নোবেল পুরস্কারের জন্য যে ৩ বাঙালি মনোনয়ন পেয়েছিলেন

- প্রকাশের সময় : ০৬:০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ অক্টোবর ২০২২
- / ৫৭ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার, নোবেল পুরস্কার। ১৯০১ সাল থেকে ৫টি ক্যাটাগরিতে দেয়া শুরু হয় নোবেল পুরস্কার। তবে ১৯৬৮ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার ৩০০ বছর পূর্তিতে নোবেল কমিটিকে অর্থনীতিতে পুরস্কার দেবার জন্য অনুদান দেবার ঘোষণা দেয়। এরপর ১৯৬৯ সাল থেকে অর্থনীতিতে দেয়া হয় এই পুরস্কার। তবে, আলফ্রেড নোবেল পুরস্কার দেবার জন্য যে উইল করে গিয়েছিলেন সেখানে ছিলো অর্থনীতিতে পুরস্কার দেবার বিষয়টি। এজন্য এই পুরস্কারটির আনুষ্ঠানিক নাম, আলফ্রেড নোবেল স্মরণে অর্থনীতিতে সোয়ারিভেজ রিকসব্যাংক পুরস্কার।
এখন পর্যন্ত যারা নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইউরোপ বা আমেরিকার গবেষকরা। তবে বাঙালিরাও পেয়েছেন সম্মানজনক এই পুরস্কার। এখন পর্যন্ত ৪ জন বাঙালি পেয়েছেন এই পুরস্কার। এরমধ্যে ১৯১৩ সালে ব্রিটিশ ভারতে প্রথম বাঙালি হিসেবে সাহিত্য নোবেল পান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেবছর সাহিত্যে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ৩২ জন। আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনোনয়ন ছিলো ১৭ নম্বরে। তাকে মনোনয়ন দেন রয়েল সোসাইটি অব লিটারেচারের সদস্য থমাস স্ট্রুজ এস মোর।
১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে নোবেল পান অর্মত্য সেন। ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পান মোহাম্মদ ইউনুস। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি বাঙালি যিনি সম্মানজনক এই পুরস্কার অর্জন করেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পান ভারতীয় বাঙালি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাদের কে বা কারা মনোনয়ন দিয়েছিলেন তা এখনও জানা যায়নি। কারণ মনোনয়ন পাবার ৫০ বছর পর তার সেই তথ্য জানা যাবে।
তবে আরও বেশকয়েকজন বাঙালি যারা নোবেল পুরস্কার পাননি, তবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। আর এই তথ্য পাওয়া গেছে নোবেল আর্কাইভ থেকে। যদিও মনোনয়ন পাবার বছর থেকে পরবর্তী ৫০ বছরের আগে কারা কোন বিভাগে নমিনেশন পেয়েছেন বা কে বা কারা তাদের মনোনয়ন দিয়েছেন তা জানা যায় না। তবে যিনি যে বছর মনোনয়ন পেয়েছিলেন তার ৫০ বছর পর নোবেল আর্কাইভে প্রকাশ করা হয় তার নাম। সাথে প্রকাশ করা হয় কে বা কারা তাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। নোবেল আর্কাইভ থেকে পাওয়া তথ্যমতে এখন পর্যন্ত তিন বাঙালি বেশকয়েকবার নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।
এর মধ্যে মেঘনাদ সাহা ১৯৩০ সালে (মনোনয়ন দেন দেবেন্দ্র বোস ও শিশির মিত্র), ১৯৩৭ সালে (মনোনয়ন দেন আর্থার কম্পটন), ১৯৩৯ সালে (মনোনয়ন দেন শিশির মিত্র), ১৯৪০ সালে (মনোনয়ন দেয় আর্থান কম্পটন), ১৯৫১ ও ১৯৫৫ সালে (মনোনয়ন দেন শিশির মিত্র) পদার্থে মনোনয়ন পান। তবে তার কাছে আসেনি পদার্থে নোবেল পুরস্কার।
সত্যেন্দ্রনাথ বোসও পদার্থে নোবেল পুরস্কার পেতে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ১৯৫৬ সালে তাকে মনোনয়ন দেন কে ব্যানার্জি। ১৯৫৯ সালে ডি কোঠারি, ১৯৬২ সালে এস বাগচী ও এ দত্ত তাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। ১৯৬৮, ১৯৬৯ এবং ১৯৭০ সালে তিনবারই তাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন গোবিন্দ কুমার মেনন।
আরেকজন বাঙালি যিনি প্রতিথযশা চিকিৎসক উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী তিনিও ছিলেন নোবেল পুরস্কার পাবার মনোনয়নের তালিকায়। কালাজ্বরের প্রতিষেধক ইউরিয়র স্টিবামাইন আবিষ্কারের জন্য সুধাময় ঘোষ ১৯২৯ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেবার জন্য তাকে মনোনয়ন দেন। এছাড়া ১৯৪২ সালে ৫ জন ব্যক্তি (ইউ বসু, এম বোস, এস মহালনবীশ, সুধাময় ঘোষ, সি বোস) উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন।
হককথা/এমউএ