ঢাকা ডেস্ক: দৈনিক মানবকণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সংগঠক, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, কবি জাকারিয়া চৌধুরী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে রাজধানী ঢাকার গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা রেখে যান।
জানা যায়, তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে গত ৯ মার্চ থেকে তিনি আশিয়ান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।। পরে অবস্থার অবনতি হলে গত ১১ মার্চ গ্রীন লাইফ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জাকারিয়া চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার সুজাতপুর ইউনিয়নে। তার বাবা ইয়াইয়া চৌধুরী ১৯৫৭ সালে কুষ্টিয়া ও ঢাকার প্রথম বাঙালী ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও এমএনএ (মেম্বার অব ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলী) ছিলেন। বাবার চাকরির সুবাদে ১৯৩৩ সালের ১৮ নভেম্বর জাকারিয়া চৌধুরী ভারতের আসামের শিবসাগরে জনগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শামিল হন। তার শিক্ষা জীবন কেটেছে মেঘালয়ের রাজধানী শিলং ও করিমগঞ্জে, তারপর সিলেটে। তিনি ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে আইন পড়ার সময় পাকিস্তানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠনে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে ভূমিকা রাখেন।
১৯৬৩ সনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান লন্ডনে এক সংক্ষিপ্ত সফরে গেলে জাকারিয়া চৌধুরী তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য স্বাধীনতার কথাটা বঙ্গবন্ধুর কাছে উত্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু তার সঙ্গে এক মত পোষণ করেন। সেই অবধি বঙ্গবন্ধুর সাথে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। ১৯৭২ সালে দেশে ফেরেন জাকারিয়া চৌধুরী। ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি শ্রম মন্ত্রণালয়, জনশক্তি মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করেন।
জাকারিয়া চৌধুরী ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারী নির্বাচনে হবিগঞ্জ-২ আসন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন।