বাংলাদেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নেই : নিউইয়র্কে প্রবাসী নাগরিক সমাজের সভায় বক্তাগণ
- প্রকাশের সময় : ০৬:২৭:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৫
- / ৬৩৩ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বাংলাদেশে এখন গণতান্ত্রিক সংকট চলছে। সংবাদ মাধ্যমের কোন স্বাধীনতা নেই। সরকারের অন্যায় কর্মকান্ড ও অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে গ্রেফতার কওে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। ঠুকে দেয়া হচ্ছে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা। বর্তমান সভ্য সমাজে এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন নিউইয়র্ক প্রবাসী নাগরিক সমাজের সভায় বক্তাগণ।
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার মুক্তির দাবীতে গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশ প্লাজা মিলনায়তনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তাগণ দেশের চলমান নৈরাজ্যকর রাজনীতি নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেন।
নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক ড. শওকত আলীর সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফরহাদের উপস্থাপনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক মনজুর আহমেদ, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, এডভোকেট মুজিবুর রহমান, ড. আবুল কাশেম, সাংবাদিক রিমন ইসলাম, এডভোকেট মনির, মাওলানা শহীদুল্লাহ, গাজী শামসুদ্দিন, হাবিবুর রহমান শামীম প্রমুখ।
সভায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বক্তাগণ অবিলম্বে দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার নি:শর্ত মুক্তি দাবী করেন। তারা বলেন, শুধু এ দু’জনই নয়, বর্তমান সরকার অন্যায়ভাবে বিরোধী মতের হাজার হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠাচ্ছে। দেশের কারাগারগুলোতে এখন ধারণ ক্ষমতার অধিক কয়েদী মানবেতর জীবন যাপন করছে।
দেশে আইনের শাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীন মত প্রকাশের কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে বক্তাগণ বলেন এ অবস্থা কিছুতেই চলতে দেয়া যায় না। গত ৪৪ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশ এখন ভয়াবহ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বলে মন্তব্য করেন বক্তাগণ। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার উপদেষ্টা তৌফিক এলাহী চৌধুরীর দুর্নীতি এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ আদালতের বিচারকের স্কাইপ কেলেঙ্কারীর সংবাদ প্রকাশ করায় মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ দু’বছর অতিক্রান্ত হলেও তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেনি সরকার। বিভিন্ন অজুহাতে সরকার মামলার কার্যক্রম প্রলম্বিত করে চলেছে বলে অভিযোগ করেন আলোচকগণ। তারা বলেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা চায় না বলেই সরকার আমার দেশ পত্রিকাসহ বেশ ক’টি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। মিথ্যা মামলায় অনেক সাংবাদিক ও টিভি চ্যানেলের মালিককে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। বন্ধ এসব সংবাদ মাধ্যম অবিলম্বে খুলে দেয়ারও জানান তারা।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে একজন মেধাবী রাজনীতিক অভিহিত করে বক্তাগণ বলেন, টেলিফোন কথোপকথনের সূত্র ধরে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জড়ানো সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক ও অন্যায় কর্মকান্ডের অংশ। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে বলে তারা দাবী করেন।
বক্তাগণ বলেন, প্রকাশ্যে বড় বড় অপরাধ করলেও তাদেরকে ছাড় দেয়া হচ্ছে। অথচ বিনা দোষে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে মিথ্যা মামলায় শাস্তি দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়ার উপর সরকার দলীয় ক্যাডারদের হামলার নিন্দা জানান বক্তাগণ। তারা বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে তার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেয়া। কিন্তু দু:খজনকভাবে রাষ্ট্র নিজেই সন্ত্রাসীর ভূমিকা পালন করছে, জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন বক্তাগণ। তারা বলেন, রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালানোর পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। জনগণের মতামত ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুন:প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারের আশু পদক্ষেপ দাবী করেন প্রবাসী সমাজ।