নিউইয়র্ক ১০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সৌদি আরব সফরের পক্ষে বাইডেনের সাফাই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:২৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ জুলাই ২০২২
  • / ৬১ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক : ওয়াশিংটন পোস্টে এক উপসম্পাদকীয়তে আসন্ন সৌদি আরব সফরের পক্ষে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ দেশটিকে একঘরে করার প্রতিশ্রুতির পর তার এই সফর নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা ৷
তেলসমৃদ্ধ দেশটিতে সফর করা কেন জরুরি, সেটি নিয়েই নিজের মতামত ওয়াশিংটন পোস্টে লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ৷ বাইডেনের ১৩ থেকে ১৬ জুলাই মধ্যপ্রাচ্য সফরে সৌদি আরব যাওয়ার আগে ইসরায়েল এবং অধীকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলেও যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ৷
বাইডেন লিখেছেন, ‘‘আমি জানি অনেকেই আমার সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনার সঙ্গে একমত নন৷ মানবাধিকার বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট এবং দীর্ঘস্থায়ী৷ আমি যখন বিদেশ সফরে যাই, মৌলিক স্বাধীনতার বিষয়টি সবসময়ই আলোচ্যসূচিতে থাকে ৷”
২০১৮ সালে তুরস্কের আঙ্কারায় ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যার পেছনে সৌদি আরবের নেতা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয় ৷
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান ১৪ বছর পর সৌদি আরব সফরে গেলেন। এর্দোয়ানের অফিস জানিয়েছে, সৌদির রাজা সালমানের আমন্ত্রণেই তার এই সফর। উপরের ছবিটি সৌদিতে পৌঁছাবার পর বিমানবন্দরে এর্দোয়ান।
জো বাইডেন যুক্তি দিয়েছেন, পূর্বসূরি ডনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় তার পররাষ্ট্রনীতি মধ্যপ্রাচ্যকে আরো স্থিতিশীল করে তুলেছে৷ রুশ আগ্রাসন এবং চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয়টিকেও যুক্ত করেছেন৷ এবং এ কাজে সৌদি আরব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বাইডেন৷
তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট হিসাবে আমাদের দেশকে শক্তিশালী ও সুরক্ষিত রাখাই আমার কাজ৷ আমাদের রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলা করতে হবে, চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভালো আবস্থানে যেতে হবে এবং বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চলে আরো বেশি স্থিতিশীলতার জন্যও কাজ করে যেতে হবে৷”
বাইডেনের মতে, ‘‘এই কাজগুলো করার জন্য এমন সব দেশের সঙ্গে আমাদের সরাসরি সম্পৃক্ত হতে হবে, যারা ফল নির্ধারণে প্রভাব রাখতে পারে৷ সৌদি আরব এসব দেশের মধ্যে একটি৷ শুক্রবার যখন আমি সৌদি নেতাদের সঙ্গে দেখা করবো, আমার লক্ষ্য থাকবে মৌলিক যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধের প্রতিও সৎ থেকে পারস্পরিক স্বার্থ এবং দায়িত্বের ভিত্তিতে কৌশলগত অংশীদারত্ব জোরদার করা৷”
ইরাকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫,২০০ সৈন্য রয়েছে৷ তবে তা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে পেন্টাগন৷ এর অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প থেকে এরিমধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারও করা হয়েছে৷ বর্তমানে গ্রিন জোন, বাগদাদের কূটনৈতিক এলাকা, আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে দেশটির সেনাসদস্য রয়েছে৷ গত নভেম্বরে আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স৷
সৌদি আরব কেন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
বাইডেন লিখেছেন, ৮০ বছর ধরে এই অঞ্চলের অন্যতম কৌশলগত অংশীদার দেশের সঙ্গে সম্পর্কে ‘বিচ্ছেদ নয়, পুনর্নির্মাণ’ চান তিনি৷
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সৌদি আরব৷ বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকা তেলের মূল্যে লাগাম টানতে দৈনিক তেল উৎপাদন বাড়ানোর কথাও বাইডেন বলতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় খাশোগজি হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরবকে একঘরে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন৷ কিন্তু সম্প্রতি, বিশেষ করে ইয়েমেন যুদ্ধ শেষ করার সৌদি উদ্যোগের পর, তার মুখ থেকে রিয়াদের প্রশংসাই শোনা গেছে৷ সৌদি আরব সম্প্রতি ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতির সময়ও বাড়িয়েছে৷
অঞ্চলটিতে ইরানের প্রভাব বিস্তার ঠেকিয়ে ওয়াশিংটনেরও স্বার্থ রক্ষা করছে রিয়াদ৷ ইয়েমেন এবং ইরাকে নিজেদের প্রভাব বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ইরান ও সৌদি আরব৷
