প্রভাবশালী দেশের নেতারা অংশ না নেওয়ায় নানা প্রশ্ন

- প্রকাশের সময় : ১০:৫৮:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২
- / ৮০ বার পঠিত
মিসরে কপ২৭ সম্মেলনে বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় প্রভাবশালী দেশগুলোর উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্ব নেই। তাই রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের এই সমাবেশে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আলোচনায় কার্যকর দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে কিনা- এ প্রশ্ন উঠেছে। পর্যটননগরী শার্ম আল শেখে সোমবার আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকারপ্রধানদের সম্মেলনের পাশাপাশি গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে অনেক পার্শ্বসভা।
আশা করা হচ্ছে, এ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর মাত্রা নির্ধারণ এবং বৈশ্বিক বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয় পর্যালোচনা করে ইতিবাচক সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবেন। তবে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানবজাতি এগিয়ে যেতে পারবে কিনা- এ প্রশ্নই এখন বড় হয়ে উঠেছে।
দুই দিনের এই উচ্চ পর্যায়ের আয়োজনে ১০১ জন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের অংশগ্রহণের তালিকা ইউএনএফসিসি প্রকাশ করেছে। তবে প্রকাশিত তালিকাটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আলোচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ভারত, ব্রাজিল, মেক্সিকোসহ অনেক দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান আসেননি। তাঁদের ইচ্ছা বা দিকনির্দেশনার বিষয় তাঁরা জানাচ্ছেন না। ইউএনএফসিসির ১৯৪টি সদস্যের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউরোপীয় কমিশন, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়াসহ ১০১টি সদস্যের ‘জাতীয় বিবৃতি’ বৈশ্বিক বিবৃতি তৈরির জন্য কিংবা উচ্চাশা তৈরির জন্য যথেষ্ট নয়। আলোচনাকে প্রভাবিত করার জন্য কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যও তা যথেষ্ট নয়।
তবে ১৫ ও ১৬ নভেম্বর আবারও রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা তাঁদের জাতীয় বিবৃতি প্রদান করবেন বলে জানানো হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, ওই দুই দিন আর কোন কোন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এখানে এসে বিবৃতি প্রদান করেন। তাঁদের জাতীয় বিবৃতির বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করবে কপের দিকনির্দেশনা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। অনেকেই বলছেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর কোনো উচ্চাশা এই কপেও গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।
কপের দ্বিতীয় ধারা সিএমএ বা প্যারিস চুক্তির অনেক সভা আজ শুরু হচ্ছে, যার একটি বাদে সবক’টিই অনানুষ্ঠানিক আলোচনা। অনানুষ্ঠানিক আলোচনাগুলো হলো সূচনাপর্বের আলোচনা। এগুলো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে কখনও কখনও, এমনকি কয়েক বছরও লেগে যায়। সুতরাং প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নকে এবারের কপের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করা হলেও মনে হচ্ছে, শিগগির তা সূচিত হচ্ছে না। তবে কোনো অনানুষ্ঠানিক আলোচনাই গুরুত্বহীন নয়। বছরের পর বছর একই বিষয়ে ক্লান্তিকর বিরতিহীন চর্বিতচর্বণ জাতীয় আলোচনাগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে মরুতে বারিবিন্দুর মতো হারিয়ে গেলেও এগুলো কখনও কখনও প্রশান্তির মরূদ্যান তৈরি করে। তিন ধারার কপের জন্য প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি পরামর্শ ও চুক্তি বাস্তবায়নবিষয়ক সাবস্টা ও এসবিআইর অনানুষ্ঠানিক সভাগুলোও শুরু হচ্ছে।
‘সম্মিলিত আত্মহত্যা নাকি একসঙ্গে লড়াই’ বক্তব্য প্রদানকারী জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল আরও জানিয়েছেন, যুদ্ধে যত মানুষ বাস্তুচ্যুত হন, তার চেয়ে তিন গুণ মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। সূত্র : সমকাল