মধ্যরাতে মেয়েদের হোস্টেলে চিতাবাঘ, আহত ১৫

- প্রকাশের সময় : ০৬:৫১:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
- / ৫৫ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মেয়েদের হোস্টেলে মধ্যরাতে ঢুকে পড়ল একটি চিতাবাঘ। রোববার মধ্যরাতে ভারতের উত্তর প্রদেশের লখনউ শহরের ইন্টিগ্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডিস হোস্টেলে ওই ঘটনায় চিতাবাঘটিকে তাড়াতে গিয়ে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। পরে চিতাবাঘটিকে ধরতে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও সোমবার সকাল পর্যন্ত তার নাগাল পাওয়া যায়নি। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।
লখনউয়ের রাস্তায় গত দু’দিন ধরেই ঘুরে বেড়াচ্ছে চিতাবাঘটি। বড়দিনের রাতে সিসিটিভি ক্যামেরায় প্রথম তার ছবি ধরা পড়ে। তারপর থেকে লখনউয়ের পাহাড়পুর, আদিলনগর, কল্যাণপুর এলাকায় বারবার বার দেখা গেছে চিতাবাঘটিকে। যদিও তাকে ধরার সব রকম চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে চিতাবাঘের হামলার ভয়ে উৎসবের মৌসুমে বাধ্য হয়েই ঘরবন্দি হয়েছেন নবাবনগরীর বাসিন্দারা।
আতঙ্ক এতোটাই ছড়িয়েছে যে ‘বাঘ’ তাড়াতে কেউ বাড়ির ভেতরেই তারস্বরে গান বাজিয়েছেন। কেউ আবার গলা ছেড়ে পড়েছেন হনুমান চালিসা। কল্যাণপুরের সীমান্তনগরের অঞ্জু যাদব জানিয়েছেন, তার ৫ বছরের সন্তান বাড়ির বাইরে খেলা করছিল। তিনি ছিলেন ঘরের ভেতরে। ঠিক তখনই কেউ চিৎকার করে বলে তাদের কলোনিতে একটি চিতাবাঘ ঢুকে পড়েছে।
অঞ্জুর কথায়, ‘মুহূর্তের মধ্যে কী যেন একটা হয়ে যায়। আমার স্বামী ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। আমি প্রচণ্ড ভয়ে চিৎকার করে হনুমান চালিসা আওড়াতে শুরু করি।’
বিহারী মার্গের কাঞ্চনায় বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন অনিতা সিং। তার বাড়িও কল্যাণপুরে। অনিতা জানিয়েছেন, বিয়েবাড়ি থেকে বাড়িতে ফেরার জন্য একটি অটোও পাননি তিনি। শেষে এক ট্যাক্সিচালক মোটা টাকা ভাড়ার বিনিময়ে যেতে রাজি হন। কিন্তু সেই ট্যাক্সিও বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে কোনও মতে তাকে নামিয়েই উল্টো দিকে দৌড়ায়।
অনিতা জানিয়েছেন, ওই রাস্তাটুকু প্রায় প্রাণ হাতে করে হেঁটেছেন তিনি। বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে উচ্চগ্রামে গান চালিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে আওয়াজ শুনে চিতাবাঘটি তার বাড়ির ধারেপাশে না ঘেঁষে।
জানকিপুরমের পাহাড়পুর এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য কোনও ঝুঁকি নেননি। চিতাবাঘটি ঘোরাফেরা করার খবর শুনে সেখানকার অনেকেই আগামী কয়েকদিনের বাড়িতে থাকার রসদ জুটিয়ে ঘরবন্দি হয়েছেন। উৎসবের মৌসুমে বাড়ির বাইরে বের হতে না পারা এক রকম শাস্তিই। কিন্তু জানকিপুরমের রাশি জওহরির বক্তব্য, আনন্দ আগে না জীবন আগে!
এরই মধ্যে ২৬ ডিসেম্বর রাতে খবর আসে কল্যাণপুর এলাকা লখনউয়ের ইন্টিগ্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হোস্টেলে ঢুকে পড়েছে চিতাবাঘটি। রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ঘটে ঘটনাটি।
মাঝরাতে হইচই পড়ে যায় হোস্টেলে। চিতাবাঘটিকে ধরতে গিয়ে ১৫ জন জখম হন বলেও খবর। পরে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন। তবে সোমবার সকাল পর্যন্ত চিতাবাঘটি ধরা পড়েছে বলে কোনও খবর আসেনি।