নিউইয়র্ক ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জি-৭ নেতারা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুন ২০২২
  • / ৫৯ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যেই জার্মানিতে জি-৭ সম্মেলন শুরু হয়েছে। রুশ আগ্রাসন ও তার প্রভাবে বিশ্ব বাজারে খাদ্য সঙ্কট এবং চীনের মাল্টিট্রিলিয়ন ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প ঠেকাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামো অর্থানয় এই দুইটি বিষয়টি জি-৭ সম্মেলনের আলোচনার কেন্দ্রে ছিলো।
বৈঠকের শুরুতেই জি-৭ এর সদস্য দেশগুলো রুশ সোনা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করল। অন্যদিকে সম্মেলনে অংশ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জি-৭ নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
একইসাথে সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও কানাডা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো জোরদার করার কথা জানিয়েছে। এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক বিবৃতিতে বলেন, জি-৭ সম্মেলনে আমরা যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছি, তা সরাসরি রাশিয়ার অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে। রাশিয়াকে আর্থিকভাবে দুর্বল করতে যুক্তরাজ্য ও তার মিত্রশক্তিরা একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ জুন) জি-৭ এর পক্ষ থেকে রাশিয়ার সোনা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে। সোনা রপ্তানি করে রাশিয়া ব্যাপক লাভবান হয়। ব্যাপক পরিমাণে রাজস্ব জমা হয়।
ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, গত বছর রাশিয়া ১৫.৪৫ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ডলারের সোনা রপ্তানি করেছিল ।
জি-৭ সম্মেলনে রাশিয়ার তেল আমদানির বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পরেই রাশিয়া অপরিশোধিত তেলের দাম কমিয়ে দেয়। বিশ্ব বাজারে যখন হু হু করে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে, রাশিয়া তখন অনেক কম মূল্যে তেল বিক্রি করছে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার ফলেও অনেক দেশ রাশিয়ার থেকে তেল কিনতে আগ্রহী হয়েছে।
এদিকে, চীনকে আটকাতে পাঁচ বছরে ছয়শ’ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ডলারের সরকারি ও বেসরকারি তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গ্রুপ অব সেভেনের (জি৭) নেতারা।
গতকাল রবিবার (২৬ জুন) জার্মানিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং জি৭ এর অন্য নেতারা ‘পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট’ প্রকল্প ঘোষণা করেন।
সম্মেলনে বাইডেন বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায়ই বৈশ্বিক ধাক্কা সামলাতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব হয়, বিশেষ করে মহামারির মতো ঘটনায়। তাই তারা প্রভাবগুলো আরো তীব্রভাবে অনুভব করে এবং তাদের পুনরুদ্ধার কার্যক্রম আরো কঠিন হয়। এটি শুধু মানবিক উদ্বেগের বিষয় নয়, আমাদের জন্য অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা উদ্বেগেরও বিষয়।
তিনি আরো বলেন, প্রকল্পের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র পাঁচ বছরে দুইশ’ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ডলার অনুদান দেবে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোকে। যার মাধ্যমে ওই দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, লিঙ্গ সমতা ও ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এটি সহায়তা বা দান নয়। এটি এমন বিনিয়োগ যা সবার জন্য সুবিধা বয়ে আনবে। বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক, উন্নয়ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সার্বভৌম সম্পদ তহবিল এবং অন্য খাত থেকে শত শত বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ডলার আসতে পারে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ওরসুলা ভন দের লিয়েন বলেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ স্কিমের একটি টেকসই বিকল্প গড়ে তুলতে একই সময়ের মধ্যে উদ্যোগের জন্য ৩১৭ বিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ করবে ইউরোপ।
ইতালি, কানাডা এবং জাপানের নেতারা তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু তাদের দেশ সম্মেলনে অংশ নিয়েছে।
চীনের বিনিয়োগ স্কিমের সাথে একশ’র বেশি দেশ সম্পৃক্ত। এশিয়া থেকে ইউরোপে বাণিজ্যপথ প্রাচীন সিল্ক রোডের আধুনিক সংস্করণ তৈরির জন্য দেশগুলোতে উন্নয়ন ও প্রকল্প চলছে।
