নিউইয়র্ক ০৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সীমান্ত থেকে সৈন্য ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, যুদ্ধ চান না পুতিন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:২০:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ১২৯ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখের বেশি রুশ সৈন্য মোতায়েন নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টানটান উত্তেজনার পর রাশিয়া বলেছে, কিছু সৈন্য তাদের ঘাঁটিতে ফিরে আসছে।
এরপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি ইউরোপে যুদ্ধ চান না। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ইউক্রেনকে ঘিরে রাশিয়ার ব্যাপক সেনা মোতায়েনের জেরে ইউরোপে উত্তেজনা চরমে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দাবি করে আসছিল, ইউক্রেনে হামলা চালাতেই রাশিয়ার এই তৎপরতা। তবে প্রথম থেকেই এসব দাবি নাকচ করেছে মস্কো।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র গতকাল এক ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, ইউক্রেন সীমান্তের কাছে মহড়া শেষ করে কিছু সৈন্য তাদের ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে।
রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখানো হয়েছে রেলওয়ের খোলা ওয়াগনে কিছু ট্যাংক এবং সাঁজোয়া গাড়ি তোলা হচ্ছে।
রাশিয়ার এই পদক্ষেপ ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে মস্কোর সম্পর্কে সৃষ্ট উত্তেজনা কমাতে সাহায্যে করবে বলে আশাবাদ তৈরি হয়েছে।
এদিকে চলমান সংকট সমাধানে দফায় দফায় নানা পক্ষের মধ্যে বৈঠক চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউক্রেন সফরের পর রাশিয়া যান জার্মান চ্যান্সেলর। সেখানে তিনি পুতিনের সঙ্গে চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে পুতিনের কাছে প্রশ্ন করেন।
জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা কি যুদ্ধ চাই, নাকি চাই না? অবশ্যই না। ঠিক এ কারণেই আলোচনা প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা প্রস্তাব এনেছি।’
এসময় পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগগুলো সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি এখনই সুরাহা করা উচিত।
তবে পুতিনের এমন দাবির আগেই অবশ্য রাশিয়াকে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্র নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ভাদিম প্রাইস্তাইকো গত সোমবার বলেন, মস্কোর সঙ্গে যুদ্ধ এড়াতে প্রয়োজনে ন্যাটোতে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকবে কিয়েভ।
সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার সামরিক তত্পরতাকে হুমকি হিসেবেই দেখছেন বলে উল্লেখ করে শলৎজ বলেন, অবশ্যই আমরা খুব উদ্বিগ্ন। ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখের বেশি রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আর আমাদের কাছে বিষয়টি বোধগম্য নয়।
অপরদিকে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়ার সৈন্য ফিরিয়ে নেবার খবরে শেয়ারবাজারগুলোতে তাৎক্ষণিকভাবে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে তলানিতে পড়ে থাকার পর রাশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার ও রুশ মুদ্রা রুবলের বিনিময় মূল্য হঠাৎ করে অনেকটা বেড়ে গেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি বন্ডের দামও অনেকটা বেড়েছে।
তবে ইউক্রেন রাশিয়ার তৎপরতা নিয়ে এখনো সন্দিহান। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, রাশিয়া সত্যিই সৈন্য সরাচ্ছে তা চোখে দেখার পর তারা বলতে পারবেন উত্তেজনা কমবে কি না। রুশ ফেডারেশনের কাছ থেকে আমরা নানা সময় নানা বিবৃতি শুনছি। সুতরাং আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা যা চোখে দেখবো শুধু সেটাই বিশ্বাস করবো।
ইউক্রেনের মতো ন্যাটো দেশগুলোও রাশিয়ার এই পদক্ষেপ নিয়ে সন্দিহান।
জন হপকিন্স স্কুল অব অ্যাডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক সের্গেই রাদচেঙ্কো বলেছেন, রাশিয়া সবসময়ই বলেছে তারা কাউকেই হুমকি দিচ্ছে না এবং তাদের সৈন্যরা শুধু মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। তিনি মনে করেন, এটি প্রেসিডেন্ট পুতিনের নতুন এক কৌশল। -বিবিসি
