সম্পাদকীয় : বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন
- প্রকাশের সময় : ০১:৫৭:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ ২০২১
- / ৬২ বার পঠিত
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন আজ। বাংলা, বাঙালী ও বাংলাদেশের সঙ্গে অভিন্ন সত্তায় পরিণত হওয়া এই মহানায়কের জন্মদিন বাঙালী জাতির জন্য এক নির্মল আনন্দের দিন। আজ বিন¤্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হবে জাতির পিতাকে। শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর যেখানেই বাঙালী আছে, সেখানেই নিখাদ ভালোবাসায় উদযাপিত হবে এই দিনটি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে ঘোষিত ‘মুজিববর্ষ’ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় জনসমাগম এড়িয়ে ১৭ মার্চ সীমিত পরিসরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান উদযাপন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনের আয়োজনে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন প্রতিবেশী দেশগুলোর পাঁচ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। ১৭ থেকে ২৬ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের কেন্দ্রীয় ওই আয়োজনে পাঁচ দিন তাঁরা যোগ দেবেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালী জাতিকে একটি পতাকা দিয়েছেন, একটি স্বাধীন ভূখন্ড দিয়েছেন এবং বিশ্বসভায় বাঙালী জাতিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তাঁরই দেখানো পথ ধরে দেশ আজ এগিয়ে চলেছে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ার কাজে খুব বেশি সময় হাতে পাননি। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির মদদে কিছু বিশ্বাসঘাতক সেনা সদস্য তাঁকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। জাতির মুখে কালিমা লেপন করেছিল। বিদেশে থাকায় এই হত্যাকান্ড থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন তাঁর দুই কন্যা। আমাদের সৌভাগ্য, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা সেদিন নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে স্বাধীনতার অর্জনগুলো রক্ষায় এগিয়ে এসেছিলেন। দেশকে আবার বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথে এগিয়ে নিতে প্রাণপণ লড়াই করে চলেছেন। তাঁর সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। নানা ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলেছে।
বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় তিনি জন্মদিন পালন করেছেন শিশুদের নিয়ে। তাই শিশু সংগঠনগুলোর দাবির মুখে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। সে মোতাবেক আজ একই সঙ্গে জাতীয় শিশু দিবসও।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্য নেতাদের চেয়ে পৃথক এ জন্যই যে তিনি আমাদের দিয়ে গেছেন বাংলাদেশ নামক একটি জাতিরাষ্ট্র ও ভাষারাষ্ট্র। আমাদের হীনম্মন্যতা, জাতিসত্তার সংকট, ভাষার দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে রক্ষা করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলা ভাষা ও বাঙালী জাতির শিকড় গভীরে প্রোথিত করেছেন তিনি। আমরা সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে কথা বলি, নিজের পরিচয় দিতে পারি। আমাদের পরিচয়সংকট থেকে রক্ষা করেছেন বঙ্গবন্ধু।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ আমাদের অস্তিত্বের অংশ। নিজের অস্তিত্বের প্রয়োজনেই আমাদের বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগকে জানতে হবে। অস্তিত্ববিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। সেই সঙ্গে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে তাঁর আদর্শ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই তাঁকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন সম্ভব। (দৈনিক কালের কন্ঠ)