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জি-৭ নেতারা

প্রকাশের সময় : ০৮:১৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুন ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যেই জার্মানিতে জি-৭ সম্মেলন শুরু হয়েছে। রুশ আগ্রাসন ও তার প্রভাবে বিশ্ব বাজারে খাদ্য সঙ্কট এবং চীনের মাল্টিট্রিলিয়ন ডলারের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প ঠেকাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামো অর্থানয় এই দুইটি বিষয়টি জি-৭ সম্মেলনের আলোচনার কেন্দ্রে ছিলো।
বৈঠকের শুরুতেই জি-৭ এর সদস্য দেশগুলো রুশ সোনা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করল। অন্যদিকে সম্মেলনে অংশ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জি-৭ নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
একইসাথে সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও কানাডা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরো জোরদার করার কথা জানিয়েছে। এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক বিবৃতিতে বলেন, জি-৭ সম্মেলনে আমরা যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছি, তা সরাসরি রাশিয়ার অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে। রাশিয়াকে আর্থিকভাবে দুর্বল করতে যুক্তরাজ্য ও তার মিত্রশক্তিরা একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ জুন) জি-৭ এর পক্ষ থেকে রাশিয়ার সোনা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে। সোনা রপ্তানি করে রাশিয়া ব্যাপক লাভবান হয়। ব্যাপক পরিমাণে রাজস্ব জমা হয়।
ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, গত বছর রাশিয়া ১৫.৪৫ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ডলারের সোনা রপ্তানি করেছিল ।
জি-৭ সম্মেলনে রাশিয়ার তেল আমদানির বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পরেই রাশিয়া অপরিশোধিত তেলের দাম কমিয়ে দেয়। বিশ্ব বাজারে যখন হু হু করে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে, রাশিয়া তখন অনেক কম মূল্যে তেল বিক্রি করছে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার ফলেও অনেক দেশ রাশিয়ার থেকে তেল কিনতে আগ্রহী হয়েছে।
এদিকে, চীনকে আটকাতে পাঁচ বছরে ছয়শ’ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ডলারের সরকারি ও বেসরকারি তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গ্রুপ অব সেভেনের (জি৭) নেতারা।
গতকাল রবিবার (২৬ জুন) জার্মানিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং জি৭ এর অন্য নেতারা ‘পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট’ প্রকল্প ঘোষণা করেন।
সম্মেলনে বাইডেন বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায়ই বৈশ্বিক ধাক্কা সামলাতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব হয়, বিশেষ করে মহামারির মতো ঘটনায়। তাই তারা প্রভাবগুলো আরো তীব্রভাবে অনুভব করে এবং তাদের পুনরুদ্ধার কার্যক্রম আরো কঠিন হয়। এটি শুধু মানবিক উদ্বেগের বিষয় নয়, আমাদের জন্য অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা উদ্বেগেরও বিষয়।
তিনি আরো বলেন, প্রকল্পের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র পাঁচ বছরে দুইশ’ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ডলার অনুদান দেবে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোকে। যার মাধ্যমে ওই দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, লিঙ্গ সমতা ও ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এটি সহায়তা বা দান নয়। এটি এমন বিনিয়োগ যা সবার জন্য সুবিধা বয়ে আনবে। বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক, উন্নয়ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সার্বভৌম সম্পদ তহবিল এবং অন্য খাত থেকে শত শত বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্র ডলার আসতে পারে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ওরসুলা ভন দের লিয়েন বলেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ স্কিমের একটি টেকসই বিকল্প গড়ে তুলতে একই সময়ের মধ্যে উদ্যোগের জন্য ৩১৭ বিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ করবে ইউরোপ।
ইতালি, কানাডা এবং জাপানের নেতারা তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু তাদের দেশ সম্মেলনে অংশ নিয়েছে।
চীনের বিনিয়োগ স্কিমের সাথে একশ’র বেশি দেশ সম্পৃক্ত। এশিয়া থেকে ইউরোপে বাণিজ্যপথ প্রাচীন সিল্ক রোডের আধুনিক সংস্করণ তৈরির জন্য দেশগুলোতে উন্নয়ন ও প্রকল্প চলছে।
হককথা/এমউএ