নিউইয়র্ক ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রোনাল্ডোর ঘরে ফেরা মেসি ঘরছাড়া

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৫২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৫৩ বার পঠিত

ক্রীড়া ডেস্ক : বার্সেলোনার লিওনেল মেসি ও রিয়াল মাদ্রিদের সের্হিও রামোস এখন পিএসজির জার্সিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেন! মেসি ও রামোসের অভাবনীয় বন্ধুত্বের মতো অনেক অবিশ্বাস্য ও চমকপ্রদ ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ২০২১ সাল। ফুটবলের বছর শেষের সালতামামিতে ইতিহাসের পাতায় দাগ কেটে যাওয়া মুহূর্তগুলো আরেকবার দেখে নেওয়া যাক।

চমকে ঠাসা ফুটবলের বিদায়ি বছরটা সব ছাপিয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবে মেসির স্বপ্নপূরণ বা দুঃখ মোচনের বছর হিসাবে। আধুনিক ফুটবলের অন্যতম দিকপাল এ বছর আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকা জিতিয়ে দেশের জার্সিতে কিছু জিততে না পারার চির আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন। সেটাও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে তাদের মাঠে হারিয়ে। ক্লাব ফুটবলে গত মৌসুমে বড় কোনো দলীয় সাফল্য না থাকলেও কোপা জয়ের সুবাদে গত ২৯ নভেম্বর মেসির হাতেই উঠেছে বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার। বায়ার্ন মিউনিখের গোলমেশিন রবার্ট লেওয়ানডোস্কিকে হারিয়ে রেকর্ড সপ্তম ব্যালন ডি’অর জিতেছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। বছরজুড়ে আলোচনায় ছিলেন মেসি। জুনে কোপা জয়ের পর প্রাণের ক্লাব বার্সেলোনা ছেড়ে তার পিএসজিতে পাড়ি জমানো আলোড়ন তুলেছিল গোটা বিশ্বে। চরম আর্থিক সংকটের কারণে ক্লাবের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে পারেনি বার্সা। মেসিকে হারিয়ে ডুবতে বসা দলকে উদ্ধার করতে ক্লাব কিংবদন্তি জাভি হার্নান্দেজকে কোচ হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে কাতালানরা।

গত গ্রীষ্মের পাগুলে দলবদলে মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও জুভেন্টাস ছেড়ে পুরোনো ঠিকানা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরে চমকে দেন সবাইকে। রোনাল্ডোকে দলে টেনেও অবশ্য চাকরি বাঁচাতে পারেননি ম্যানইউ কোচ ওলে গুনার সুলশার। রোনাল্ডোর জন্য বছরটা ছিল অম্লমধুর। ইরানের আলী দাইকে ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড নিজের করে নেওয়ার পাশাপাশি ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ৮০০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। মুদ্রার উলটো পিঠে আছে ইউরো থেকে শূন্য হাতে ফেরা ও ২০২২ বিশ্বকাপের ট্রেন মিসের শঙ্কা।

জুনে ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়ে পাঁচ দশক পর ইউরো জেতা ইতালির অবস্থাও রোনাল্ডোর পর্তুগালের মতো। ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইপর্র্ব থেকে সরাসরি কাতার বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারেনি ইতালি ও পর্তুগাল। সুযোগ অবশ্য এখনো আছে। সেজন্য

প্লে-অফের অগ্নিপরীক্ষায় উতরাতে হবে। সমস্যা হলো প্লে-অফের একই অর্ধে থাকায় ইতালি ও পর্তুগালের মধ্যে যে কোনো এক দলের বিদায় নিশ্চিত। ইতালির হয়ে ইউরো জেতার আগে চেলসির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে বড় ভূমিকা রাখায় উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছেন জর্জিনিও। বুন্দেসলিগায় এক মৌসুমে ও এক বছরে জার্ড মুলারের সর্বোচ্চ গোলের জোড়া রেকর্ড ভাঙা লেওয়ানডোস্কি জিতেছেন ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু। ইউরোতে ব্যর্থ হলেও উয়েফা নেশন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এমবাপ্পে ও বেনজেমার ফ্রান্স।

ইউরোর একটি ম্যাচে মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ডেনমার্কের ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরা বিদায় বছরের আরেকটি আলোচিত ঘটনা। হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে ফুটবলকে বিদায় জানাতে বাধ্য হয়েছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড সের্হিও আগুয়েরো। মাঠের বাইরে ঝড় তুলেছিল বিদ্রোহী টুর্নামেন্ট ইউরোপিয়ান সুপার লিগ চালুর ঘোষণা। তবে ফিফা ও উয়েফার বাধার মুখে আলোর মুখ দেখার আগেই ভেস্তে যায় সুপার লিগ প্রকল্প। ফুটবল বাঁচাতে সুপার লিগের বিরুদ্ধে এক জোট হলেও দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে ফিফা ও উয়েফা। এবার ফিফার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে জোট বেঁধেছে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকা। দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রশ্নে এই বিভক্তি ফুটবলের জন্য অশনিসংকেত।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

