নিউইয়র্ক ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কলকাতায় আটকে থাকা ১৫ নাবিকের দেশে ফেরার আকুতি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৪৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২
  • / ৬২ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক : দীর্ঘ এক মাস পাঁচ দিন ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আটকা পড়ে আছেন বাংলাদেশের জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট ১-এর ১৫ নাবিক। গতকাল শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় বন্দিদশা থেকে মুক্তির করুণ আকুতি জানিয়েছেন এই নাবিকেরা।
জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ ভারতের কলকাতার নেতাজী সুবাস চন্দ্র ডকে (পণ্য খালাস স্থান) জাহাজে পণ্য বোঝাইয়ের সময় জাহাজটি উল্টে যায়। এসময় কোনোমতে প্রাণে বেঁচে যান ওই নাবিকেরা। এরপর থেকেই তারা কলকাতার একটি হোটেলে প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
এদিকে ভিডিও বার্তা প্রকাশের পর শিপিং কর্তৃপক্ষ এবং কলকাতায় বাংলাদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তারা আটকে পড়া নাবিকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে খুব দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভিডিও বার্তার মাধ্যমে কলকাতায় এক মাসের বেশি সময় ধরে আটকে থাকা বাংলাদেশি ওই জাহাজের প্রধান প্রকৌশলী ফাহিম ফয়সাল জানান, গত ২০ মার্চ ১৫ জন নাবিক চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজ নিয়ে কলকাতায় যান। ২৩ মার্চ তারা কলকাতায় পৌঁছান। ২৪ মার্চ পণ্যবাহী কন্টেইনার তোলা শেষে একপাশে কাত হয়ে জাহাজটি উল্টে যায়। এ সময় নাবিকেরা দ্রুত জাহাজ থেকে নেমে কোনোমতে প্রাণ বাঁচান। এ ঘটনার পর থেকে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়ে পোর্ট সংলগ্ন মেরিন ক্লাব হোটেলে (সি-ম্যান হোস্টেল) রেখেছে। সেখানে দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তারা অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন।
১৫ নাবিকের পক্ষ থেকে গত বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাতে তিন মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা হয়েছে। সেখানে ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট ১ এর প্রধান প্রকৌশলী ফাহিম ফয়সালসহ অন্য নাবিকরা দেশে ফেরার আকুতি জানান।
নাবিকরা দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ভিডিও বার্তায় ফাহিম ফয়সাল বলেন, তারা দফায় দফায় চেষ্টা করা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার বা ভারত কর্তৃপক্ষ কেউই তাদেরকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগ নিচ্ছেন না। দেশের মালিকপক্ষ নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিলেও কয়েক দিন ধরে আর কোনো যোগাযোগ করছে না। হোটেলে যেকোনো সময় খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাঁচান, আমাদের যেন বলির পাঠা বানানো না হয়। আমরা বাঁচতে চাই। আমাদের জীবন হুমকির মুখে। যেকোনো সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে। আমরা সবাই এক কাপড়ে আছি। আমরা নিরূপায়।’
আটকে পড়া নাবিকদের মধ্যে একজন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা শিবপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান। বার্তা সংস্থা ইউএনবি গতকাল বিকেলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করে। মিজানুর জানান, তারা সাতটি কক্ষে ১৫ জন অবস্থান করছেন। এছাড়া পিএনএন শিপিংয়ের এজেন্ট তাদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেছে। তাদের শিক্ষা সনদসহ অন্যান্য জিনিসপত্র জাহাজে ডুবে গেছে ।
তিনি বলেন, এমভি মেরিন ট্রাস্ট-০১ জাহাজের মালিকরা ভিডিও বার্তার পর বৃহস্পতিবার তাদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং শিগগিরই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন।
একইসাথে কলকাতায় বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষও তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে খুব দ্রুত তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন। দু-একদিনের মধ্যে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে বৈঠক করতে চায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তাদের একটি ইমেইলও পাঠিয়েছে।
মিজানুর জানান, তার সাথে থাকা অন্যরা দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। তারা সবাই তাদের পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে চান। -ইউএনবি
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

