রোহিঙ্গা ইস্যু ও খুনি রাশেদকে ফেরত নিয়ে আলোচনা

- প্রকাশের সময় : ০১:০১:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
- / ৬৭ বার পঠিত
শহীদুল ইসলাম: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøনকেনের সঙ্গে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রæয়ারী) বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দেওয়া, বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ৩৪ মিনিট স্থায়ী বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিøনকেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য এবং করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের মনোভাব বুঝতে এবং বাংলাদেশের অবস্থান জানাতে মঙ্গলবার বিকালে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ওয়াশিংটন ডিসির ডালাস এয়ারপোর্টে অবতরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটন ডিসির একটি হোটেলে অবস্থান করছেন। এর আগে ২২ ফেব্রæয়ারী রাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত পূর্বনির্ধারিত বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে বাইডেন প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, দেশটিতে এখন সামরিক সরকার রয়েছে। এই মুহূর্তে প্রত্যাবাসন আলোচনা এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল (এনভয়) নিয়োগ করে চাপ সৃষ্টির আহবান জানান তিনি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত দেওয়ার আহবান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি একজন ইহুদি খুনিকে ফেরত দিয়েছে। রাশেদ চৌধুরী ইতিহাসের একজন জঘন্য খুনি। এজন্য তাকে ফেরত দেওয়ার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন ড. মোমেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে এনার্জি খাত ছাড়াও আইসিটি, গ্রিন এনার্জি ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøনকেনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøনকেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান এবং করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বৈঠকে শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের গতানুগতিক সম্পর্কের বাইরে ইস্পাত কঠিন ও সুদৃঢ় সম্পর্ক স্থাপনে বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে আমরা শুধু এনার্জি সেক্টরে নয়, আইসিটি, গ্রিন এনার্জি ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতেও যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিøনকেন এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অবতরণের পর টেলিফোন আলাপচারিতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, আগামী দু’দিন বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সংক্ষিপ্ত হলেও তার এই সফর ফলপ্রসূ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এছাড়া সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির চেয়ারম্যান বব মেনেন্দেজসহ আরও কয়েকজন সিনেটরের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। এছাড়া কাউন্সিল ফর ফরেন রিলেশনসে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও নিউলাইনস ইনস্টিটিউটে রোহিঙ্গা বিষয়ক দুটি পৃথক সভা ও ইউএস চেম্বারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটন পোস্টে একটি সাক্ষাৎকারও দেবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। (দৈনিক ইত্তেফাক)