নিউইয়র্ক ০৫:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

এইচ টি ইমামের ইন্তেকাল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মার্চ ২০২১
  • / ৩০ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক: গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (৩ মার্চ) দিনগত রাত সোয়া ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমামের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। বুধবার দিনগত রাত ১টা ২৩ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম রাত ১টা ১৫ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। জানাজা ও দাফনের বিষয়টি পরে জানানো হবে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, এইচ টি ইমাম ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এইচ টি ইমামের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বার্তায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় তাঁরা এইচ টি ইমামের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করা এইচ টি ইমাম ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী: এইচ টি ইমামের জন্ম ১৯৩৯ সালে। পুরো নাম হোসেন তৌফিক হলেও পরে তিনি এইচ টি ইমাম নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জেলায়। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন এইচ টি ইমাম। আর ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে। এরপর রাজশাহী কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভের পর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি নেন। তখন তিনি বাম ছাত্র সংগঠনে যুক্ত ছিলেন। পড়াশোনা শেষে রাজশাহী সরকারি কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন লন্ডনের স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এইচ টি ইমাম। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিবও হন তিনি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ অগাস্ট পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিপরিষদের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি যোগাযোগ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবও হন।
অবসর নেওয়ার পর এইচ টি ইমাম আওয়ামী লীগে সক্রিয় হন। দলের নির্বাচন পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন, যে কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে উপদেষ্টার দায়িত্ব দেন। প্রথমে তিনি জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৪ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা পরিচালনা বিষয়ে এইচ টি ইমামের রচিত কয়েকটি গ্রন্থকে বেশ গুরুত্ব দেন গ্রন্থ সমালোচকরা। তিনি নিজে নির্বাচনে না দাঁড়ালেও তার ছেলে তানভীর ইমাম সিরাজগঞ্জের একটি আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এইচ টি ইমামের ইন্তেকাল

প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মার্চ ২০২১

ঢাকা ডেস্ক: গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (৩ মার্চ) দিনগত রাত সোয়া ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমামের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। বুধবার দিনগত রাত ১টা ২৩ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম রাত ১টা ১৫ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। জানাজা ও দাফনের বিষয়টি পরে জানানো হবে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, এইচ টি ইমাম ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এইচ টি ইমামের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বার্তায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় তাঁরা এইচ টি ইমামের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করা এইচ টি ইমাম ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী: এইচ টি ইমামের জন্ম ১৯৩৯ সালে। পুরো নাম হোসেন তৌফিক হলেও পরে তিনি এইচ টি ইমাম নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জেলায়। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন এইচ টি ইমাম। আর ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে। এরপর রাজশাহী কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভের পর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি নেন। তখন তিনি বাম ছাত্র সংগঠনে যুক্ত ছিলেন। পড়াশোনা শেষে রাজশাহী সরকারি কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন লন্ডনের স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এইচ টি ইমাম। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিবও হন তিনি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ অগাস্ট পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিপরিষদের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি যোগাযোগ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবও হন।
অবসর নেওয়ার পর এইচ টি ইমাম আওয়ামী লীগে সক্রিয় হন। দলের নির্বাচন পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন, যে কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে উপদেষ্টার দায়িত্ব দেন। প্রথমে তিনি জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৪ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা পরিচালনা বিষয়ে এইচ টি ইমামের রচিত কয়েকটি গ্রন্থকে বেশ গুরুত্ব দেন গ্রন্থ সমালোচকরা। তিনি নিজে নির্বাচনে না দাঁড়ালেও তার ছেলে তানভীর ইমাম সিরাজগঞ্জের একটি আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য।