নিউইয়র্ক ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আর নেই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৫৪:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অগাস্ট ২০২১
  • / ৮৬ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক: হেফাজতে ইসলামের আমীর ও দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক, শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১৯ আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় তিনি চট্টগ্রাম নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল সিএসসিআর-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপের কারণে তিনি অনেকটা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিএসসিআর-এ ভর্তি করা হয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরীস বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও হুজুরের নিয়মিত চেকআপে সবকিছু ঠিক ছিল। তবে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টায় হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপের কারণে তিনি অনেকটা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। তাকে বেলা বারোটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর সিএসসিআর-এ ভর্তি করা হয়। তিনি ডাক্তার ইব্রাহিমের তত্ত¡াবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রথমে সাধারণ ওয়ার্ড ও পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত ৭৩ বছর বয়সী আল্লামা বাবুনগরী বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। হযরত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (রহ.) ১৯৫৩ সালে ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট বাবুনগর এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হযরত আল্লামা মরহুম আবুল হাসান (রহ.)। তিনি ৫ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তিনি আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর মাধ্যমিক স্তর থেকে শুরু করে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায়। তারপর পাকিস্তানের দারুল উলূম আল্লামা বিন্নুরি টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ইলমে হাদিসের উপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। পরবর্তীতে আজিজুল উলূম বাবুনগর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস পদে শিক্ষকতায় যোগদান করেন। ২০০৫ সালে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস পদে যোগদান করেন। ২০১৭ সালে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের শায়খুল হাদিস পদে পদোন্নতি পান। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রহ.) ইন্তেকালের পর তিনি দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিবের দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রহ.) ইন্তেকালের পর ২০২০ সালের নভেম্বরের ১৫ তারিখ হেফাজত আমীর পদে মনোনীত হন।
ফটিকছড়ির ‘শওক সাহেব’ যেভাবে বাবুনগরী হয়ে ওঠেন: ২০১০ সালের হেফাজত গঠনের সময়ও পরিচিত ছিলেন না জোনায়েদ বাবুনগরী। তবে মাওলানা শওক সাহেব নামে উত্তর চট্টগ্রামে একজন ভালো ওয়ায়েজ হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। পাশাপাশি ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। আর ইসলামী রাজনৈতিক দল নেজামে ইসলাম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে বাবুনগর মাদ্রাসা ছেড়ে হাটহাজারী মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান ও আল্লামা শফীর হেফাজতে ইসলাম গঠনের পর পাল্টে যান তিনি। সারা দেশের মানুষের কাছে জোনায়েদ বাবুনগরী নামে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান এই আলেম।
জানা যায়, ছাত্রজীবন শেষে ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর ছাত্ররা তাকে শওক সাহেব নামে ডাকতে থাকেন। আরবি শাওকুন অর্থাৎ আগ্রহী থেকে তার নাম এই শওক রাখা হয়। হেফাজতের মহাসচিব হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এই নামেই ফটিকছড়িসহ চট্টগ্রামে পরিচিত ছিলেন। পরে নিজের নানার প্রতিষ্ঠিত বাবুনগর মাদ্রাসায় পরিচালকের সঙ্গে মতানৈক্যের কারণে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে তিনি দেশের বৃহত্তর কওমি হাটহাজারী মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
এদিকে যোগদানের অল্পদিনেই হাটহাজারী মাদ্রাসায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেন জোনায়েদ বাবুনগরী। হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে বাবুনগরী এর প্রথম সারির নেতা হয়ে ওঠেন। আলেমদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকায় ২০১৩ সালে তাকে সংগঠনটির মহাসচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। মূলত এরপরই দেশ বিদেশে পরিচিত হয়ে ওঠেন বাবুনগরী। সর্বশেষ শাপলা চত্বরের ঘটনার পর সারা দেশের রাজনীতিতে আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি।
জানা যায়, বাবুনগরী ২০১৭ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস পদে পদোন্নতি পান। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রাহ.) ইন্তেকালের পর তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষাসচিব পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিবের দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রাহ.) ইন্তেকালের পর ২০২০ সালের নভেম্বরের ১৫ তারিখ হেফাজত আমীর পদে মনোনীত হন।
শায়খুল হাদীস আল্লামা বাবুনগরী ১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবুল হাসান নদভী ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম হাদিস বিশারদ ও দারুল উলুম দেওবন্দের মুহাদ্দিস। তার নানা আল্লামা হারুন বাবুনগরী ছিলেন দেশের সেই সময়ের শীর্ষ আলেম ও বাবুনগর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা।
আল্লামা বাবুনগরী ছিলেন একজন ইসলামী পন্ডিত, শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক। হেফাজত আমীরের পাশাপাশি তিনি দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব ও শায়খুল হাদিস, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম নূরানী তালীমুল কোরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। আপসহীন ব্যক্তিত্বের কাছে কওমি আলেমদের মধ্যে তার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা ছিল।
শীর্ষ হাদিস বিশারদের পাশাপাশি বাবুনগরী একজন প্রসিদ্ধ লেখক ছিলেন। তার লেখা কয়েকটি বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সীরাতুল ইমামিদ দারিমী ওয়াত তারিখ বি শায়খিহী (১৯৭৮), বিশ্ববরেণ্য মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে ইমাম আবু হানিফা, তালীমুল ইসলাম (আরবি), বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত, ইসলামে দাড়ির বিধান, তাওহীদ ও শিরক: প্রকার ও প্রকৃতি, জোনায়েদ বাবুনগরীর রচনাসমগ্র: ইলমে হাদিসের ভূমিকা, খুতবার ভাষা, মহাগ্রন্থ আল কোরআন ও বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স.)। (মানবজমিন)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আর নেই

