লকডাউনে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে
 
																
								
							
                                - প্রকাশের সময় : ০৬:৪৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩
- / ১২৯ বার পঠিত
কভিডের কারণে দীর্ঘ মেয়াদে লকডাউনের প্রয়োজন ছিল না। এতে যে পরিমাণ আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে লাভ তেমন আসেনি। পাশাপাশি কভিডের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ায় অন্যান্য রোগেও বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু সেদিকে নজর ছিল না গণমাধ্যমসহ নীতিনির্ধারকদের।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক সেমিনারে এসব মন্তব্য করেন নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আননিস চৌধুরী। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী ইকবাল।
সেমিনারে আননিস চৌধুরী বলেন, কভিডে এত কিছু করার দরকার ছিল না। তাহলে প্রাণ, জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ সব কিছুই বাঁচত। প্রথম দিকে স্বল্প মেয়াদে লকডাউন ঠিক ছিল। তখন বোঝা যাচ্ছিল না যে কোথা থেকে কী হচ্ছে। কিন্তু যখন সব কিছু পরিষ্কার হলো তখন কেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লকডাউন দিয়েছিল? এর ফলে সব কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। লকডাউন যে জীবন রক্ষা করতে পারেনি তার উদাহরণ হচ্ছে ইউরোপীয় ২৪টি দেশ। সেখানে কঠোর লকডাউন দিয়েও মৃত্যু ঠেকানো যায়নি।
মূল প্রবন্ধে আরো বলা হয়েছে, ১৯১৩ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বে স্প্যানিশ ফ্লুতে মারা গিয়েছিল ২১৯.৪৪ মিলিয়ন মানুষ। আর ২০১৯-২০ সালে কভিডে মারা গেছে ৬.৩১ মিলিয়ন মানুষ। তাহলে দেখা যাচ্ছে, স্প্যানিশ ফ্লুর চেয়ে কভিড কোনোভাবেই বড় কোনো দুর্যোগ ছিল না। তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল যে স্প্যানিশ ফ্লুতে সব বয়সের মানুষই মারা গিয়েছিল আর কভিডে বয়স্ক মানুষই বেশি মারা গেছে। এক হিসাবে দেখা যায়, ১৯৫৭ সালে এশিয়ান ফ্লুতে মারা যায় ৪.৮১ মিলিয়ন মানুষ। ১৯৬৮ সালে হংকং ফ্লুতে মারা যায় ২.১৮ মিলিয়ন মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়িয়েছে কভিড-১৯।
কাজী ইকবাল বলেন, ‘সেমিনারের আলোচনা থেকে যা বোঝা গেল তা হচ্ছে, করোনা মোকাবেলায় নেওয়া উদ্যোগগুলোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক চিন্তা ও দেখাদেখির বিষয়টিও কাজ করেছে। এর অর্থ হলো ওই দেশ লকডাউন করছে আমরাও করব। রাজনৈতিক চিন্তা হলো সরকার জনগণের জন্য কিছু একটা করছে। এটা দৃশ্যমান কিছু, যাতে মানুষ বুঝতে পারে যে সরকার আমাদের পাশে আছে। তবে যদি নির্ধারক পর্যায়ে তরুণরা থাকত তাহলে হয়তো এত লকডাউন হতো না। তুলনামূলক বয়স্করাই নীতিনির্ধারণ করেন বলেই লকডাউনের মতো কর্মসূচি তাঁদের পছন্দ ছিল। তবে করোনার কারণে দেখা গেছে, যারা তরুণ ও কর্মজীবী মানুষ, তারা বেশি মৃত্যুর মুখে পড়েনি। তুলনামূলক বয়স্করাই বেশি মারা গেছে।’
 
																			





















