আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চরম অর্থনৈতিক সংকটে বেসামাল শ্রীলঙ্কা। এমন অবস্থায় দ্বীপরাষ্ট্রটির মন্ত্রিসভার সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্য গতকাল রবিবার (৩ এপ্রিল) রাতে এক বৈঠকের পর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী দীনেশ গুণবর্ধন সংবাদমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, গভীর রাতে বৈঠকে বসেন মন্ত্রিসভার সদস্যেরা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় সবাই একযোগ পদত্যাগ করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে নমাল রাজাপাকসেও পদত্যাগ করেছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, তিনি আশা করছেন- এ পদক্ষেপ জনগণ ও সরকারের জন্য স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করবে।
অর্থনৈতিক সংকটের দরুণ দেশে মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছুঁয়েছে। চালের দাম ২২০ রুপি প্রতি কিলোগ্রাম এবং এক কিলোগ্রাম গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ রুপি দরে। বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, অগ্নিমূল্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম, সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছিলই। জনরোষ সামাল দিতে ৩৬ ঘণ্টা কারফিউ জারি করে গোতাবায়া সরকার।
এর আগে সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানিয়ে গত ৩১ মার্চ মধ্যরাতে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক’শ মানুষ। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী গুলিবর্ষণ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চলমান পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ঠেকাতে দেশটিতে গত শনিবার থেকে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ চলছে। আজ সোমবার (৪ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত তা বজায় থাকার কথা।
১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট পার করছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানিরও ক্ষমতা হারিয়েছে দেশটি।
হককথা/এমউএ