ঐতিহাসিক ৭ জুন : বাঙালী জাতির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস
- প্রকাশের সময় : ০৩:৩১:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুন ২০১৫
- / ১১৫৫ বার পঠিত
ঢাকা: ঐতিহাসিক ৭ই জুন। বাঙালী জাতির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ৬ দফার ভূমিকা অপরিসীম। ১৯৬৬ সালের এই দিনে (৭ জুন) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে ঢাকা, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআর’র গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১০ জন শহীদ হন। এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোষহীন সংগ্রামের ধারায় উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় বাঙালী জাতি। দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করবে।
ইতিহাস বলে: ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাব পেশের মাধ্যমে পাক ভারত উপমহাদেশের জনগণ বৃটিশ শোষকদের এদেশ থেকে তাড়ানোর জন্য যেমন ঐকমত্য হয়েছিল, ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৬৬ সালের এইদিনে ঘোষিত ৬ দফাকে তৎকালীন পূর্ববাংলার জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানীদের এদেশ থেকে তাড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছিল। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ৬ দফা উত্থাপন করেন এবং পরের দিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যাতে এটি স্থান পায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু এ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এ দাবির প্রতি আয়োজক পক্ষ থেকে গুরুত্ব প্রদান করেনি। তারা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগ না দিয়ে লাহোরে অবস্থানকালেই বাঙালীর মুক্তির সনদ ৬ দফা পেশ করেন। এ নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পরে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু ১৩ মার্চ ৬ দফা এবং এব্যাপারে দলের অন্যান্য বিস্তারিত কর্মসূচি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদে পাস করিয়ে নেন। পরবর্তীতে এই ৬ দফার প্রতিটি দফা বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে তুলে ধরেন।
বাংলার সর্বস্তরের জনগণ এই ৬ দফা সম্পর্কে যখন সম্যক ধারণা অর্জন করলো তখনই ৬ দফাকে বাঙালীর মুক্তির সনদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হলো। পরবর্তী সময়ে ঐতিহাসিক ৬ দফাভিত্তিক নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনই ধাপে ধাপে বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয়। এ দাবির স্বপক্ষে বাঙালী জাতির সর্বাত্মক রায় ঘোষিত হয় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। ওই নির্বাচনে বাঙালীরা আওয়ামী লীগকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী করে। বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দলকে জনগণ বিজয়ী করলেও স্বৈরাচারী পাক শাসকরা বিজয়ী দলকে সরকার গঠন করতে না দিলে আবারও বঙ্গবন্ধু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন।
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ ও পালন করবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভোরে সূর্যোদয়ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকালে বঙ্গবন্ধু ভবনে স্থাপিত ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন।(দৈনিক মানবজমিন)