নিউইয়র্ক ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মেয়র ব্লাজিওর ঐতিহাসিক ঘোষণা : নিউইয়র্কের পাবলিক স্কুলে দুই ঈদে ছুটি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৭:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ ২০১৫
  • / ৬৪৫ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: অবশেষে নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন অর্থাৎ দুই ঈদে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৪ বুধবার মার্চ সিটি মেয়র বিল ডি ব্লজিও অনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। মেয়রের এই ঘোষণায় নিউইয়র্ক সিটির মুসলিম-আমেরিকানদের দীর্ঘদিনের একটি প্রত্যাশা পূরণ হলো। এজন্য মুসলিম কমিউনিটির পক্ষ থেকে মেয়র সহ সিটি ও শিক্ষা বোর্ডকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আনন্দের বন্যা বইছে মুসলিম কমিউনিটিতে। খবর ইউএন’র।
নিউইয়র্ক সিটি স্কুল বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলের ১১ লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে এক লাখের মত মুসলমান।৪ মার্চ বুধবার নিউইয়র্ক শিক্ষা বোর্ড সিটির পাবলিক স্কুলসমূহে দুই ঈদের দিন ছুটি ঘোষণার প্রজ্ঞাপণ জারি করে। আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০১৫-২০১৬) অর্থাৎ আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই ছুটি কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলে ইতিপূর্বে খ্রীস্টান ও জুইশদের বিশেষ দিনে ছুটি রয়েছে। স্কুল বোর্ডের ঐ প্রজ্ঞাপণের ফলে সিটি স্কুলের মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীরাও খ্রীস্টান ও জুইসদের মতো ঈদের দু’দিন ছুটি পাবে। শীঘ্রই এই ছুটি স্কুল ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সী, ম্যাসেচুসেটস ও ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন স্কুল ডিস্ট্রিক্টে দুই ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আরো উল্লেখ্য যে, ২০০৯ সালে দুই ঈদের (ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা) দিনকে ছুটি ঘোষণা সংক্রান্ত একটি বিল সিটি কাউন্সিলে পাশ হলেও তৎকালীন মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গের আপত্তির কারণে তা আইনে পরিণত হয়নি। আরো উল্লেখ্য, মুসলিম সম্প্রদায় মহান আল্লাহতায়ালার রাজি-খুশীর জন্য দীর্ঘ এক মাস সিয়াম-সাধনার পর প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল ফিতর আর হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত ‘কোরবানী’ স্মরণে প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল আযহা পালন করে আসছে।
বুধবার সকালে অ্যারাবীয়ান অধ্যুষিত ব্রুকলীনের ব্যারিজ এলাকার একটি সরকারি স্কুলে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত জণাকীর্ণ ঐ অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়ো বলেন, মুসলমানদের দুই ঈদের ছুটি শিক্ষাঙ্গনকে আরো প্রফুল্ল করবে। মেয়র বলেন, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে আমার নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ হলো। ‘বিশ্বের রাজধানী’ খ্যাত বহুজাতিক সংস্কৃতির শহর নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম অভিবাসীদের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক দিন বলে উল্লেখ করেন সিটি মেয়র। মেয়র ব্লাজিও’র এই ঘোষণার সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল মুসলিম সম্প্রদায় আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন।
স্কুল চ্যান্সেলর কারমেন ফারিনা বলেন, সকল ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি আনগত্যবোধ থেকেই দুই ঈদে ছুটি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত ঈদুল আযহার দিন ব্রুকলীনের পিএস/আইএস ৩০ স্কুলে ৩৬ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। তিনি বলেন, ঈদের ছুটির ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় মূলবোধ, সহমর্মিতা আর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পর্কে জানতে পারবে।
নিউইয়র্ক সিটির গত নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় বিজয়ী সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়োর অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল ঈদের ছুটি। ঐ নির্বাচনে সকল মেয়র প্রার্থীর কাছে নিউইয়র্কের মুসলিম কমিউনিটিরও দাবী ছিলো পাবলিক স্কুলে হালার ফুড সরবরাহ আর দুই ঈদের ছুটি। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী-আমেরিকান মুসলিম কমিউনিটির মাফ মিসবাহ উদ্দিন, আব্দুস শহীদ, মাজেদা এ উদ্দিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সর্বশেষ গত ২ মার্চ সোমবার মেয়রের বাসায় নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত ডেমক্র্যাটিক পার্টির সকল কংগ্রেসম্যানের সাথে এক বৈঠকে মেয়রের নির্বাচনী অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন ‘বাংলাদেশী-আমেরিকানদের বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। এর ঠিক দু’দিন পরই সিটির শিক্ষা বিভাগ দুই ঈদের ছুটি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপণ জারি করলো।
