শান্তিচুক্তি: রাশিয়ার সঙ্গে কোনো আপস না করার ঘোষণা ইউক্রেনের

- প্রকাশের সময় : ০২:৪১:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ মে ২০২২
- / ৬৭ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের কোনো অঞ্চলকে ছাড় দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কোনো শান্তিচুক্তি করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। এর ঠিক এক দিন আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, শুধুমাত্র কূটনীতির মাধ্যমেই এই যুদ্ধের সমাধান হওয়া সম্ভব। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখায়লো পোডোলিয়াকের মতে, রাশিয়াকে ছাড় দিলে তারা আরও বড় এবং রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু করবে। রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দখলের চেষ্টা করছে। সেখানে থাকা ইউক্রেনীয় সেনাদের চারদিক থেকে ঘিরে ধরতে শুরু করেছে রুশ বাহিনী। এমন সময়ই আপস না করার ঘোষণা এলো ইউক্রেনের তরফ থেকে। রোববার এ নিয়ে একটি টুইট করেছেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রি ইয়েরমাক। এতে তিনি বলেন, অবশ্যই ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধাদের মধ্য দিয়েই যুদ্ধ শেষ হবে।
এদিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, লুহানস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ ভাঙতে শুরু করেছে রাশিয়া। লুহানস্কের গভর্নর সেরহি হাইদাইও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চারদিক থেকে রুশ সেনারা সেভেরোদনেৎস্ক দখলের চেষ্টা করছে। তবে ইউক্রেনীয় সেনারা তাদের চেষ্টাকে ঠেকিয়ে রেখেছে
রুশ সেনারা এখন সব দিক থেকে গোলা নিক্ষেপ করতে শুরু করেছে। টেলিগ্রাম অ্যাপে প্রকাশিত তার ওই বার্তায় আরও বলা হয়, কাছের শহর লিসিচানস্ক পৌঁছানোর যে সেতু রয়েছে তা ইউক্রেনীয় বাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই রুশ সেনাদের সেখানে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাবে।
একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাতে হলে রাশিয়াকে ইউক্রেনীয় ভূমির ব্যাপারে আপস করতে হবে তা অনেকটাই মেনে নিয়েছে পশ্চিমারা। ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘিও পার্লামেন্টে বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু পোডোলিয়াক বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে আপস করলে তাতে ভালোর থেকে খারাপই বেশি হবে। এতে যুদ্ধ থামবে না। এটি হয়ত সাময়িক সময়ের জন্য আক্রমণ বন্ধ রাখবে। কিন্তু রাশিয়া আবারও নতুন করে যুদ্ধ শুরু করবে এবং রক্তাক্ত অভিযান চালাবে। সেটি হবে আরও ভয়ানক।
এদিকে এই যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম কোনো বিদেশি নেতা হিসেবে ইউক্রেনের পার্লামেন্টে ভাষণ দিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আনজেই দুদা। তিনি ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন। রোববার ইউক্রেনের পার্লামেন্টে দুদা বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে রাশিয়াকে ওই অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার দাবি করতে হবে। রাশিয়ার কাছে কোনো অঞ্চল ছেড়ে দিতে হলে তা পুরো পশ্চিমের জন্য ‘বড় ধরনের একটি ধাক্কা’ হবে। উদ্বিগ্ন অনেকেই বলছেন যে, ইউক্রেনের উচিত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি মেনে নেয়া। কিন্তু ইউক্রেনের ভবিষ্যতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার শুধু ইউক্রেইনীয়দেরই আছে।
এসময় বক্তব্য রাখেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিও। তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। বলেন, রুশ আগ্রাসন বন্ধ করতে হলে এমন আধাআধি পদক্ষেপ কাজ করবে না। দুই নেতার বক্তৃতা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজধানী কিইভে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। দুদার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ ইউক্রেনীয়র মৃত্যু হচ্ছে।
হককথা/এমউএ