নিউইয়র্ক ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া একে অন্যের ওপর গুলি চালালে সেটা বিশ্বযুদ্ধ‌‌‌‌’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৩২:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৭৯ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক : সব যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিককে অবিলম্বে ইউক্রেন ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সেখানে রুশ সামরিক হামলার আশংকা আরও বেড়ে গেছে। মস্কো যদি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের উদ্ধারে তিনি সেখানে কোনও সৈন্য পাঠাবেন না।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ওই অঞ্চলে পরিস্থিতি খুব দ্রুতই বেশ চরম দিকে মোড় নিতে পারে। যখন যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া একে অন্যের দিকে গুলি চালায়, তখন সেটা একটা বিশ্বযুদ্ধ।
ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখের বেশি সেনা মোতায়েনের পরও রাশিয়া দাবি করছে, তাদের ইউক্রেনে অভিযান চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। কিন্তু প্রতিবেশী বেলারুশের সঙ্গে রাশিয়া এখন এক বিরাট সামরিক মহড়া শুরু করেছে। অপরদিকে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, তাদের সাগরে ঢোকার পথ অবরোধ করে রেখেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার বলছে, ইউক্রেন যাতে ন্যাটো জোটে যোগ দিতে না পারে, সেজন্যে তারা যে রেড লাইন বেঁধে দিয়েছে, সেটিই তারা নিশ্চিত করতে চায়। ইউক্রেন এক সময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে রাশিয়া এমন নিশ্চয়তা চাইছে, এই দেশ যেন ন্যাটো জোটের সদস্য হতে না পারে।
এই চরম সামরিক উত্তেজনার মধ্যে ইউরোপ এখন যে নিরাপত্তা সংকটের মুখে, তাকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট বলে অভিহিত করেছেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এনবিসি নিউজকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের এখনই ইউক্রেন ছাড়া উচিৎ। আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় এক সামরিক বাহিনীর মোকাবেলা করছি। পরিস্থিতি খুবই সংকটজনক এবং যেকোনও সময় চরম দিকে মোড় নিতে পারে।
বাইডেনকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এরকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে কি না যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের উদ্ধারে তাকে সৈন্য পাঠানোর নির্দেশ দিতে হতে পারে।
এমন সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, না, নেই। যখন যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া একে অন্যের দিকে গুলি চালায়, তখন সেটা একটা বিশ্বযুদ্ধ। আমরা একেবারেই অন্য এক ধরনের বিশ্বে আছি, যেটা আমরা আগে কখনো দেখিনি।
এদিকে ইউক্রেনকে ঘিরে উত্তেজনা কমাতে তীব্র কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা করে, পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সংঘাত থামানোর জন্য ফরাসি ও জার্মান কূটনীতিকদের সঙ্গে নয় ঘণ্টা ধরে আলোচনায় কোনও অগ্রগতি হয়নি।
ইউক্রেনের দূত অ্যান্ড্রি ইয়েরমাক বলেন, যদিও অনেক বিষয়ে মতবিরোধ রয়ে গেছে, তারপরও আলোচনা চালিয়ে যাওয়া ও আলোচনা করার ইচ্ছা এখনো আছে।
গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের বৈঠকটি হয়েছিল বেশ শীতল পরিবেশে। লাভরভ বলেছিলেন, দুই দেশের সম্পর্ক গত কয়েক বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। আর লিজ ট্রাস অভিযোগ করেছিলেন, রাশিয়া স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের মতো বিতণ্ডা শুরু করেছে।
এদিকে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, রাশিয়া একটি নৌমহড়ার প্রস্তুতি নেয়ার পর তাদের সাগরে যাওয়ার পথ অবরোধ করে রেখেছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেছেন, আযভ সাগরের পথ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে কৃষ্ণ সাগরের পথও রুশ বাহিনী প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।
রাশিয়ার নৌমহড়া সামনের সপ্তাহে আযভ সাগর ও কৃষ্ণ সাগরে শুরু হবে। এই মহড়ার সময় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা ছোঁড়া হবে বলে উপকূলীয় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যে রকম বিশাল অঞ্চল জুড়ে অভূতপূর্বভাবে এই মহড়া চালানো হবে, তার ফলে এই দুটি সাগরে নৌ চলাচল কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেস্কি রেজনিকভ টুইট করে বলেছেন, এই দুটি সাগর রাশিয়া অবরোধ করে রেখেছে।
আশংকা করা হচ্ছে, এই মহড়ার মাধ্যমে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের এতটাই কাছে থাকবে যে, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে অভিযান চালানোর চেষ্টা করে, তখন কিয়েভে হামলা চালানো তাদের জন্য খুব সহজ হবে।
তবে রাশিয়া বলছে, তাদের সৈন্যরা মহড়া শেষে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে আসবে। -বিবিসি