এদিকে কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং-এর অফিস থেকে প্রেরীত এক অভিন্দন বার্তায় বলা হয়েছে: গ্রেস মেং মনে করেন ‘দুই ঈদে ছুটির ঘটনা মুসলিম-আমেরিকানদের জন্যেই শুধু নয়, ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাসী প্রতিটি আমেরিকানের জন্যে বড় একটি অর্জনের ঘটনা। সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধনকে এ ঘটনা আরো সংহত করতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।’ বার্তায় গ্রেস মেং বলেন, বহুজাতিক এই শহরে মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবীর পুরণে তিনি নিজেও আনন্দিত। একই সাথে গ্রেস মেং চীনা সম্প্রদায়ের লূনার নিউইয়ার এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দিওয়ালী উৎসবের ছুটিও স্কুলের বার্ষিক ছুটির তালিকায় অন্তর্ভূক্তির আহবান জানান।
সিটির দুই ঈদের ছুটির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক এডভোকেট লেটিটা জেমস । ৪ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই ঘোষণার ফলে বহুজাতিক এই সিটির মূল্যবোধের বহি:প্রকাশ ঘটলো যে, আমরা ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠি নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।’
নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের স্পিকার মেলিসা মার্ক ভিভেরিটো ঈদ ছুটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, নিউইয়র্ক সিটির ৮০ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ১০ লাখের মত মুসলমান। পাবলিক স্কুল সিস্টেমে কতজন মুসলমান ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা না থাকলেও আমি মনে করছি, পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার দিনে স্কুলে ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্তটি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্যে অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।
স্কুল ক্যালেন্ডারে দুই ঈদের দিন ছুটি ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশী-আমেরিকান মুসলিম কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. ওয়াহিদুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ, বাংলাদেশী অ্যামেরিকান পাবলিক অ্যাফেয়ার্স (বাপাফ)-এর সভাপতি সালেহ আহমদ, অ্যাসাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিজবা উদ্দিন, কউিনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আব্দুস শহীদ, এডভোকেট এন মজুমদার, নজরুল হক, জয়নাল আবেদীন, ইঞ্জিনিয়ার কামাল ভূঁইয়া, সাবুল উদ্দিন, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, নারী নেত্রী মাজেদা এ উদ্দিন প্রমুখ। দুই ঈদের দাবীটি আদায়ের জন্যে তারা দীর্ঘদিন যাবত সোচ্চারও ছিলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

মেয়র ব্লাজিওর ঐতিহাসিক ঘোষণা : নিউইয়র্কের পাবলিক স্কুলে দুই ঈদে ছুটি

প্রকাশের সময় : ১০:৪৭:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ ২০১৫

নিউইয়র্ক: অবশেষে নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন অর্থাৎ দুই ঈদে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৪ বুধবার মার্চ সিটি মেয়র বিল ডি ব্লজিও অনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। মেয়রের এই ঘোষণায় নিউইয়র্ক সিটির মুসলিম-আমেরিকানদের দীর্ঘদিনের একটি প্রত্যাশা পূরণ হলো। এজন্য মুসলিম কমিউনিটির পক্ষ থেকে মেয়র সহ সিটি ও শিক্ষা বোর্ডকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আনন্দের বন্যা বইছে মুসলিম কমিউনিটিতে। খবর ইউএন’র।
নিউইয়র্ক সিটি স্কুল বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলের ১১ লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে এক লাখের মত মুসলমান।৪ মার্চ বুধবার নিউইয়র্ক শিক্ষা বোর্ড সিটির পাবলিক স্কুলসমূহে দুই ঈদের দিন ছুটি ঘোষণার প্রজ্ঞাপণ জারি করে। আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০১৫-২০১৬) অর্থাৎ আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই ছুটি কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলে ইতিপূর্বে খ্রীস্টান ও জুইশদের বিশেষ দিনে ছুটি রয়েছে। স্কুল বোর্ডের ঐ প্রজ্ঞাপণের ফলে সিটি স্কুলের মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীরাও খ্রীস্টান ও জুইসদের মতো ঈদের দু’দিন ছুটি পাবে। শীঘ্রই এই ছুটি স্কুল ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সী, ম্যাসেচুসেটস ও ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন স্কুল ডিস্ট্রিক্টে দুই ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আরো উল্লেখ্য যে, ২০০৯ সালে দুই ঈদের (ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা) দিনকে ছুটি ঘোষণা সংক্রান্ত একটি বিল সিটি কাউন্সিলে পাশ হলেও তৎকালীন মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গের আপত্তির কারণে তা আইনে পরিণত হয়নি। আরো উল্লেখ্য, মুসলিম সম্প্রদায় মহান আল্লাহতায়ালার রাজি-খুশীর জন্য দীর্ঘ এক মাস সিয়াম-সাধনার পর প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল ফিতর আর হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত ‘কোরবানী’ স্মরণে প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল আযহা পালন করে আসছে।
