নিউইয়র্ক ০১:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউজ পোর্টালের র‌্যাংকিং নিয়ে তোলপাড়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:২২:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৫১ বার পঠিত

ওয়েবসাইটের গ্লোবাল র‌্যাংকিং নির্ধারণী টুল ‘অ্যালেক্সা ডটকম’বন্ধ হয়ে গেছে গত বছরের ৩০ এপ্রিল। কনটেন্ট রিসার্চ, অ্যানালাইসিস, কি-ওয়ার্ড খুঁজে বের করা ও অন্যান্য কাজে ২৫ বছর ধরে সহায়তা করে আসছিল এই টুল। অ্যামাজনের এই সার্ভিসের কোনো কোনো বিষয় নিয়ে আপত্তি থাকলেও গ্রহণযোগ্যতা ছিল। কিন্তু ১৭ জানুয়ারি ‘মিডিয়া সার্ভে’ নামে কথিত একটি জরিপ সংস্থা বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়াগুলোর র‌্যাংকিং প্রকাশ করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে জরিপ করেছে সেটি উল্লেখ করেনি। তাদের গবেষণার ভিত্তি কী, সেটিও উল্লেখ নেই।

নিউজ পোর্টালের মনগড়া র‌্যাংকিং প্রকাশ করায় নিয়ে বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়েছে। তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছ থেকে ডাটা নিয়ে এবং কোনো ধরনের রিসার্চ ম্যাথডোলজি প্রকাশ না করেই এসব প্রতিষ্ঠান র‌্যাংকিংয়ের তালিকা প্রকাশ করছে। এতে পাঠক ও বিজ্ঞাপনদাতাদের মধ্যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। রিপোর্টটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এর রিপোর্ট দেখে বেশিরভাগ অনলাইন গণমাধ্যমকর্মী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

মিডিয়া সার্ভে তাদের ওয়েবসাইটে যোগাযোগের যে নম্বর দিয়েছে সেটিও সঠিক নম্বর নয়। বাংলাদেশের অনলাইন গণমাধ্যমের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা জরিপকারী প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সিমিলার ওয়েব নামে মার্কিন একটি প্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইটগুলোর র‌্যাংক করছে। তাদের দাবি, তারা ওয়েবসাইটগুলোর ফেসবুক পেইজ ও গুগল অ্যানালাইটিকস থেকে ডাটা নিয়ে থাকে। সিমিলার ওয়েব ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সবশেষ র্যাং কিং প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নিউজসাইটগুলোর মধ্যে প্রথম আলো ১ নম্বরে, যুগান্তর দুই নম্বরে, কালের কণ্ঠ তিন নম্বরে, বিডিনিউজ ৪ নম্বরে এবং জাগো নিউজ ৫ নম্বরে। এই তিন মাসে ভিজিটরের দিক থেকেও একই ক্রমে আছে উল্লেখিত ওয়েবসাইটগুলো। কথিত জরিপকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়া সার্ভের দাবি, তারা সিমিলার ওয়েবের ডাটা নিয়ে ডিসেম্বরের র‌্যাংকিংটি প্রকাশ করেছে। কিন্তু সিমিলার ওয়েব যেখান থেকে ডাটা নেয় তথা গুগল অ্যানালাইটিকসের ডিসেম্বরের ডাটা ও মিডিয়া সার্ভের ডাটার মধ্যে কোনো মিল নেই। এমনকি সিমিলার ওয়েবের ডাটার সঙ্গেও মিডিয়া সার্ভের তথ্যে বেশ ফারাক রয়েছে।

মিডিয়া সার্ভের জরিপ যে ভিত্তিহীন সেটি বেরিয়ে এসেছে এএফপির বাংলাদেশ ফ্যাক্ট চেক এডিটর কাদরুদ্দিন শিশিরের একটি পোস্টে। শনিবার তিনি নিজের ফেসবুক পেইজে লিখেছেন,mediasurvey.org ওয়েবসাইটটির মজার দিক হলো, এটি একটি ‘ভুয়া ওয়েবসাইট’ এর প্রায় সব ক্রাইটেরিয়াই ফুলফিল করে! ওয়েবসাইটে about-us নামে একটি ট্যাব আছে যেখানে তাদের কোনো পরিচয় নেই। আছে লাতিন ভাষায় কিছু টেক্সট যার সঙ্গে মিডিয়া/সার্ভে ইত্যাদি বিষয়ের কোনো সংযোগ নেই। এই টেক্সট গুগলে সার্চ করলে বহু ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়; যা থেকে ধারণা যায় ওয়েবসাইট ডিজাইনাররা টেক্সটি কোনো ওয়েবসাইট তৈরির সময় ‘স্যাম্পল টেক্সট’ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।