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‘যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া একে অন্যের ওপর গুলি চালালে সেটা বিশ্বযুদ্ধ‌‌‌‌’

প্রকাশের সময় : ০১:৩২:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

হককথা ডেস্ক : সব যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিককে অবিলম্বে ইউক্রেন ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সেখানে রুশ সামরিক হামলার আশংকা আরও বেড়ে গেছে। মস্কো যদি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের উদ্ধারে তিনি সেখানে কোনও সৈন্য পাঠাবেন না।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ওই অঞ্চলে পরিস্থিতি খুব দ্রুতই বেশ চরম দিকে মোড় নিতে পারে। যখন যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া একে অন্যের দিকে গুলি চালায়, তখন সেটা একটা বিশ্বযুদ্ধ।
ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখের বেশি সেনা মোতায়েনের পরও রাশিয়া দাবি করছে, তাদের ইউক্রেনে অভিযান চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। কিন্তু প্রতিবেশী বেলারুশের সঙ্গে রাশিয়া এখন এক বিরাট সামরিক মহড়া শুরু করেছে। অপরদিকে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, তাদের সাগরে ঢোকার পথ অবরোধ করে রেখেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার বলছে, ইউক্রেন যাতে ন্যাটো জোটে যোগ দিতে না পারে, সেজন্যে তারা যে রেড লাইন বেঁধে দিয়েছে, সেটিই তারা নিশ্চিত করতে চায়। ইউক্রেন এক সময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে রাশিয়া এমন নিশ্চয়তা চাইছে, এই দেশ যেন ন্যাটো জোটের সদস্য হতে না পারে।
এই চরম সামরিক উত্তেজনার মধ্যে ইউরোপ এখন যে নিরাপত্তা সংকটের মুখে, তাকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট বলে অভিহিত করেছেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এনবিসি নিউজকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের এখনই ইউক্রেন ছাড়া উচিৎ। আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় এক সামরিক বাহিনীর মোকাবেলা করছি। পরিস্থিতি খুবই সংকটজনক এবং যেকোনও সময় চরম দিকে মোড় নিতে পারে।
বাইডেনকে জিজ্ঞাসা করা হয়, এরকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে কি না যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের উদ্ধারে তাকে সৈন্য পাঠানোর নির্দেশ দিতে হতে পারে।
এমন সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, না, নেই। যখন যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া একে অন্যের দিকে গুলি চালায়, তখন সেটা একটা বিশ্বযুদ্ধ। আমরা একেবারেই অন্য এক ধরনের বিশ্বে আছি, যেটা আমরা আগে কখনো দেখিনি।
এদিকে ইউক্রেনকে ঘিরে উত্তেজনা কমাতে তীব্র কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা করে, পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সংঘাত থামানোর জন্য ফরাসি ও জার্মান কূটনীতিকদের সঙ্গে নয় ঘণ্টা ধরে আলোচনায় কোনও অগ্রগতি হয়নি।
ইউক্রেনের দূত অ্যান্ড্রি ইয়েরমাক বলেন, যদিও অনেক বিষয়ে মতবিরোধ রয়ে গেছে, তারপরও আলোচনা চালিয়ে যাওয়া ও আলোচনা করার ইচ্ছা এখনো আছে।
গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের বৈঠকটি হয়েছিল বেশ শীতল পরিবেশে। লাভরভ বলেছিলেন, দুই দেশের সম্পর্ক গত কয়েক বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। আর লিজ ট্রাস অভিযোগ করেছিলেন, রাশিয়া স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের মতো বিতণ্ডা শুরু করেছে।
এদিকে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, রাশিয়া একটি নৌমহড়ার প্রস্তুতি নেয়ার পর তাদের সাগরে যাওয়ার পথ অবরোধ করে রেখেছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বলেছেন, আযভ সাগরের পথ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে কৃষ্ণ সাগরের পথও রুশ বাহিনী প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।
রাশিয়ার নৌমহড়া সামনের সপ্তাহে আযভ সাগর ও কৃষ্ণ সাগরে শুরু হবে। এই মহড়ার সময় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা ছোঁড়া হবে বলে উপকূলীয় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যে রকম বিশাল অঞ্চল জুড়ে অভূতপূর্বভাবে এই মহড়া চালানো হবে, তার ফলে এই দুটি সাগরে নৌ চলাচল কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেস্কি রেজনিকভ টুইট করে বলেছেন, এই দুটি সাগর রাশিয়া অবরোধ করে রেখেছে।
আশংকা করা হচ্ছে, এই মহড়ার মাধ্যমে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের এতটাই কাছে থাকবে যে, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে অভিযান চালানোর চেষ্টা করে, তখন কিয়েভে হামলা চালানো তাদের জন্য খুব সহজ হবে।
তবে রাশিয়া বলছে, তাদের সৈন্যরা মহড়া শেষে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে আসবে। -বিবিসি
হককথা/এমউএ