প্রকাশের সময় : ০১:৫৪:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অগাস্ট ২০২১

ঢাকা ডেস্ক: হেফাজতে ইসলামের আমীর ও দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক, শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১৯ আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় তিনি চট্টগ্রাম নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল সিএসসিআর-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপের কারণে তিনি অনেকটা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিএসসিআর-এ ভর্তি করা হয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরীস বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও হুজুরের নিয়মিত চেকআপে সবকিছু ঠিক ছিল। তবে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টায় হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপের কারণে তিনি অনেকটা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। তাকে বেলা বারোটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর সিএসসিআর-এ ভর্তি করা হয়। তিনি ডাক্তার ইব্রাহিমের তত্ত¡াবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রথমে সাধারণ ওয়ার্ড ও পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত ৭৩ বছর বয়সী আল্লামা বাবুনগরী বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। হযরত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী (রহ.) ১৯৫৩ সালে ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট বাবুনগর এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হযরত আল্লামা মরহুম আবুল হাসান (রহ.)। তিনি ৫ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তিনি আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর মাধ্যমিক স্তর থেকে শুরু করে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায়। তারপর পাকিস্তানের দারুল উলূম আল্লামা বিন্নুরি টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ইলমে হাদিসের উপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। পরবর্তীতে আজিজুল উলূম বাবুনগর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস পদে শিক্ষকতায় যোগদান করেন। ২০০৫ সালে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস পদে যোগদান করেন। ২০১৭ সালে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের শায়খুল হাদিস পদে পদোন্নতি পান। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রহ.) ইন্তেকালের পর তিনি দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিবের দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রহ.) ইন্তেকালের পর ২০২০ সালের নভেম্বরের ১৫ তারিখ হেফাজত আমীর পদে মনোনীত হন।
ফটিকছড়ির ‘শওক সাহেব’ যেভাবে বাবুনগরী হয়ে ওঠেন: ২০১০ সালের হেফাজত গঠনের সময়ও পরিচিত ছিলেন না জোনায়েদ বাবুনগরী। তবে মাওলানা শওক সাহেব নামে উত্তর চট্টগ্রামে একজন ভালো ওয়ায়েজ হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। পাশাপাশি ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। আর ইসলামী রাজনৈতিক দল নেজামে ইসলাম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে বাবুনগর মাদ্রাসা ছেড়ে হাটহাজারী মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান ও আল্লামা শফীর হেফাজতে ইসলাম গঠনের পর পাল্টে যান তিনি। সারা দেশের মানুষের কাছে জোনায়েদ বাবুনগরী নামে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান এই আলেম।
জানা যায়, ছাত্রজীবন শেষে ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর ছাত্ররা তাকে শওক সাহেব নামে ডাকতে থাকেন। আরবি শাওকুন অর্থাৎ আগ্রহী থেকে তার নাম এই শওক রাখা হয়। হেফাজতের মহাসচিব হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এই নামেই ফটিকছড়িসহ চট্টগ্রামে পরিচিত ছিলেন। পরে নিজের নানার প্রতিষ্ঠিত বাবুনগর মাদ্রাসায় পরিচালকের সঙ্গে মতানৈক্যের কারণে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে তিনি দেশের বৃহত্তর কওমি হাটহাজারী মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
এদিকে যোগদানের অল্পদিনেই হাটহাজারী মাদ্রাসায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেন জোনায়েদ বাবুনগরী। হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে বাবুনগরী এর প্রথম সারির নেতা হয়ে ওঠেন। আলেমদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকায় ২০১৩ সালে তাকে সংগঠনটির মহাসচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। মূলত এরপরই দেশ বিদেশে পরিচিত হয়ে ওঠেন বাবুনগরী। সর্বশেষ শাপলা চত্বরের ঘটনার পর সারা দেশের রাজনীতিতে আলোচিত হয়ে ওঠেন তিনি।
জানা যায়, বাবুনগরী ২০১৭ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস পদে পদোন্নতি পান। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রাহ.) ইন্তেকালের পর তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষাসচিব পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিবের দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রাহ.) ইন্তেকালের পর ২০২০ সালের নভেম্বরের ১৫ তারিখ হেফাজত আমীর পদে মনোনীত হন।
শায়খুল হাদীস আল্লামা বাবুনগরী ১৯৫৩ সালের ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার বাবুনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবুল হাসান নদভী ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম হাদিস বিশারদ ও দারুল উলুম দেওবন্দের মুহাদ্দিস। তার নানা আল্লামা হারুন বাবুনগরী ছিলেন দেশের সেই সময়ের শীর্ষ আলেম ও বাবুনগর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা।
আল্লামা বাবুনগরী ছিলেন একজন ইসলামী পন্ডিত, শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক। হেফাজত আমীরের পাশাপাশি তিনি দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব ও শায়খুল হাদিস, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম নূরানী তালীমুল কোরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। আপসহীন ব্যক্তিত্বের কাছে কওমি আলেমদের মধ্যে তার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা ছিল।
শীর্ষ হাদিস বিশারদের পাশাপাশি বাবুনগরী একজন প্রসিদ্ধ লেখক ছিলেন। তার লেখা কয়েকটি বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সীরাতুল ইমামিদ দারিমী ওয়াত তারিখ বি শায়খিহী (১৯৭৮), বিশ্ববরেণ্য মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে ইমাম আবু হানিফা, তালীমুল ইসলাম (আরবি), বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত, ইসলামে দাড়ির বিধান, তাওহীদ ও শিরক: প্রকার ও প্রকৃতি, জোনায়েদ বাবুনগরীর রচনাসমগ্র: ইলমে হাদিসের ভূমিকা, খুতবার ভাষা, মহাগ্রন্থ আল কোরআন ও বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স.)। (মানবজমিন)