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সীমান্ত থেকে সৈন্য ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, যুদ্ধ চান না পুতিন

প্রকাশের সময় : ১২:২০:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখের বেশি রুশ সৈন্য মোতায়েন নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টানটান উত্তেজনার পর রাশিয়া বলেছে, কিছু সৈন্য তাদের ঘাঁটিতে ফিরে আসছে।
এরপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি ইউরোপে যুদ্ধ চান না। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ইউক্রেনকে ঘিরে রাশিয়ার ব্যাপক সেনা মোতায়েনের জেরে ইউরোপে উত্তেজনা চরমে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দাবি করে আসছিল, ইউক্রেনে হামলা চালাতেই রাশিয়ার এই তৎপরতা। তবে প্রথম থেকেই এসব দাবি নাকচ করেছে মস্কো।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র গতকাল এক ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, ইউক্রেন সীমান্তের কাছে মহড়া শেষ করে কিছু সৈন্য তাদের ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে।
রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখানো হয়েছে রেলওয়ের খোলা ওয়াগনে কিছু ট্যাংক এবং সাঁজোয়া গাড়ি তোলা হচ্ছে।
রাশিয়ার এই পদক্ষেপ ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে মস্কোর সম্পর্কে সৃষ্ট উত্তেজনা কমাতে সাহায্যে করবে বলে আশাবাদ তৈরি হয়েছে।
এদিকে চলমান সংকট সমাধানে দফায় দফায় নানা পক্ষের মধ্যে বৈঠক চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউক্রেন সফরের পর রাশিয়া যান জার্মান চ্যান্সেলর। সেখানে তিনি পুতিনের সঙ্গে চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকেরা যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে পুতিনের কাছে প্রশ্ন করেন।
জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা কি যুদ্ধ চাই, নাকি চাই না? অবশ্যই না। ঠিক এ কারণেই আলোচনা প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা প্রস্তাব এনেছি।’
এসময় পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগগুলো সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টি এখনই সুরাহা করা উচিত।
তবে পুতিনের এমন দাবির আগেই অবশ্য রাশিয়াকে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্র নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ভাদিম প্রাইস্তাইকো গত সোমবার বলেন, মস্কোর সঙ্গে যুদ্ধ এড়াতে প্রয়োজনে ন্যাটোতে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকবে কিয়েভ।
সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার সামরিক তত্পরতাকে হুমকি হিসেবেই দেখছেন বলে উল্লেখ করে শলৎজ বলেন, অবশ্যই আমরা খুব উদ্বিগ্ন। ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখের বেশি রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আর আমাদের কাছে বিষয়টি বোধগম্য নয়।
অপরদিকে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়ার সৈন্য ফিরিয়ে নেবার খবরে শেয়ারবাজারগুলোতে তাৎক্ষণিকভাবে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে তলানিতে পড়ে থাকার পর রাশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার ও রুশ মুদ্রা রুবলের বিনিময় মূল্য হঠাৎ করে অনেকটা বেড়ে গেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি বন্ডের দামও অনেকটা বেড়েছে।
তবে ইউক্রেন রাশিয়ার তৎপরতা নিয়ে এখনো সন্দিহান। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, রাশিয়া সত্যিই সৈন্য সরাচ্ছে তা চোখে দেখার পর তারা বলতে পারবেন উত্তেজনা কমবে কি না। রুশ ফেডারেশনের কাছ থেকে আমরা নানা সময় নানা বিবৃতি শুনছি। সুতরাং আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা যা চোখে দেখবো শুধু সেটাই বিশ্বাস করবো।
ইউক্রেনের মতো ন্যাটো দেশগুলোও রাশিয়ার এই পদক্ষেপ নিয়ে সন্দিহান।
জন হপকিন্স স্কুল অব অ্যাডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক সের্গেই রাদচেঙ্কো বলেছেন, রাশিয়া সবসময়ই বলেছে তারা কাউকেই হুমকি দিচ্ছে না এবং তাদের সৈন্যরা শুধু মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। তিনি মনে করেন, এটি প্রেসিডেন্ট পুতিনের নতুন এক কৌশল। -বিবিসি
হককথা/এমউএ