আ.লীগের বিরোধীতায় সাংবাদিক সম্মেলন পন্ড : কি ছিলো রিজভীর লিখিত বক্তব্যে
- প্রকাশের সময় : ১১:১৪:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ ২০১৫
- / ১১৪২ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তাঁর আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজিদ জয়-এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিএনপি ও কেন্দ্রীয় জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের পুত্র রিজভী আহমেদ সিজার ৩০০ মিলিয়ন ডলার দূর্নীতর অভিযোগ এনেছেন। এফবিআই কর্মকর্তাকে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে দেশের এক শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতার ‘গোপন তথ্য’ উদঘাটনের জন্য অসুদুপায় অবলম্বনের দায়ে অভিযুক্ত সিজারের ৪২ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ঘটনাটি টক অব দ্য কমিউনিটি পেরিয়ে টক অব দ্য বাংলাদেশ এমনকি টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড-এ পরিণত হয়েছে। জয়-কে ঘিরে সিজারের চাঞ্চল্যকর অভিযোগের ঘটনায় চরম ক্ষুদ্ধ আওয়ামী পরিবারের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী। সজিব ওয়াজেদ জয়ের কথিত ৩০০ মিলিয়ন ডলার দূর্নীতি বিষয়ে রিজভী আহমেদ সিজার-এর পক্ষ থেকে গত ১৫ মার্চ জ্যাকসন হাইটসে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রিজভীর সাংবাদিক সম্মেলন শুরুর পর পরই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ-যুবলীগ সহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের চরম বিরোধীতার মুখে শেষ পর্যন্ত রিজভীর সাংবাদিক সম্মেলন পন্ড হয়ে যায় এবং রিজভী স্থ্যান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। তবে ঐ সাংবাদিক সম্মেলনে (বিলিকৃত রিজভীর লিখিত বক্তব্য যা আওয়ামী লীগের বিরোধীতকার কারণে রিজভী পাঠ করতে পারেননি) সাংবাদিকদের কাছে প্রদত্ত লিখিত বক্তব্যে কি ছিলো তা হককথা’র পাঠকদের জন্য নি¤েœ হুবহু তুলে ধরা হলো।
রিজভী আহমেদ সিজারের বক্তব্য
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,
আসসালামু আলাইকুম। আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য আপনাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নিউইয়র্ক ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজিদ জয় ও আমাকে নিয়ে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যার সাথে কোন কোন ক্ষেত্রে বাস্তবতার মিল নেই বলেই আপনাদের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশীসহ দেশবাসীর কাছে বাস্তব সত্য তুলে ধরতে চাই।
কোন কোন পত্রিকায় আদালতের মূল রায়কে পাশ কাটিয়ে আমার প্রতিপক্ষের কিছু উদ্দেশ্যমূলক অযথা বক্তব্যকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে কিছু অসত্য তথ্য পরিবেশিত করেছে। আমি সরাসরি বলতে চাই জয় কিংবা তার পরিবারের কাউকে অপহরণ কিংবা তাদের কোন ক্ষতি করার অথবা তাদেরকে ভীতি প্রর্দশনের কোন কথা আদালতে কোন পর্যায়ে আমি বলিনি, স্বীকারোক্তি তো দূরের কথা। এগুলো আদালতের বিজ্ঞ বিচারক যুক্তি দেখিয়েছেন, যেহেতু এসব প্রমাণের জন্য কোন লিখিত কাগজ, বিংবা এসব কথা যে বলা হয়েছে তার কোন সিডি বা অন্যকোন প্রামাণিক দলিল তারা আদালতে উপস্থাপন করতে পারেন নি, তাই এ ধরণের বক্তব্যকে কোনভাবেই বিজ্ঞ বিচারক অভিযোগ হিসেবে আমলে নেন নি। অথচ কোন কোন সংবাদপত্রে সেগুলো আমার স্বীকারোক্তি হিসেবে ছাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা সত্যিই দু:খজনক। আমি আশা করি আমার এই বক্তব্যের পর সংশ্লিষ্ট পত্রিকাগুলো আমার অবস্থহানকে যথাযথভাবে তুলে ধরে সত্য প্রকাশে উদ্যোগী হবেন।
বিজ্ঞ সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আমাদের দেশ অত্যন্ত গরীব। এই গরীব দেশের নি:স্ব নিরন্ন মানুষের অর্থ লুন্ঠিত হচ্ছে। আমাদের দেশে এমন কিছু ব্যক্তি আছেন, যারা ‘মুখে মুখে বাস্তবে মহা ডাকাত’। তারা কিভাবে দেশকে লুন্ঠন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবিশ্বাস্য ধরনের বিশাল অংকের অর্থ সঞ্চয় করেছেন তেমন কিছু কথা গল্পচ্ছলে জানতে পেরে আমি ভীষণ দু:খ পাই। তাদের এই মহা ডাকাতি আমার মনে কৌতুহল সৃষ্টি করে। আমার বিবেককে নাড়া দেয়, আমাকে ক্ষুদ্ধ করে। তাই স্বদেশের প্রতি একান্ত ভালবাসার টানে স্বত:প্রণোদিত হয়ে এসব লুটেরাদের অন্যতম মোড়ল সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্যাপারের খোঁজ খবর সংগ্রহে মনোনিবেশ করি। সে প্রচেষ্টায় যতটুকু তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে, তাতেই আমি খুশি। রায়ে আমার সাফল্য সম্পর্কে আদালত আকারে ইঙ্গিতে মন্তব্য করেছেন। ঐখানে ৩০০ মিলিয়ন ডালারের দুনীর্তির স্পষ্ট উল্লেখ আছে। সুতরাং জয় সম্পর্কে কিভাবে বাংলাদেশে অর্থ বাইরে নিয়ে গেছেন তা প্রমাণের জন্য আর কোন দলিলের প্রয়োজন নেই বলে আমি মনে করি। আদালতের রায়ে তা স্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মহা ডাকাতদের মুখোশ উন্মোচন করতে পেরে আমি যথেষ্ট গর্বিত। যেসব রেকর্ড সংগৃহীত হয়েছে মহা ডাকাতদের আইনের আওতায় আনার জন্য তাই যথেষ্ট বলে আমি মনে করি। দেশের জন্য আমি একটি বড় কাজ করতে সংক্ষম হয়েছি। এজন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আপনাদের মাধ্যমে আমার অবস্থান সংক্ষিপ্তকারে তুলে ধরার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আপনাদের উপস্থিতি আমাকে কৃতজ্ঞ করেছে। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন আমার ফেলে আসা জন্মভূমির সেবা করবার মত ধৈর্য ও সাহস অর্জন করতে পারি। আল্লাহ আপনাদের সহায় হোন। আল্লাহ হাফেজ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
আপনাদের মনমুগ্ধ
রিজভী আহমেদ
কানেকটিকাট, ইউএসএ।
তারিখ ১৫ মার্চ, ২০১৫