নিউইয়র্ক ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রাজনৈতিক দলগুলোর ম্যানিফেষ্টোতে নদী-পানির কথা বলুন : আইএফসি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩৫:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১৭৭ বার পঠিত

বাংলাদেশ : বাংলাদেশের সরকার এবং সকল রাজনৈতিক দলকে তাদের রাজনৈতিক ম্যানিফেষ্টোতে নদী ও পানি বিষয়ক বক্তব্য অন্তর্ভূক্ত করার আহবান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি)। আইএফসি’র মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে এ আহবান জানান। শনিবার (২৮ জানুয়ারী) ঢাকা রিপর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় টিপু সুলতান বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের উচিত গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজসহ নতুন গঙ্গা চুক্তি নিয়ে কাজ করা, কারণ ৩০-বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তি আগামী ২০২৬ সালে তামাদি হয়ে যাবে। এখনি নদী-পানি নিয়ে কথা বলার প্রকৃষ্ট সময় কারণ কিছু দল গণতন্ত্রের জন্য অন্দোলন করছে এবং অন্য কিছু দল সাধারণ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে।

সৈয়দ টিপু সুলতান বলেন, আমরা সকল প্রতিবেশির সাথে সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চাই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মিষ্টি পানির উৎস ৫৪টি যৌথ নদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছে এবং এদেশ সেগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ৩০-বছর মেয়াদি গঙ্গা পানি চুক্তির শর্ত অনুসারে পানি পাওয়া যায়নি, অন্যদিকে বিগত দুই দশক ধরে তিস্তার শুকনো মওসুমের পুরো প্রবাহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিম ও উত্তর অঞ্চলে মরুকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পানির লবনাক্ততা সমূদ্র-রেখা থেকে ২০০ মাইল উজানে উঠে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি, মৎস, শিল্প এবং মিঠাপানির গাছ-গাছালি। বিপন্ন হয়েছে ইউনেস্কো ঘোষিত হেরিটেজ সাইট সুন্দরবন।

যৌথ নদীগুলোর উপর ড্যাম ও ব্যারেজ নির্মানের ফলে একদিকে বাংলাদেশের প্লাবনভূমি স্বাভাবিক বন্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জলাভূমির জীববৈচিত্র; অন্যদিকে প্রায়ই প্রলয়ংকারি বন্যা আঘাত হানছে কৃষি, অর্থনীতি ও মানুষের জীবন জীবিকার উপর। গত বছর সিলেট অঞ্চলের জনগন ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বন্যার শিকার হয়। তিস্তা অব্বাহিকার মানুষ চার-দফা বন্যা ও নদী-ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এদিকে নয় বছর পর ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বাংলাদেশের নদী কুশয়ারার হিস্যা নিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে উজানে পানি প্রত্যাহারের চুক্তি হয়। কিন্তু বহুল প্রচারিত তিস্তাচুক্তি ধরাছোঁইয়ার বাইরে থেকে যায়। হাজার বছরধরে নদীসৃষ্ট বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশের অস্তিত্ব যৌথ নদীগুলোর প্রবাহ বঞ্চিত হবার কারণে বিপন্ন। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত জনগনের এই বাঁচা-মরার প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা।

সৈয়দ টিপু সুলতান বাংলাদেশের তিস্তা অববাহিকায় বসবাসরত ২কোটি মানুষকে বন্যা-নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য প্রনীত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইএফসির দাবির কথা পুনরোল্লেখ করেন। মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইএফসি’র সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার এবং সহকারি মহাসচিব মোহাম্মাদ হোসেন খান, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতা কাজি আযম, কবি আবু সাঈদ শাহীন আইএফসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা এবং সাবেক নেতা কাজী মোস্তফা কামাল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

রাজনৈতিক দলগুলোর ম্যানিফেষ্টোতে নদী-পানির কথা বলুন : আইএফসি

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৫:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩

বাংলাদেশ : বাংলাদেশের সরকার এবং সকল রাজনৈতিক দলকে তাদের রাজনৈতিক ম্যানিফেষ্টোতে নদী ও পানি বিষয়ক বক্তব্য অন্তর্ভূক্ত করার আহবান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি)। আইএফসি’র মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে এ আহবান জানান। শনিবার (২৮ জানুয়ারী) ঢাকা রিপর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় টিপু সুলতান বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের উচিত গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজসহ নতুন গঙ্গা চুক্তি নিয়ে কাজ করা, কারণ ৩০-বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তি আগামী ২০২৬ সালে তামাদি হয়ে যাবে। এখনি নদী-পানি নিয়ে কথা বলার প্রকৃষ্ট সময় কারণ কিছু দল গণতন্ত্রের জন্য অন্দোলন করছে এবং অন্য কিছু দল সাধারণ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে।

সৈয়দ টিপু সুলতান বলেন, আমরা সকল প্রতিবেশির সাথে সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চাই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মিষ্টি পানির উৎস ৫৪টি যৌথ নদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছে এবং এদেশ সেগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ৩০-বছর মেয়াদি গঙ্গা পানি চুক্তির শর্ত অনুসারে পানি পাওয়া যায়নি, অন্যদিকে বিগত দুই দশক ধরে তিস্তার শুকনো মওসুমের পুরো প্রবাহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিম ও উত্তর অঞ্চলে মরুকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পানির লবনাক্ততা সমূদ্র-রেখা থেকে ২০০ মাইল উজানে উঠে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি, মৎস, শিল্প এবং মিঠাপানির গাছ-গাছালি। বিপন্ন হয়েছে ইউনেস্কো ঘোষিত হেরিটেজ সাইট সুন্দরবন।

যৌথ নদীগুলোর উপর ড্যাম ও ব্যারেজ নির্মানের ফলে একদিকে বাংলাদেশের প্লাবনভূমি স্বাভাবিক বন্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জলাভূমির জীববৈচিত্র; অন্যদিকে প্রায়ই প্রলয়ংকারি বন্যা আঘাত হানছে কৃষি, অর্থনীতি ও মানুষের জীবন জীবিকার উপর। গত বছর সিলেট অঞ্চলের জনগন ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বন্যার শিকার হয়। তিস্তা অব্বাহিকার মানুষ চার-দফা বন্যা ও নদী-ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এদিকে নয় বছর পর ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বাংলাদেশের নদী কুশয়ারার হিস্যা নিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে উজানে পানি প্রত্যাহারের চুক্তি হয়। কিন্তু বহুল প্রচারিত তিস্তাচুক্তি ধরাছোঁইয়ার বাইরে থেকে যায়। হাজার বছরধরে নদীসৃষ্ট বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশের অস্তিত্ব যৌথ নদীগুলোর প্রবাহ বঞ্চিত হবার কারণে বিপন্ন। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত জনগনের এই বাঁচা-মরার প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা।

সৈয়দ টিপু সুলতান বাংলাদেশের তিস্তা অববাহিকায় বসবাসরত ২কোটি মানুষকে বন্যা-নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য প্রনীত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইএফসির দাবির কথা পুনরোল্লেখ করেন। মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইএফসি’র সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার এবং সহকারি মহাসচিব মোহাম্মাদ হোসেন খান, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতা কাজি আযম, কবি আবু সাঈদ শাহীন আইএফসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা এবং সাবেক নেতা কাজী মোস্তফা কামাল।