এডিকে/কেএম (রয়টার্স, এপি, এএফপি)
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সৌদি আরব সফরের পক্ষে বাইডেনের সাফাই

প্রকাশের সময় : ০৯:২৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ জুলাই ২০২২

হককথা ডেস্ক : ওয়াশিংটন পোস্টে এক উপসম্পাদকীয়তে আসন্ন সৌদি আরব সফরের পক্ষে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ দেশটিকে একঘরে করার প্রতিশ্রুতির পর তার এই সফর নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা ৷
তেলসমৃদ্ধ দেশটিতে সফর করা কেন জরুরি, সেটি নিয়েই নিজের মতামত ওয়াশিংটন পোস্টে লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ৷ বাইডেনের ১৩ থেকে ১৬ জুলাই মধ্যপ্রাচ্য সফরে সৌদি আরব যাওয়ার আগে ইসরায়েল এবং অধীকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলেও যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ৷
বাইডেন লিখেছেন, ‘‘আমি জানি অনেকেই আমার সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনার সঙ্গে একমত নন৷ মানবাধিকার বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট এবং দীর্ঘস্থায়ী৷ আমি যখন বিদেশ সফরে যাই, মৌলিক স্বাধীনতার বিষয়টি সবসময়ই আলোচ্যসূচিতে থাকে ৷”
২০১৮ সালে তুরস্কের আঙ্কারায় ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যার পেছনে সৌদি আরবের নেতা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয় ৷
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান ১৪ বছর পর সৌদি আরব সফরে গেলেন। এর্দোয়ানের অফিস জানিয়েছে, সৌদির রাজা সালমানের আমন্ত্রণেই তার এই সফর। উপরের ছবিটি সৌদিতে পৌঁছাবার পর বিমানবন্দরে এর্দোয়ান।
জো বাইডেন যুক্তি দিয়েছেন, পূর্বসূরি ডনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় তার পররাষ্ট্রনীতি মধ্যপ্রাচ্যকে আরো স্থিতিশীল করে তুলেছে৷ রুশ আগ্রাসন এবং চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয়টিকেও যুক্ত করেছেন৷ এবং এ কাজে সৌদি আরব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বাইডেন৷
তিনি লিখেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট হিসাবে আমাদের দেশকে শক্তিশালী ও সুরক্ষিত রাখাই আমার কাজ৷ আমাদের রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলা করতে হবে, চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভালো আবস্থানে যেতে হবে এবং বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চলে আরো বেশি স্থিতিশীলতার জন্যও কাজ করে যেতে হবে৷”
বাইডেনের মতে, ‘‘এই কাজগুলো করার জন্য এমন সব দেশের সঙ্গে আমাদের সরাসরি সম্পৃক্ত হতে হবে, যারা ফল নির্ধারণে প্রভাব রাখতে পারে৷ সৌদি আরব এসব দেশের মধ্যে একটি৷ শুক্রবার যখন আমি সৌদি নেতাদের সঙ্গে দেখা করবো, আমার লক্ষ্য থাকবে মৌলিক যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধের প্রতিও সৎ থেকে পারস্পরিক স্বার্থ এবং দায়িত্বের ভিত্তিতে কৌশলগত অংশীদারত্ব জোরদার করা৷”
ইরাকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫,২০০ সৈন্য রয়েছে৷ তবে তা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে পেন্টাগন৷ এর অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প থেকে এরিমধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারও করা হয়েছে৷ বর্তমানে গ্রিন জোন, বাগদাদের কূটনৈতিক এলাকা, আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে দেশটির সেনাসদস্য রয়েছে৷ গত নভেম্বরে আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স৷
সৌদি আরব কেন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
বাইডেন লিখেছেন, ৮০ বছর ধরে এই অঞ্চলের অন্যতম কৌশলগত অংশীদার দেশের সঙ্গে সম্পর্কে ‘বিচ্ছেদ নয়, পুনর্নির্মাণ’ চান তিনি৷
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সৌদি আরব৷ বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকা তেলের মূল্যে লাগাম টানতে দৈনিক তেল উৎপাদন বাড়ানোর কথাও বাইডেন বলতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় খাশোগজি হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরবকে একঘরে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন৷ কিন্তু সম্প্রতি, বিশেষ করে ইয়েমেন যুদ্ধ শেষ করার সৌদি উদ্যোগের পর, তার মুখ থেকে রিয়াদের প্রশংসাই শোনা গেছে৷ সৌদি আরব সম্প্রতি ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতির সময়ও বাড়িয়েছে৷
অঞ্চলটিতে ইরানের প্রভাব বিস্তার ঠেকিয়ে ওয়াশিংটনেরও স্বার্থ রক্ষা করছে রিয়াদ৷ ইয়েমেন এবং ইরাকে নিজেদের প্রভাব বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে ইরান ও সৌদি আরব৷
এডিকে/কেএম (রয়টার্স, এপি, এএফপি)
হককথা/এমউএ