নিউইয়র্ক ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রুশ হামলা, সারাক্ষণ বাজছে সাইরেন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:১৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২
  • / ৪৬ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন শহরে মুহুর্মুহু রকেট ও বিমান হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। হামলায় খারকিভে অন্তত পাঁচজন নিহত ও আহত হয়েছেন ১৩ জন। মাইকোলাইভ শহরে ক্রমাগত রকেট হামলা চলছে। নিপ্রো শহরে হামলা সম্পর্কে সতর্ক করতে প্রায় সারাক্ষণই বাজছে যুদ্ধের সাইরেন।
ইউক্রেনের পশ্চিমের ডনবাস থেকে মারাত্মক জখম হওয়া নাগরিকদের একটি ট্রেনে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, হামলা চালিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা চলছে। সাধারণ নাগরিকদের উপর মর্টার আর রকেট হামলা চলছে।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেছেন, রাশিয়া মারিওপোল শহরকে একেবারে মাটির সাথে গুড়িয়ে দিতে চায়। শহরের কিছুই যেন আর অবশিষ্ট নেই।
রাশিয়া শহরটিতে প্রবেশ বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা করছে বলে শহরের কর্মকর্তারা জানিয়েছে। তবুও এরই মধ্যে মারিওপোলে আত্মসমর্পণের জন্য রুশ আল্টিমেটামে সাড়া দেয়নি ইউক্রেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধ লড়াই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী দেনিস শেমহাল।
যদিও রাশিয়া বলছে, পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে। যদি মারিওপোলের পতন ঘটে, এটি হবে গত দুইমাসের যুদ্ধে রাশিয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজয়।
মারিওপোল হচ্ছে আজোভ সাগর অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বন্দর। এটি লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের বড় কেন্দ্র। ইউক্রেনের বেশিরভাগ ইস্পাত, কয়লা ও শস্য এই বন্দর দিয়েই রফতানি করা হয়। এটি হারালে ইউক্রেনের অর্থনীতির জন্য সেটি হবে আরেকটি বড় আঘাত।
আর রাশিয়া যদি এই শহর দখল করতে পারে, তাহলে ক্রিমিয়া থেকে রাশিয়া পর্যন্ত তারা একটি সরাসরি স্থল সংযোগ স্থাপন করতে পারবে। এটি হবে রাশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও সামরিক বিজয়।
রাশিয়া দাবি করছে, তারা শহরটির বেশিরভাগ এলাকায় পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে মারিওপোলের আজোভস্টল ইস্পাত কারখানা, যেটিকে ইউরোপের সবচেয়ে বড় ইস্পাত শিল্প বলে গণ্য করা হয়, সেটি এখনো তারা দখল করতে পারেনি। অবশিষ্ট ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা সেখানেই আছে।
বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলার কথা অস্বীকার করে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণের উদ্দেশ্যে এবং দেশটির বিপজ্জনক জাতীয়তাবাদীদের বিরুদ্ধে।
অবরুদ্ধ শহর মারিওপোলের অবশিষ্ট ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য রাশিয়া সময়সীমা বেঁধে দেয়ার পরও এখনো তাতে কেউ সাড়া দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আজোভস্টল ইস্পাত কারখানার ভেতর এখন প্রায় আড়াই হাজার ইউক্রেনীয় সেনা আছে। সেখান থেকে তাদের বেরুবার পথ বন্ধ করে রেখেছে রুশ বাহিনী।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এসব দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
তবে মারিওপোলের মেয়রের একজন উপদেষ্টা টেলিগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছেন, তাদের বাহিনী এখনো প্রতিরোধ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
ইউক্রেনের এক এমপি ওলেক্সি গনচারেনকোও বিবিসিকে বলেছেন, মারিওপোলে ইউক্রেনের সৈন্যরা রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করবে না। আমি গতকালই তাদের সাথে কথা বলেছি। আমি জানি যে তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে।
জেলেনস্কি বলেছেন, মারিওপোলে বাদবাকী সৈন্যদের রুশ বাহিনী হত্যা করলে শান্তি আলোচনার অবসান ঘটবে। যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতোমধ্যেই বলেছেন, আলোচনা মৃত প্রায়।
ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধে রাশিয়া তেমন সুবিধা করতে না পারার পর পূর্বের ডনবাস অঞ্চলের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়েছিল। তবে এর পাশাপাশি তারা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাজধানী কিয়েভে এবং অন্যান্য এলাকায় হামলা অব্যাহত রাখে। – বিবিসি, এএফপি
