহফীজুর রহমান আটকের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান (রানা) ও তাঁর ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খানকে প্রতিরোধের ডাক দিয়ে স্থানীয় লোকজন বৃহস্প্রতিবার শহরে লাঠিমিছিল ও সমাবেশ করে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার রাজা ও মোহাম্মদ আলী আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই হত্যাকান্ডে সংসদ সদস্য আমানুর রহমান রানা ও তাঁর তিন ভাই জড়িত বলে উল্লেখ করেন। অন্য দুজন হলেন ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান (কাকন) ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সানিয়াত খান (বাপ্পা)। ফারুক হত্যার পর থেকে আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপন করেন।
এদিকে গত ১২ জুলাই রোববার আমানুর ও সহিদুর হাইকোর্টে হাজির হয়ে ফারুক হত্যা মামলায় আগাম জামিনের আবেদন করেন। বিচারপতি ফরিদ আহম্মদ ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ শুনানি শেষে গত ১৪ জুলাই মঙ্গলবার আমানুর ও সহিদুরকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এ সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতেও পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরই তাঁরা টাঙ্গাইলে ফিরে আসছেন বলে প্রচার হয়। আমানুরের নির্বাচনী এলাকা ঘাটাইলসহ টাঙ্গাইল শহরে তাঁদের সমর্থকেরা প্রস্তুতি নিতে থাকেন তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে। মঙ্গলবার রাতেই টাঙ্গাইলে ফারুক হত্যার বিচারের দাবিতে মিছিল বের হয়। সেই মিছিল থেকে সংসদ সদস্যের কয়েকজন সমর্থককে লাঞ্ছিত করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারী রাতে ফারুক আহমেদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল থানায় মামলা করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানার পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তী সময়ে এর তদন্ত ভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়।
এদিকে রানা-মুক্তির টাঙ্গাইল ফিরে আসার খবরে শহরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। বিরাজ করছে উত্তেজনা।