মিডিয়া সার্ভের ওয়েবসাইটে ‘Our Team’ বলে যাদের নাম ও ছবি দেওয়া আছে সেগুলোও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ডিজাইনাররা ‘স্যাম্পল’ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। ছবিগুলো মডেলদের। ভিয়েতনামিজ এই ওয়েবসাইটটিতেও তাদের ‘এবাউট আস’-এ একই মডেলদের নাম ও ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। mediasurvey.org-এর Contact ট্যাবটিতেও ভুয়া তথ্য দেওয়া। মূলত এখানেও ওয়েবসাইট পরিচালনাকারীদের প্রকৃত নাম/ঠিকানা/যোগাযোগের উপায় না দিয়ে দেয়া হয়েছে ‘Email Address: info@example.comexample@yourmail.com; Location: 4462 Settlers Lane, New York, NY 10007; Phone: 123-456-7890+981 547 82 12’- যা মূলত আরেকটি ‘স্যাম্পল টেক্সট’।

কাদরুদ্দিন শিশির আরও লেখেন, যে ওয়েবসাইটের স্লোগান হচ্ছে ‘All Media Survey in Single Platform’ এবং যারা একটি দেশের সংবাদমাধ্যমের নানান দিক নিয়ে ‘জরিপ’ এবং ‘অ্যানালাইসিস’ প্রকাশ করতে চান তাদের ওয়েবসাইটের পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের নাম-পরিচয়, যোগাযোগ, উদ্দেশ্য, অর্থায়ন এবং তাদের কার্যক্রম সংক্রান্ত অন্য যাবতীয় তথ্য যার মধ্যে কাজের পদ্ধতিও (ম্যাথডলোজি) রয়েছে- এসব প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকলে সেই ওয়েবসাইটকে ‘ভুয়া ওয়েবসাইট’ হিসেবে গণ্য করাই শ্রেয়। সূত্র : ভোরের কাগজ

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নিউজ পোর্টালের র‌্যাংকিং নিয়ে তোলপাড়

প্রকাশের সময় : ০৫:২২:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৩

ওয়েবসাইটের গ্লোবাল র‌্যাংকিং নির্ধারণী টুল ‘অ্যালেক্সা ডটকম’বন্ধ হয়ে গেছে গত বছরের ৩০ এপ্রিল। কনটেন্ট রিসার্চ, অ্যানালাইসিস, কি-ওয়ার্ড খুঁজে বের করা ও অন্যান্য কাজে ২৫ বছর ধরে সহায়তা করে আসছিল এই টুল। অ্যামাজনের এই সার্ভিসের কোনো কোনো বিষয় নিয়ে আপত্তি থাকলেও গ্রহণযোগ্যতা ছিল। কিন্তু ১৭ জানুয়ারি ‘মিডিয়া সার্ভে’ নামে কথিত একটি জরিপ সংস্থা বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়াগুলোর র‌্যাংকিং প্রকাশ করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে জরিপ করেছে সেটি উল্লেখ করেনি। তাদের গবেষণার ভিত্তি কী, সেটিও উল্লেখ নেই।

নিউজ পোর্টালের মনগড়া র‌্যাংকিং প্রকাশ করায় নিয়ে বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়েছে। তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছ থেকে ডাটা নিয়ে এবং কোনো ধরনের রিসার্চ ম্যাথডোলজি প্রকাশ না করেই এসব প্রতিষ্ঠান র‌্যাংকিংয়ের তালিকা প্রকাশ করছে। এতে পাঠক ও বিজ্ঞাপনদাতাদের মধ্যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। রিপোর্টটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এর রিপোর্ট দেখে বেশিরভাগ অনলাইন গণমাধ্যমকর্মী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

