হককথা ডেস্ক : মূলত তাইওয়ান নিয়ে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। উত্তপ্ত বাক্যালাপ হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
শি-বাইডেন
ক্ষমতায় আসার পর পঞ্চম বার চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার প্রায় দুই ঘণ্টা ১৭ মিনিট দুইজনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন-সহ আরো কয়েকজন যুক্তরাষ্ট্রের অফিসার ওই বৈঠকে বাইডেনের সঙ্গে ছিলেন বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে।
করোনাকাল থেকে চীন এবং অ্যামেরিকার সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হয়েছে। বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরেও তার উন্নতি হয়নি। বরং ইউক্রেন যুদ্ধকে সামনে রেখে সম্পর্ক আরো জটিল হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ শেষ করে দিতে চায় না। ফলে বার বার সংকটকালে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও সেই উদ্দেশ্যেই বৈঠক হয়েছে বলে হোয়াইট হাউস সূত্র জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এদিনের আলোচনার মূল বিষয় ছিল তাইওয়ান। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের স্পিকার ন্যানসি পেলোসি জানিয়েছেন, তিনি তাইওয়ান সফরে যাবেন। চীন এর তীব্র প্রতিবাদ করেছিল। এদিনের বৈঠক সেখান থেকেই শুরু হয়। বাইডেন শি জিনপিংকে জানান, তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিকভাবে কীভাবে দেখে। উত্তরে শি বলেছেন, তিনি চাইবেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন আগুন নিয়ে না খেলে। কারণ আগুন নিয়ে খেললে হাত পুড়বেই।
তাইওয়ানেও যুদ্ধের আশঙ্কা
বড় প্রতিবেশী দেশ যখন-তখন তার ছোট প্রতিবেশীর ওপর হামলা চালাতে পারে- এই বিষয়ে এখন আর কোনো সংশয় নেই অনেক তাইওয়ানবাসীর মনে৷ তাদের অনেকেই মনে করেন, চীনও যে কোনো সময় তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে এবং সেরকম হলে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যেহেতু লড়তে হবে, তার প্রস্তুতি এখনই শুরু করা ভালো৷ সেই ভাবনায় ইতিমধ্যে বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণে নাম লিখিয়েছেন অনেকে ৷
শি জানিয়েছেন, চীন ওয়ান চায়না নীতি নিয়ে চলে। তারা চায়, অন্য দেশগুলিও চীনের এই নীতি মেনে চলুক। চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা যেন নাক না গলায়।
বাইডেন অবশ্য তাদের বক্তব্য স্পষ্ট করে জানিয়েছেন বলে হোয়াইট হাউসের দাবি। তাইওয়ানের শান্তির জন্য অ্যামেরিকা তাদের নীতির থেকে সরবে না বলে শি-কে জানিয়েছেন বাইডেন।
এদিনের বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও কথা হয়েছে বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। তবে আলোচনার সিংহভাগই জুড়ে ছিল তাইওয়ান।
তাইওয়ান সমস্যা
স্বশাসিত তাইওয়ান নিয়ে সাম্প্রতিককালে একাধিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। চীন তাইওয়ান এবং হংকংয়ে নতুন আইন বলবৎ করেছে। চীন তাইওয়ানকে সরাসরি শাসন করতে চাইছে। কিন্তু তাইওয়ান তা মানতে চাইছে না। ওয়ান চায়না নীতি দেখিয়ে তাইওয়ানকে নিজেদের প্রত্যক্ষ শাসনে আনতে চেয়েই একাধিক আইন বলবৎ করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র -সহ পশ্চিমা বিশ্বের বহু দেশই তার প্রতিবাদ করছে। এই পরিস্থিতিতেই ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। চীন রাশিয়াকে সমর্থন করছে বলে পশ্চিমা বিশ্বের অভিযোগ। এবং এই পরিস্থিতিতে চীন যে কোনোদিন তাইওয়ান আক্রমণ করতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। এরই মধ্যে ন্যানসি পালোসি তাইওয়ান সফরের কথা জানান। চীন যা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবারের বৈঠক হয়।
এসজি/জিএইচ (এপি, রয়টার্স)
হককথা/এমউএ