বুধবার সকালে অ্যারাবীয়ান অধ্যুষিত ব্রুকলীনের ব্যারিজ এলাকার একটি সরকারি স্কুলে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত জণাকীর্ণ ঐ অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়ো বলেন, মুসলমানদের দুই ঈদের ছুটি শিক্ষাঙ্গনকে আরো প্রফুল্ল করবে। মেয়র বলেন, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে আমার নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ হলো। ‘বিশ্বের রাজধানী’ খ্যাত বহুজাতিক সংস্কৃতির শহর নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম অভিবাসীদের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক দিন বলে উল্লেখ করেন সিটি মেয়র। মেয়র ব্লাজিও’র এই ঘোষণার সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল মুসলিম সম্প্রদায় আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন।
স্কুল চ্যান্সেলর কারমেন ফারিনা বলেন, সকল ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি আনগত্যবোধ থেকেই দুই ঈদে ছুটি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত ঈদুল আযহার দিন ব্রুকলীনের পিএস/আইএস ৩০ স্কুলে ৩৬ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। তিনি বলেন, ঈদের ছুটির ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় মূলবোধ, সহমর্মিতা আর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পর্কে জানতে পারবে।
নিউইয়র্ক সিটির গত নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় বিজয়ী সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়োর অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল ঈদের ছুটি। ঐ নির্বাচনে সকল মেয়র প্রার্থীর কাছে নিউইয়র্কের মুসলিম কমিউনিটিরও দাবী ছিলো পাবলিক স্কুলে হালার ফুড সরবরাহ আর দুই ঈদের ছুটি। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী-আমেরিকান মুসলিম কমিউনিটির মাফ মিসবাহ উদ্দিন, আব্দুস শহীদ, মাজেদা এ উদ্দিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সর্বশেষ গত ২ মার্চ সোমবার মেয়রের বাসায় নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত ডেমক্র্যাটিক পার্টির সকল কংগ্রেসম্যানের সাথে এক বৈঠকে মেয়রের নির্বাচনী অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন ‘বাংলাদেশী-আমেরিকানদের বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। এর ঠিক দু’দিন পরই সিটির শিক্ষা বিভাগ দুই ঈদের ছুটি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপণ জারি করলো।
এদিকে কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং-এর অফিস থেকে প্রেরীত এক অভিন্দন বার্তায় বলা হয়েছে: গ্রেস মেং মনে করেন ‘দুই ঈদে ছুটির ঘটনা মুসলিম-আমেরিকানদের জন্যেই শুধু নয়, ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাসী প্রতিটি আমেরিকানের জন্যে বড় একটি অর্জনের ঘটনা। সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধনকে এ ঘটনা আরো সংহত করতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।’ বার্তায় গ্রেস মেং বলেন, বহুজাতিক এই শহরে মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবীর পুরণে তিনি নিজেও আনন্দিত। একই সাথে গ্রেস মেং চীনা সম্প্রদায়ের লূনার নিউইয়ার এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দিওয়ালী উৎসবের ছুটিও স্কুলের বার্ষিক ছুটির তালিকায় অন্তর্ভূক্তির আহবান জানান।
সিটির দুই ঈদের ছুটির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক এডভোকেট লেটিটা জেমস । ৪ মার্চ প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই ঘোষণার ফলে বহুজাতিক এই সিটির মূল্যবোধের বহি:প্রকাশ ঘটলো যে, আমরা ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠি নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।’
নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের স্পিকার মেলিসা মার্ক ভিভেরিটো ঈদ ছুটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, নিউইয়র্ক সিটির ৮০ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ১০ লাখের মত মুসলমান। পাবলিক স্কুল সিস্টেমে কতজন মুসলমান ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা না থাকলেও আমি মনে করছি, পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার দিনে স্কুলে ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্তটি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্যে অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।
স্কুল ক্যালেন্ডারে দুই ঈদের দিন ছুটি ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশী-আমেরিকান মুসলিম কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. ওয়াহিদুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের সাবেক সভাপতি নার্গিস আহমেদ, বাংলাদেশী অ্যামেরিকান পাবলিক অ্যাফেয়ার্স (বাপাফ)-এর সভাপতি সালেহ আহমদ, অ্যাসাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিজবা উদ্দিন, কউিনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আব্দুস শহীদ, এডভোকেট এন মজুমদার, নজরুল হক, জয়নাল আবেদীন, ইঞ্জিনিয়ার কামাল ভূঁইয়া, সাবুল উদ্দিন, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, নারী নেত্রী মাজেদা এ উদ্দিন প্রমুখ। দুই ঈদের দাবীটি আদায়ের জন্যে তারা দীর্ঘদিন যাবত সোচ্চারও ছিলেন।