কলকাতায় আটকে থাকা ১৫ নাবিকের দেশে ফেরার আকুতি

প্রকাশের সময় : ০১:৪৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২

হককথা ডেস্ক : দীর্ঘ এক মাস পাঁচ দিন ধরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আটকা পড়ে আছেন বাংলাদেশের জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট ১-এর ১৫ নাবিক। গতকাল শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় বন্দিদশা থেকে মুক্তির করুণ আকুতি জানিয়েছেন এই নাবিকেরা।
জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ ভারতের কলকাতার নেতাজী সুবাস চন্দ্র ডকে (পণ্য খালাস স্থান) জাহাজে পণ্য বোঝাইয়ের সময় জাহাজটি উল্টে যায়। এসময় কোনোমতে প্রাণে বেঁচে যান ওই নাবিকেরা। এরপর থেকেই তারা কলকাতার একটি হোটেলে প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন।
এদিকে ভিডিও বার্তা প্রকাশের পর শিপিং কর্তৃপক্ষ এবং কলকাতায় বাংলাদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তারা আটকে পড়া নাবিকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে খুব দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভিডিও বার্তার মাধ্যমে কলকাতায় এক মাসের বেশি সময় ধরে আটকে থাকা বাংলাদেশি ওই জাহাজের প্রধান প্রকৌশলী ফাহিম ফয়সাল জানান, গত ২০ মার্চ ১৫ জন নাবিক চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজ নিয়ে কলকাতায় যান। ২৩ মার্চ তারা কলকাতায় পৌঁছান। ২৪ মার্চ পণ্যবাহী কন্টেইনার তোলা শেষে একপাশে কাত হয়ে জাহাজটি উল্টে যায়। এ সময় নাবিকেরা দ্রুত জাহাজ থেকে নেমে কোনোমতে প্রাণ বাঁচান। এ ঘটনার পর থেকে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়ে পোর্ট সংলগ্ন মেরিন ক্লাব হোটেলে (সি-ম্যান হোস্টেল) রেখেছে। সেখানে দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তারা অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন।
১৫ নাবিকের পক্ষ থেকে গত বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাতে তিন মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা হয়েছে। সেখানে ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট ১ এর প্রধান প্রকৌশলী ফাহিম ফয়সালসহ অন্য নাবিকরা দেশে ফেরার আকুতি জানান।
নাবিকরা দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ভিডিও বার্তায় ফাহিম ফয়সাল বলেন, তারা দফায় দফায় চেষ্টা করা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার বা ভারত কর্তৃপক্ষ কেউই তাদেরকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগ নিচ্ছেন না। দেশের মালিকপক্ষ নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিলেও কয়েক দিন ধরে আর কোনো যোগাযোগ করছে না। হোটেলে যেকোনো সময় খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাঁচান, আমাদের যেন বলির পাঠা বানানো না হয়। আমরা বাঁচতে চাই। আমাদের জীবন হুমকির মুখে। যেকোনো সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে। আমরা সবাই এক কাপড়ে আছি। আমরা নিরূপায়।’
আটকে পড়া নাবিকদের মধ্যে একজন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা শিবপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান। বার্তা সংস্থা ইউএনবি গতকাল বিকেলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করে। মিজানুর জানান, তারা সাতটি কক্ষে ১৫ জন অবস্থান করছেন। এছাড়া পিএনএন শিপিংয়ের এজেন্ট তাদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেছে। তাদের শিক্ষা সনদসহ অন্যান্য জিনিসপত্র জাহাজে ডুবে গেছে ।
তিনি বলেন, এমভি মেরিন ট্রাস্ট-০১ জাহাজের মালিকরা ভিডিও বার্তার পর বৃহস্পতিবার তাদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং শিগগিরই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন।
একইসাথে কলকাতায় বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষও তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে খুব দ্রুত তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন। দু-একদিনের মধ্যে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে বৈঠক করতে চায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তাদের একটি ইমেইলও পাঠিয়েছে।
মিজানুর জানান, তার সাথে থাকা অন্যরা দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। তারা সবাই তাদের পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে চান। -ইউএনবি
হককথা/এমউএ