মিডিয়া সার্ভে তাদের ওয়েবসাইটে যোগাযোগের যে নম্বর দিয়েছে সেটিও সঠিক নম্বর নয়। বাংলাদেশের অনলাইন গণমাধ্যমের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা জরিপকারী প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সিমিলার ওয়েব নামে মার্কিন একটি প্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইটগুলোর র‌্যাংক করছে। তাদের দাবি, তারা ওয়েবসাইটগুলোর ফেসবুক পেইজ ও গুগল অ্যানালাইটিকস থেকে ডাটা নিয়ে থাকে। সিমিলার ওয়েব ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সবশেষ র্যাং কিং প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নিউজসাইটগুলোর মধ্যে প্রথম আলো ১ নম্বরে, যুগান্তর দুই নম্বরে, কালের কণ্ঠ তিন নম্বরে, বিডিনিউজ ৪ নম্বরে এবং জাগো নিউজ ৫ নম্বরে। এই তিন মাসে ভিজিটরের দিক থেকেও একই ক্রমে আছে উল্লেখিত ওয়েবসাইটগুলো। কথিত জরিপকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়া সার্ভের দাবি, তারা সিমিলার ওয়েবের ডাটা নিয়ে ডিসেম্বরের র‌্যাংকিংটি প্রকাশ করেছে। কিন্তু সিমিলার ওয়েব যেখান থেকে ডাটা নেয় তথা গুগল অ্যানালাইটিকসের ডিসেম্বরের ডাটা ও মিডিয়া সার্ভের ডাটার মধ্যে কোনো মিল নেই। এমনকি সিমিলার ওয়েবের ডাটার সঙ্গেও মিডিয়া সার্ভের তথ্যে বেশ ফারাক রয়েছে।

মিডিয়া সার্ভের জরিপ যে ভিত্তিহীন সেটি বেরিয়ে এসেছে এএফপির বাংলাদেশ ফ্যাক্ট চেক এডিটর কাদরুদ্দিন শিশিরের একটি পোস্টে। শনিবার তিনি নিজের ফেসবুক পেইজে লিখেছেন,mediasurvey.org ওয়েবসাইটটির মজার দিক হলো, এটি একটি ‘ভুয়া ওয়েবসাইট’ এর প্রায় সব ক্রাইটেরিয়াই ফুলফিল করে! ওয়েবসাইটে about-us নামে একটি ট্যাব আছে যেখানে তাদের কোনো পরিচয় নেই। আছে লাতিন ভাষায় কিছু টেক্সট যার সঙ্গে মিডিয়া/সার্ভে ইত্যাদি বিষয়ের কোনো সংযোগ নেই। এই টেক্সট গুগলে সার্চ করলে বহু ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়; যা থেকে ধারণা যায় ওয়েবসাইট ডিজাইনাররা টেক্সটি কোনো ওয়েবসাইট তৈরির সময় ‘স্যাম্পল টেক্সট’ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।

মিডিয়া সার্ভের ওয়েবসাইটে ‘Our Team’ বলে যাদের নাম ও ছবি দেওয়া আছে সেগুলোও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ডিজাইনাররা ‘স্যাম্পল’ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। ছবিগুলো মডেলদের। ভিয়েতনামিজ এই ওয়েবসাইটটিতেও তাদের ‘এবাউট আস’-এ একই মডেলদের নাম ও ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। mediasurvey.org-এর Contact ট্যাবটিতেও ভুয়া তথ্য দেওয়া। মূলত এখানেও ওয়েবসাইট পরিচালনাকারীদের প্রকৃত নাম/ঠিকানা/যোগাযোগের উপায় না দিয়ে দেয়া হয়েছে ‘Email Address: info@example.comexample@yourmail.com; Location: 4462 Settlers Lane, New York, NY 10007; Phone: 123-456-7890+981 547 82 12’- যা মূলত আরেকটি ‘স্যাম্পল টেক্সট’।

কাদরুদ্দিন শিশির আরও লেখেন, যে ওয়েবসাইটের স্লোগান হচ্ছে ‘All Media Survey in Single Platform’ এবং যারা একটি দেশের সংবাদমাধ্যমের নানান দিক নিয়ে ‘জরিপ’ এবং ‘অ্যানালাইসিস’ প্রকাশ করতে চান তাদের ওয়েবসাইটের পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের নাম-পরিচয়, যোগাযোগ, উদ্দেশ্য, অর্থায়ন এবং তাদের কার্যক্রম সংক্রান্ত অন্য যাবতীয় তথ্য যার মধ্যে কাজের পদ্ধতিও (ম্যাথডলোজি) রয়েছে- এসব প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকলে সেই ওয়েবসাইটকে ‘ভুয়া ওয়েবসাইট’ হিসেবে গণ্য করাই শ্রেয়। সূত্র : ভোরের কাগজ