নিউইয়র্ক ১০:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১৬২, বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন পুরো এলাকা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৪২:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২
  • / ২৭ বার পঠিত

ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, সরকারি হিসাবে এই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৬২। আর আঞ্চলিক গভর্নর রিদওয়ান কামিল বলেছেন, নিহতের সংখ্যা ১৬২। তবে কোনো সংখ্যাই স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।

গতকাল সোমবার ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সময় দুপুরে পশ্চিম জাভার সিয়াঞ্জুর শহরে এই ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী এই ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। সিয়াঞ্জুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের রাজধানী শহর জাকার্তায়ও কম্পন অনুভূত হয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শত শত আহত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচানোর জন্য উদ্ধারকারীরা রাতভর কাজ করেছেন। যে এলাকায় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, সেই এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এবং ভূমিধসের প্রবণতা রয়েছে। অনেক এলাকায় দুর্বলভাবে নির্মিত ঘরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

বিবিসি বলেছে, এখন পর্যন্ত নিহতের সঠিক সংখ্যা স্পষ্ট নয়। ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সি (বিএনপিবি) বলেছে, সরকারি হিসাবমতে তাদের কাছে নিহতের সংখ্যা ৬২। তবে পশ্চিম জাভার আঞ্চলিক গভর্নর রিদওয়ান কামিলের দেওয়া আরেকটি পরিসংখ্যান বলছে, নিহতের সংখ্যা ১৬২। বিবিসির পক্ষে কোনো সংখ্যার সত্যতাই যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় কামিল বলেছেন, ভূমিকম্পে প্রায় ৩৬২ জন আহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছিল। বেশির ভাগ মানুষের হাড়গোড় ভেঙে গেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

রিদওয়ান কামিল আরও বলেছেন, এই ভূমিকম্পে ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিবি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০টিরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সিয়াঞ্জুর শহরের প্রশাসনের প্রধান হারমান সুহেরম্যান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গ্রামের দিকে অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। অ্যাম্বুলেন্সগুলো গ্রাম থেকে শহরের হাসপাতালগুলোতে আসছে।

পশ্চিম জাভার গভর্নর বলেছেন, ভূমিকম্পের পর স্থানীয় হাসপাতালটি কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল। তখন হাসপাতালের বাইরে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে তিনি এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, এ এলাকায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধার করতে তিন দিন সময় লাগতে পারে।

ইন্দোনেশিয়া একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে বলেছে, এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিম সুমাত্রা প্রদেশে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পে ২৫ জন নিহত ও ৪৬০ জন আহত হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে পশ্চিম সুলাওয়েসি প্রদেশেও ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পে শতাধিক নিহত হয়েছিল এবং ৬ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছিল।

 

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১৬২, বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন পুরো এলাকা

প্রকাশের সময় : ০৫:৪২:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২

ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, সরকারি হিসাবে এই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৬২। আর আঞ্চলিক গভর্নর রিদওয়ান কামিল বলেছেন, নিহতের সংখ্যা ১৬২। তবে কোনো সংখ্যাই স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।

গতকাল সোমবার ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সময় দুপুরে পশ্চিম জাভার সিয়াঞ্জুর শহরে এই ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী এই ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। সিয়াঞ্জুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের রাজধানী শহর জাকার্তায়ও কম্পন অনুভূত হয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শত শত আহত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচানোর জন্য উদ্ধারকারীরা রাতভর কাজ করেছেন। যে এলাকায় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, সেই এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এবং ভূমিধসের প্রবণতা রয়েছে। অনেক এলাকায় দুর্বলভাবে নির্মিত ঘরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

বিবিসি বলেছে, এখন পর্যন্ত নিহতের সঠিক সংখ্যা স্পষ্ট নয়। ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সি (বিএনপিবি) বলেছে, সরকারি হিসাবমতে তাদের কাছে নিহতের সংখ্যা ৬২। তবে পশ্চিম জাভার আঞ্চলিক গভর্নর রিদওয়ান কামিলের দেওয়া আরেকটি পরিসংখ্যান বলছে, নিহতের সংখ্যা ১৬২। বিবিসির পক্ষে কোনো সংখ্যার সত্যতাই যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় কামিল বলেছেন, ভূমিকম্পে প্রায় ৩৬২ জন আহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছিল। বেশির ভাগ মানুষের হাড়গোড় ভেঙে গেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

রিদওয়ান কামিল আরও বলেছেন, এই ভূমিকম্পে ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিবি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০টিরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সিয়াঞ্জুর শহরের প্রশাসনের প্রধান হারমান সুহেরম্যান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গ্রামের দিকে অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। অ্যাম্বুলেন্সগুলো গ্রাম থেকে শহরের হাসপাতালগুলোতে আসছে।

পশ্চিম জাভার গভর্নর বলেছেন, ভূমিকম্পের পর স্থানীয় হাসপাতালটি কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল। তখন হাসপাতালের বাইরে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে তিনি এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, এ এলাকায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধার করতে তিন দিন সময় লাগতে পারে।

ইন্দোনেশিয়া একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে বলেছে, এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিম সুমাত্রা প্রদেশে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পে ২৫ জন নিহত ও ৪৬০ জন আহত হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে পশ্চিম সুলাওয়েসি প্রদেশেও ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পে শতাধিক নিহত হয়েছিল এবং ৬ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছিল।