ট্রাম্পকে নিয়ে তদন্তে বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগ দিল যুক্তরাষ্ট্র

- প্রকাশের সময় : ০৫:৩৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
- / ৩৮ বার পঠিত

FILE PHOTO: U.S. President Donald Trump departs on travel to the Camp David presidential retreat from the South Lawn at the White House in Washington, U.S., May 1, 2020. REUTERS/Carlos Barria/File Photo
সংবেদনশীল নথি হস্তান্তর এবং ২০২০ সালের নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টাসহ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের তদন্ত দেখভালের জন্য জ্যাক স্মিথকে বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগ দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড।
রিপালিকান ট্রাম্প ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার ঘোষণা দেওয়ার তিন দিনের মাথায় শুক্রবার গারল্যান্ডের এ ঘোষণা এল। বর্তমান ও সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত করায় ‘জনস্বার্থে’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল মামলার তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রায়ই বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগ করা হয়। এই আইনজীবীরা তদন্তে বিচার বিভাগের কাছ থেকে কিছুটা স্বাধীনতা পান।
নতুন নিয়োগ পাওয়া জ্যাক স্মিথ হেগের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলির পদ থেকে অবসরে যান। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমার নজরদারিতে তদন্তের গতি থামবে না। প্রকৃত ঘটনা ও আইন অনুসরণ করে স্বাধীন বিচার প্রয়োগের মাধ্যমে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দ্রুত তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
গারল্যান্ড বলেন, গত বছর হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার পরও ট্রাম্পের সরকারি নথি হস্তগত করা এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের পর শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের পথে বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টার বিষয়ে তদন্তের তদারক করবেন স্মিথ। ‘একজন বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।’
বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগকে ‘কারচুপির চুক্তি’ আখ্যা দিয়েছেন ট্রাম্প। ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো এস্টেটে এক অনুষ্ঠানে সমর্থকদের তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার “ভয়ংকর এই অপব্যবহার” বহু বছর আগে শুরু হওয়া “ডাইনি শিকার” সিরিজের সর্বশেষ পর্ব।’
বিশেষ কৌঁসুলি নিয়ে দিনের একমাত্র অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তবে স্মিথকে নিয়োগের সিদ্ধান্তের সঙ্গে হোয়াইট হাউস জড়িত নয় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান।
দলনিরপেক্ষ আইন পেশাজীবী স্মিথ কসোভোয় যুদ্ধাপরাধের বিচারের দায়িত্বে ছিলেন, হেগের বিশেষ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেছেন। এর আগে তিনি বিচার বিভাগের ‘পাবলিক ইন্টিগ্রিটি’ বিভাগের প্রধান ছিলেন। স্মিথ নিউইয়র্কে ফেডারেল ও রাজ্য কৌঁসুলি হিসাবেও কাজ করেন।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে ট্রাম্পের আচরণ নিয়ে তদন্তের জন্য বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগের দ্বিতীয় ঘটনা এটি। এর আগে ২০১৭ সালে সাবেক এফবিআই পরিচালক রবার্ট মুলারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের ট্রাম্পের প্রচারশিবির ও রাশিয়ার মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে তিনি তদন্ত করেন। কিন্তু ‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ আনার জন্য তখন পর্যাপ্ত প্রমাণ মেলেনি।
এর আগে গত ৮ অগাস্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে ট্রাম্পের মার-এ-লাগোর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে অতি গোপনীয় চিহ্নিতসহ হাজার হাজার সরকারি নথি জব্দ করে এফবিআই। তখন ট্রাম্পের পক্ষ থেকে তদন্তে সম্ভাব্য বাধার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হয়। অন্যদিকে নথি তল্লাশি পেছাতে এবং কিছু রেকর্ড তদন্তকারীদের কাছ থেকে দূরে রাখার প্রয়াসে ট্রাম্প দেওয়ানি মামলা করেন।
অপর তদন্তটি ছিল ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বানচালের প্রয়াসে ট্রাম্পের মিত্রদের ‘ব্যর্থ প্রচেষ্টা’ নিয়ে। এই মামলায় গ্র্যান্ড জুরিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে, হোয়াইট হাউজের সাবেক অ্যাটর্নিদের ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের সাক্ষ্য দিতে সমন জারি করেছেন কৌঁসুলিরা।
বিশেষ কৌঁসুলির ওপর গারল্যান্ডের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব থাকলেও স্মিথের নিয়োগে যে রাজনৈতিক দূরত্ব আছে, তা দুই তদন্তে জনগণের আস্থা বাড়াতে পারে। স্মিথের পাশাপাশি নিয়মিত কৌঁসুলিরাও তদন্তের কাজ চালিয়ে যাবেন। বাস্তবে স্মিথ দৈনন্দিন কাজ নয়, সামগ্রিক কাজের প্রক্রিয়া দেখভাল করবেন।
সম্প্রতি বাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হাঁটুতে চোট পান স্মিথ, তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাই তিনি সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেননি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইয়র্ক রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের একটি দেওয়ানি মামলাও আছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাঁর তিন প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের বিরুদ্ধে আবাসন ব্যবসাসংশ্লিষ্ট জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।