নিউইয়র্ক ১০:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সি চিন পিংয়ের ক্ষমতাধর হয়ে ওঠার নেপথ্যে কৈশোরের সংগ্রাম

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:১২:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৫ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সি চিন পিং ২০১২ সালে যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন চীনের সবচেয়ে উদারনৈতিক কমিউনিস্ট নেতা হবেন তিনি। এ ধারণার নেপথ্যে তাঁর পারিবারিক ইতিহাস। বাবা সি ঝংজুন ছিলেন বিপ্লবী নেতা। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে ১০ বছর আগের সেই ধারণা ভুল। মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী শাসক হতে যাচ্ছেন সি। চলতি মাসেই পার্টি থেকে আসবে সবুজ সংকেত। প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় দশক শুরু করতে যাচ্ছেন সি চিন পিং।

সিকে কেউ কেউ আধুনিক চীনের রূপকার বলে থাকেন। যে চীন এক দশক আগেও যুক্তরাষ্ট্রের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারত না, সির অধীনে সেই চীনই চোখ রাঙানি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে। সংবাদ সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চাকাঙ্ক্ষায় নির্মম এক নেতা সি। তবে তাঁর প্রভাবশালী হওয়ার পেছনের সংগ্রাম অনেকেরই অজানা।

মাও সেতুংয়ের অধীনে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন সির বাবা সি ঝংজুন। মাও সেতুং আর তিনি একসঙ্গে লড়েছেন গৃহযুদ্ধে। পার্টিতে ঝংজুনের বেশ গুরুত্ব ছিল। কিন্তু মাও সেতুংয়ের সমালোচনা করে দলীয় পদ হারান তিনি। পরিবারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। এ সময় একের পর এক আঘাত আসতে থাকে সির পরিবারে। জানা যায়, অপমান সইতে না পেরে তাঁর এক সৎ বোন আত্মহত্যা করেছিলেন।

স্কুলের সহপাঠীরা সিকে ‘একঘরে’ করে দেয়। ছেলেবেলার এসব ঘটনা সির মধ্যে এককেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা তৈরি করেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেভিড শ্যামবাগ। একসময় চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু হলে স্কুল ছাড়তে হয় তাঁকে। সরকারি নির্দেশে যেতে হয় শানজি প্রদেশের একটি দরিদ্র গ্রামে। থাকতে হয় গুহায়। বস্তা নিয়ে যেতে হয় দূর-দূরান্তে। অল্প বয়সেই এসব অভিজ্ঞতা সির চরিত্রে ‘দৃঢ়তা’ গঠন করেছে।

১৬-১৭ বছর বয়সী সি সিদ্ধান্ত নেন রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার। কিন্তু সিসিপিতে সদস্যপদের জন্য আবেদন করলেও বারবার প্রত্যাখ্যাত হতে হয়। শেষ পর্যন্ত যখন সদস্য হয়ে যান, তত দিনে ভবিষ্যতের ছক কষে ফেলা শেষ তাঁর। এরপর এগিয়ে যাওয়ার সময়টা দীর্ঘ হলেও সি তা বেশ সহজ করে নেন।

১৯৭৪ সালে একটি গ্রামে দলীয় প্রধানের পদ দিয়ে যাত্রা শুরু। ধাপে ধাপে সিঁড়ি অতিক্রম করলেও নিজেকে বেশ আড়ালে রেখেছেন এই নেতা। ১৯৮৭ সালে তারকা শিল্পী পেং লিউয়ানকে বিয়ে করেন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি লিউয়ানের স্বামী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ওই বছর সাংহাইয়ে দলীয় প্রধান হন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, কিশোর বয়সের সেই কষ্টের দিনগুলোই আজকের সি চিন পিং তৈরি করেছে। সি নিজেও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এ কথা স্বীকার করেছেন।

হককথা/এমউএ

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সি চিন পিংয়ের ক্ষমতাধর হয়ে ওঠার নেপথ্যে কৈশোরের সংগ্রাম

প্রকাশের সময় : ০১:১২:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সি চিন পিং ২০১২ সালে যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন চীনের সবচেয়ে উদারনৈতিক কমিউনিস্ট নেতা হবেন তিনি। এ ধারণার নেপথ্যে তাঁর পারিবারিক ইতিহাস। বাবা সি ঝংজুন ছিলেন বিপ্লবী নেতা। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে ১০ বছর আগের সেই ধারণা ভুল। মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী শাসক হতে যাচ্ছেন সি। চলতি মাসেই পার্টি থেকে আসবে সবুজ সংকেত। প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় দশক শুরু করতে যাচ্ছেন সি চিন পিং।

সিকে কেউ কেউ আধুনিক চীনের রূপকার বলে থাকেন। যে চীন এক দশক আগেও যুক্তরাষ্ট্রের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারত না, সির অধীনে সেই চীনই চোখ রাঙানি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে। সংবাদ সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চাকাঙ্ক্ষায় নির্মম এক নেতা সি। তবে তাঁর প্রভাবশালী হওয়ার পেছনের সংগ্রাম অনেকেরই অজানা।

মাও সেতুংয়ের অধীনে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন সির বাবা সি ঝংজুন। মাও সেতুং আর তিনি একসঙ্গে লড়েছেন গৃহযুদ্ধে। পার্টিতে ঝংজুনের বেশ গুরুত্ব ছিল। কিন্তু মাও সেতুংয়ের সমালোচনা করে দলীয় পদ হারান তিনি। পরিবারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। এ সময় একের পর এক আঘাত আসতে থাকে সির পরিবারে। জানা যায়, অপমান সইতে না পেরে তাঁর এক সৎ বোন আত্মহত্যা করেছিলেন।

স্কুলের সহপাঠীরা সিকে ‘একঘরে’ করে দেয়। ছেলেবেলার এসব ঘটনা সির মধ্যে এককেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা তৈরি করেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেভিড শ্যামবাগ। একসময় চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু হলে স্কুল ছাড়তে হয় তাঁকে। সরকারি নির্দেশে যেতে হয় শানজি প্রদেশের একটি দরিদ্র গ্রামে। থাকতে হয় গুহায়। বস্তা নিয়ে যেতে হয় দূর-দূরান্তে। অল্প বয়সেই এসব অভিজ্ঞতা সির চরিত্রে ‘দৃঢ়তা’ গঠন করেছে।

১৬-১৭ বছর বয়সী সি সিদ্ধান্ত নেন রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার। কিন্তু সিসিপিতে সদস্যপদের জন্য আবেদন করলেও বারবার প্রত্যাখ্যাত হতে হয়। শেষ পর্যন্ত যখন সদস্য হয়ে যান, তত দিনে ভবিষ্যতের ছক কষে ফেলা শেষ তাঁর। এরপর এগিয়ে যাওয়ার সময়টা দীর্ঘ হলেও সি তা বেশ সহজ করে নেন।

১৯৭৪ সালে একটি গ্রামে দলীয় প্রধানের পদ দিয়ে যাত্রা শুরু। ধাপে ধাপে সিঁড়ি অতিক্রম করলেও নিজেকে বেশ আড়ালে রেখেছেন এই নেতা। ১৯৮৭ সালে তারকা শিল্পী পেং লিউয়ানকে বিয়ে করেন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি লিউয়ানের স্বামী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ওই বছর সাংহাইয়ে দলীয় প্রধান হন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, কিশোর বয়সের সেই কষ্টের দিনগুলোই আজকের সি চিন পিং তৈরি করেছে। সি নিজেও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এ কথা স্বীকার করেছেন।

হককথা/এমউএ