নিউইয়র্ক ০৮:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আফগানিস্তানে পূর্ণ শরিয়া কায়েমের নির্দেশ দিয়েছে তালেবান

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:১৯:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২
  • / ২৫ বার পঠিত

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। প্রথমদিকে পশ্চিমাদের নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও আস্তে আস্তে সেই পুরোনো তালেবানকে দেখতে পাচ্ছে বিশ্ব। নারীদের পড়াশুনা ও কাজের অধিকার হরণ করা হয়েছিল ক্ষমতা দখলের পরপরই। এবার দেশে পূর্ণ শরিয়া কায়েমের নির্দেশ দিয়েছে সংগঠনটি।

সিএনএন জানিয়েছে, বিচারকদের পূর্ণ শরিয়া আইন প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। ফলে এখন থেকে ডাকাতি, অপহরণ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধের শাস্তি ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী হবে দেশটিতে। শরিয়া আইনে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, পাথর নিক্ষেপ, চাবুক মারা এবং চোরদের হাতের কবজি কাটার বিধান রয়েছে। নব্বইয়ের দশকে ক্ষমতায় থাকাকালীন তালেবানরা এ ধরণের আইন কার্যকর করেছিল। তখন এ জন্য বিশ্বজুড়ে তালেবানের ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল।

অথচ গত বছর দ্বিতীয় দফা ক্ষমতা দখলের পর তারা আগের চেয়ে তুলনামূলক কম চরমপন্থা অবলম্বনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে গত এক বছরের বেশি শাসনামলে তালেবান দেশটিতে ব্যাপক দমন-পীড়ন চালিয়েছে। বিশেষ করে নারীর অধিকার কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে।

তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, বিচারকদের অবশ্যই শরিয়া আইন অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ রোববার এক টুইটে বলেন, এক দল বিচারকের সঙ্গে দেখা করার পর মোল্লা আখুন্দজাদা ‘বাধ্যতামূলক’ এ নির্দেশনা দিয়েছেন। চোর, অপহরণকারী এবং রাষ্ট্রদ্রোহীদের মামলার ফাইল সতর্কভাবে পর্যালোচনা করতে হবে।
সিএনএন বলছে, এই আইন কার্যকর করতে গেলে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি আবারও শুরু হতে পারে। এতে দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কাহেলদ আবু এল ফাদি নামের এক ইসলাম গবেষক সিএনএনকে জানিয়েছেন, শরিয়া আইন কীভাবে কার্যকর করা হবে তা নিয়ে বিতর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। শরিয়া অনেক বিস্তৃত একটি বিষয়। এল ফাদি বলেন, ১৪০০ বছরের ইসলামি ইতিহাসে তালেবানের মতো করে শরিয়া আইনের প্রয়োগ কমই দেখা গেছে। যে কেউ তালেবানের এই সংজ্ঞার মধ্যে না পড়লেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে।

তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের অবস্থা আগের থেকেও খারাপ হয়েছে। দেশটির অর্থনীতি পুরোপুরি ধসে পড়েছে। বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দেশটি। এরমধ্যে দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যে রয়েছে। ৪৩ শতাংশ আফগান দিনে এক বেলারও কম খেয়ে বেঁচে আছে। ৯০ শতাংশ আফগান শুধু খাদ্যের ব্যবস্থা করতেই দিন পার করছেন।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আফগানিস্তানে পূর্ণ শরিয়া কায়েমের নির্দেশ দিয়েছে তালেবান

প্রকাশের সময় : ০৫:১৯:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। প্রথমদিকে পশ্চিমাদের নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও আস্তে আস্তে সেই পুরোনো তালেবানকে দেখতে পাচ্ছে বিশ্ব। নারীদের পড়াশুনা ও কাজের অধিকার হরণ করা হয়েছিল ক্ষমতা দখলের পরপরই। এবার দেশে পূর্ণ শরিয়া কায়েমের নির্দেশ দিয়েছে সংগঠনটি।

সিএনএন জানিয়েছে, বিচারকদের পূর্ণ শরিয়া আইন প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। ফলে এখন থেকে ডাকাতি, অপহরণ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধের শাস্তি ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী হবে দেশটিতে। শরিয়া আইনে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, পাথর নিক্ষেপ, চাবুক মারা এবং চোরদের হাতের কবজি কাটার বিধান রয়েছে। নব্বইয়ের দশকে ক্ষমতায় থাকাকালীন তালেবানরা এ ধরণের আইন কার্যকর করেছিল। তখন এ জন্য বিশ্বজুড়ে তালেবানের ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল।

অথচ গত বছর দ্বিতীয় দফা ক্ষমতা দখলের পর তারা আগের চেয়ে তুলনামূলক কম চরমপন্থা অবলম্বনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে গত এক বছরের বেশি শাসনামলে তালেবান দেশটিতে ব্যাপক দমন-পীড়ন চালিয়েছে। বিশেষ করে নারীর অধিকার কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে।

তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, বিচারকদের অবশ্যই শরিয়া আইন অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ রোববার এক টুইটে বলেন, এক দল বিচারকের সঙ্গে দেখা করার পর মোল্লা আখুন্দজাদা ‘বাধ্যতামূলক’ এ নির্দেশনা দিয়েছেন। চোর, অপহরণকারী এবং রাষ্ট্রদ্রোহীদের মামলার ফাইল সতর্কভাবে পর্যালোচনা করতে হবে।
সিএনএন বলছে, এই আইন কার্যকর করতে গেলে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি আবারও শুরু হতে পারে। এতে দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কাহেলদ আবু এল ফাদি নামের এক ইসলাম গবেষক সিএনএনকে জানিয়েছেন, শরিয়া আইন কীভাবে কার্যকর করা হবে তা নিয়ে বিতর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। শরিয়া অনেক বিস্তৃত একটি বিষয়। এল ফাদি বলেন, ১৪০০ বছরের ইসলামি ইতিহাসে তালেবানের মতো করে শরিয়া আইনের প্রয়োগ কমই দেখা গেছে। যে কেউ তালেবানের এই সংজ্ঞার মধ্যে না পড়লেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে।

তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের অবস্থা আগের থেকেও খারাপ হয়েছে। দেশটির অর্থনীতি পুরোপুরি ধসে পড়েছে। বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দেশটি। এরমধ্যে দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যে রয়েছে। ৪৩ শতাংশ আফগান দিনে এক বেলারও কম খেয়ে বেঁচে আছে। ৯০ শতাংশ আফগান শুধু খাদ্যের ব্যবস্থা করতেই দিন পার করছেন।