রোনাল্ডোর ঘরে ফেরা মেসি ঘরছাড়া

প্রকাশের সময় : ০৭:৫২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

ক্রীড়া ডেস্ক : বার্সেলোনার লিওনেল মেসি ও রিয়াল মাদ্রিদের সের্হিও রামোস এখন পিএসজির জার্সিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেন! মেসি ও রামোসের অভাবনীয় বন্ধুত্বের মতো অনেক অবিশ্বাস্য ও চমকপ্রদ ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ২০২১ সাল। ফুটবলের বছর শেষের সালতামামিতে ইতিহাসের পাতায় দাগ কেটে যাওয়া মুহূর্তগুলো আরেকবার দেখে নেওয়া যাক।

চমকে ঠাসা ফুটবলের বিদায়ি বছরটা সব ছাপিয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবে মেসির স্বপ্নপূরণ বা দুঃখ মোচনের বছর হিসাবে। আধুনিক ফুটবলের অন্যতম দিকপাল এ বছর আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকা জিতিয়ে দেশের জার্সিতে কিছু জিততে না পারার চির আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন। সেটাও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে তাদের মাঠে হারিয়ে। ক্লাব ফুটবলে গত মৌসুমে বড় কোনো দলীয় সাফল্য না থাকলেও কোপা জয়ের সুবাদে গত ২৯ নভেম্বর মেসির হাতেই উঠেছে বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার। বায়ার্ন মিউনিখের গোলমেশিন রবার্ট লেওয়ানডোস্কিকে হারিয়ে রেকর্ড সপ্তম ব্যালন ডি’অর জিতেছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। বছরজুড়ে আলোচনায় ছিলেন মেসি। জুনে কোপা জয়ের পর প্রাণের ক্লাব বার্সেলোনা ছেড়ে তার পিএসজিতে পাড়ি জমানো আলোড়ন তুলেছিল গোটা বিশ্বে। চরম আর্থিক সংকটের কারণে ক্লাবের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে পারেনি বার্সা। মেসিকে হারিয়ে ডুবতে বসা দলকে উদ্ধার করতে ক্লাব কিংবদন্তি জাভি হার্নান্দেজকে কোচ হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে কাতালানরা।

গত গ্রীষ্মের পাগুলে দলবদলে মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও জুভেন্টাস ছেড়ে পুরোনো ঠিকানা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরে চমকে দেন সবাইকে। রোনাল্ডোকে দলে টেনেও অবশ্য চাকরি বাঁচাতে পারেননি ম্যানইউ কোচ ওলে গুনার সুলশার। রোনাল্ডোর জন্য বছরটা ছিল অম্লমধুর। ইরানের আলী দাইকে ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড নিজের করে নেওয়ার পাশাপাশি ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ৮০০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। মুদ্রার উলটো পিঠে আছে ইউরো থেকে শূন্য হাতে ফেরা ও ২০২২ বিশ্বকাপের ট্রেন মিসের শঙ্কা।

জুনে ইংল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়ে পাঁচ দশক পর ইউরো জেতা ইতালির অবস্থাও রোনাল্ডোর পর্তুগালের মতো। ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইপর্র্ব থেকে সরাসরি কাতার বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারেনি ইতালি ও পর্তুগাল। সুযোগ অবশ্য এখনো আছে। সেজন্য

প্লে-অফের অগ্নিপরীক্ষায় উতরাতে হবে। সমস্যা হলো প্লে-অফের একই অর্ধে থাকায় ইতালি ও পর্তুগালের মধ্যে যে কোনো এক দলের বিদায় নিশ্চিত। ইতালির হয়ে ইউরো জেতার আগে চেলসির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে বড় ভূমিকা রাখায় উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছেন জর্জিনিও। বুন্দেসলিগায় এক মৌসুমে ও এক বছরে জার্ড মুলারের সর্বোচ্চ গোলের জোড়া রেকর্ড ভাঙা লেওয়ানডোস্কি জিতেছেন ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু। ইউরোতে ব্যর্থ হলেও উয়েফা নেশন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এমবাপ্পে ও বেনজেমার ফ্রান্স।

ইউরোর একটি ম্যাচে মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ডেনমার্কের ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরা বিদায় বছরের আরেকটি আলোচিত ঘটনা। হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে ফুটবলকে বিদায় জানাতে বাধ্য হয়েছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড সের্হিও আগুয়েরো। মাঠের বাইরে ঝড় তুলেছিল বিদ্রোহী টুর্নামেন্ট ইউরোপিয়ান সুপার লিগ চালুর ঘোষণা। তবে ফিফা ও উয়েফার বাধার মুখে আলোর মুখ দেখার আগেই ভেস্তে যায় সুপার লিগ প্রকল্প। ফুটবল বাঁচাতে সুপার লিগের বিরুদ্ধে এক জোট হলেও দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে ফিফা ও উয়েফা। এবার ফিফার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে জোট বেঁধেছে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকা। দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রশ্নে এই বিভক্তি ফুটবলের জন্য অশনিসংকেত।