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রুশ হামলা, সারাক্ষণ বাজছে সাইরেন

প্রকাশের সময় : ০২:১৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন শহরে মুহুর্মুহু রকেট ও বিমান হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। হামলায় খারকিভে অন্তত পাঁচজন নিহত ও আহত হয়েছেন ১৩ জন। মাইকোলাইভ শহরে ক্রমাগত রকেট হামলা চলছে। নিপ্রো শহরে হামলা সম্পর্কে সতর্ক করতে প্রায় সারাক্ষণই বাজছে যুদ্ধের সাইরেন।
ইউক্রেনের পশ্চিমের ডনবাস থেকে মারাত্মক জখম হওয়া নাগরিকদের একটি ট্রেনে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, হামলা চালিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা চলছে। সাধারণ নাগরিকদের উপর মর্টার আর রকেট হামলা চলছে।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেছেন, রাশিয়া মারিওপোল শহরকে একেবারে মাটির সাথে গুড়িয়ে দিতে চায়। শহরের কিছুই যেন আর অবশিষ্ট নেই।
রাশিয়া শহরটিতে প্রবেশ বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা করছে বলে শহরের কর্মকর্তারা জানিয়েছে। তবুও এরই মধ্যে মারিওপোলে আত্মসমর্পণের জন্য রুশ আল্টিমেটামে সাড়া দেয়নি ইউক্রেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধ লড়াই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী দেনিস শেমহাল।
যদিও রাশিয়া বলছে, পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে। যদি মারিওপোলের পতন ঘটে, এটি হবে গত দুইমাসের যুদ্ধে রাশিয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজয়।
মারিওপোল হচ্ছে আজোভ সাগর অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বন্দর। এটি লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের বড় কেন্দ্র। ইউক্রেনের বেশিরভাগ ইস্পাত, কয়লা ও শস্য এই বন্দর দিয়েই রফতানি করা হয়। এটি হারালে ইউক্রেনের অর্থনীতির জন্য সেটি হবে আরেকটি বড় আঘাত।
আর রাশিয়া যদি এই শহর দখল করতে পারে, তাহলে ক্রিমিয়া থেকে রাশিয়া পর্যন্ত তারা একটি সরাসরি স্থল সংযোগ স্থাপন করতে পারবে। এটি হবে রাশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও সামরিক বিজয়।
রাশিয়া দাবি করছে, তারা শহরটির বেশিরভাগ এলাকায় পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে মারিওপোলের আজোভস্টল ইস্পাত কারখানা, যেটিকে ইউরোপের সবচেয়ে বড় ইস্পাত শিল্প বলে গণ্য করা হয়, সেটি এখনো তারা দখল করতে পারেনি। অবশিষ্ট ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা সেখানেই আছে।
বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলার কথা অস্বীকার করে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণের উদ্দেশ্যে এবং দেশটির বিপজ্জনক জাতীয়তাবাদীদের বিরুদ্ধে।
অবরুদ্ধ শহর মারিওপোলের অবশিষ্ট ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের জন্য রাশিয়া সময়সীমা বেঁধে দেয়ার পরও এখনো তাতে কেউ সাড়া দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আজোভস্টল ইস্পাত কারখানার ভেতর এখন প্রায় আড়াই হাজার ইউক্রেনীয় সেনা আছে। সেখান থেকে তাদের বেরুবার পথ বন্ধ করে রেখেছে রুশ বাহিনী।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এসব দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
তবে মারিওপোলের মেয়রের একজন উপদেষ্টা টেলিগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছেন, তাদের বাহিনী এখনো প্রতিরোধ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
ইউক্রেনের এক এমপি ওলেক্সি গনচারেনকোও বিবিসিকে বলেছেন, মারিওপোলে ইউক্রেনের সৈন্যরা রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করবে না। আমি গতকালই তাদের সাথে কথা বলেছি। আমি জানি যে তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে।
জেলেনস্কি বলেছেন, মারিওপোলে বাদবাকী সৈন্যদের রুশ বাহিনী হত্যা করলে শান্তি আলোচনার অবসান ঘটবে। যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতোমধ্যেই বলেছেন, আলোচনা মৃত প্রায়।
ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধে রাশিয়া তেমন সুবিধা করতে না পারার পর পূর্বের ডনবাস অঞ্চলের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়েছিল। তবে এর পাশাপাশি তারা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাজধানী কিয়েভে এবং অন্যান্য এলাকায় হামলা অব্যাহত রাখে। – বিবিসি, এএফপি
হককথা/এমউএ