নিউইয়র্ক ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আল জাজিরার সাংবাদিকের শবযাত্রায় ইসরায়েলি পুলিশের হামলা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৯:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২
  • / ৪৮ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর শবযাত্রায় অংশ নেয়া মানুষজনের ওপর লাঠিপেটা করেছে ইসরায়েলি পুলিশ।
শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যারা সমবেত হয়েছিলেন, তাদের ওপর লাঠি নিয়ে হামলে পড়ে পুলিশ। সেই সময় তার কফিনটি প্রায় মাটিতে পড়ে যাচ্ছিল।
পুলিশ দাবি করেছে, তাদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ার কারণে তারা ওই অভিযান চালিয়েছে।
গত বুধবার (১১ মে) শিরিন গুলিতে নিহত হন। তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বাহিনী পরস্পরকে দায়ী করছে। বিশ্বজুড়ে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হাসপাতাল কম্পাউন্ডে শিরিনের কফিন ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ আর ফিলিস্তিনিরা। এরপর পুলিশের লোকজন ভিড়ের মানুষজনকে হটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের সদস্যরা তাদের লাঠিপেটা করে ও লাথি মারতে দেখা যায়।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা টম বেটম্যান বলছেন, সেই সময় তিনি সেন্ট জোসেফ হাসপাতালে কার পার্কে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শত শত ফিলিস্তিনি শিরিনের কফিন ঘিরে মাতম করছিলেন। ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান শিরিনের কফিনে শোকবার্তা ঝুলছিল, ফুলে সাজানো ছিল। অনেকই কাঁদছিলেন।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে কম্পাউন্ডের গেট আটকে দেয়া হয়। অন্যদিক থেকে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ইসরায়েলি সীমান্তরক্ষী বাহিনী আসে। তাদের কেউ কেউ ঘোড়ায় বসা ছিল। হঠাৎ করে ইসরায়েলি পুলিশ শোকার্ত লোকজনকে ধাক্কা দিতে শুরু করে। কফিন যারা বহন করছিলেন, তাদেরও ধাক্কা দেয়া হয়। তারা শোকার্ত মানুষজন ও সাংবাদিকদের ওপর শব্দ গ্রেনেড ছুড়ে মারে। পুরো ঘটনাটি প্রায় ১০ মিনিট ধরে চলে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যেভাবে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, তাদের তিনি খুবই অস্বস্তি বোধ করছেন। সেইসাথে কিছু পুলিশের আচরণেও তিনি বিরক্ত।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকিও বলেছেন, শবযাত্রায় অংশ নেয়া মানুষের ওপর যেভাবে পুলিশ আঘাত করেছে, তা খুবই অস্বস্তিকর। যা একটি শান্তিপূর্ণ শবযাত্রা হওয়া উচিত ছিল, সেখানে এভাবে হস্তক্ষেপ করার আমরা নিন্দা জানাচ্ছি।
ফিলিস্তিনে কর্তৃপক্ষ আর আল জাজিরা দাবি করেছে, শিরিন ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি করেছে, কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে তিনি হয়তো ফিলিস্তিনিদের গুলিতে নিহত হয়ে থাকতে পারেন।
৫১ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক শিরিন আল জাজিরা নিউজের জন্য একজন যুদ্ধ সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করছিলেন। গত দুই দশক ধরে তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন লড়াই নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে আসছেন।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বাড়ির উঠানে বৃহস্পতিবার তার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে তার কফিন ফিলিস্তিনি পতাকায় মুড়িয়ে আনা হয়।
মাহমুদ আব্বাস তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তার হত্যার জন্য ইসরায়েল পুরোপুরি দায়ী। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে তুলবেন।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত বলেছেন, কোনোরকম ভিত্তি ছাড়াই ইসরায়েলকে দোষারোপ করছেন আব্বাস। -বিবিসি
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আল জাজিরার সাংবাদিকের শবযাত্রায় ইসরায়েলি পুলিশের হামলা

প্রকাশের সময় : ০২:০৯:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর শবযাত্রায় অংশ নেয়া মানুষজনের ওপর লাঠিপেটা করেছে ইসরায়েলি পুলিশ।
শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যারা সমবেত হয়েছিলেন, তাদের ওপর লাঠি নিয়ে হামলে পড়ে পুলিশ। সেই সময় তার কফিনটি প্রায় মাটিতে পড়ে যাচ্ছিল।
পুলিশ দাবি করেছে, তাদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ার কারণে তারা ওই অভিযান চালিয়েছে।
গত বুধবার (১১ মে) শিরিন গুলিতে নিহত হন। তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বাহিনী পরস্পরকে দায়ী করছে। বিশ্বজুড়ে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হাসপাতাল কম্পাউন্ডে শিরিনের কফিন ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ আর ফিলিস্তিনিরা। এরপর পুলিশের লোকজন ভিড়ের মানুষজনকে হটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের সদস্যরা তাদের লাঠিপেটা করে ও লাথি মারতে দেখা যায়।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদদাতা টম বেটম্যান বলছেন, সেই সময় তিনি সেন্ট জোসেফ হাসপাতালে কার পার্কে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শত শত ফিলিস্তিনি শিরিনের কফিন ঘিরে মাতম করছিলেন। ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান শিরিনের কফিনে শোকবার্তা ঝুলছিল, ফুলে সাজানো ছিল। অনেকই কাঁদছিলেন।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে কম্পাউন্ডের গেট আটকে দেয়া হয়। অন্যদিক থেকে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ইসরায়েলি সীমান্তরক্ষী বাহিনী আসে। তাদের কেউ কেউ ঘোড়ায় বসা ছিল। হঠাৎ করে ইসরায়েলি পুলিশ শোকার্ত লোকজনকে ধাক্কা দিতে শুরু করে। কফিন যারা বহন করছিলেন, তাদেরও ধাক্কা দেয়া হয়। তারা শোকার্ত মানুষজন ও সাংবাদিকদের ওপর শব্দ গ্রেনেড ছুড়ে মারে। পুরো ঘটনাটি প্রায় ১০ মিনিট ধরে চলে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যেভাবে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, তাদের তিনি খুবই অস্বস্তি বোধ করছেন। সেইসাথে কিছু পুলিশের আচরণেও তিনি বিরক্ত।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকিও বলেছেন, শবযাত্রায় অংশ নেয়া মানুষের ওপর যেভাবে পুলিশ আঘাত করেছে, তা খুবই অস্বস্তিকর। যা একটি শান্তিপূর্ণ শবযাত্রা হওয়া উচিত ছিল, সেখানে এভাবে হস্তক্ষেপ করার আমরা নিন্দা জানাচ্ছি।
ফিলিস্তিনে কর্তৃপক্ষ আর আল জাজিরা দাবি করেছে, শিরিন ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি করেছে, কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে তিনি হয়তো ফিলিস্তিনিদের গুলিতে নিহত হয়ে থাকতে পারেন।
৫১ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক শিরিন আল জাজিরা নিউজের জন্য একজন যুদ্ধ সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করছিলেন। গত দুই দশক ধরে তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন লড়াই নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে আসছেন।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বাড়ির উঠানে বৃহস্পতিবার তার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে তার কফিন ফিলিস্তিনি পতাকায় মুড়িয়ে আনা হয়।
মাহমুদ আব্বাস তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তার হত্যার জন্য ইসরায়েল পুরোপুরি দায়ী। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে তুলবেন।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত বলেছেন, কোনোরকম ভিত্তি ছাড়াই ইসরায়েলকে দোষারোপ করছেন আব্বাস। -বিবিসি
হককথা/এমউএ