উৎকণ্ঠার অবসান, স্বস্তিতেই শপথ বাইডেনের : আমেরিকায় নতুন দিনের শুরু

- প্রকাশের সময় : ০৬:৫৬:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১
- / ১৬৩ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বুধবার (২০ জানুয়ারী) যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছেন ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানীয় সময় বুধবার স্থানীয় বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ৪৮ মিনিট) শপথ নেন তিনি। এর প্রায় পাঁচ মিনিট আগে শপথ নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়ে বাইডেন বলেন, সবাই মিলেই নতুন আমেরিকা গড়ে তুলব। ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে শপথ নিলেন বাইডেন। এ মুহূর্তে দেশটিতে করোনাভাইরাস মহামারির সংক্রমণ ও জনগণের মধ্যে বিদায়ি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভেদের দেওয়াল বড় সংকট হিসাব রয়েছে। শুধু দেশে নয়, বহির্বিশ্বেও মার্কিন প্রভাব ক্ষয়িষ্ণু করেছেন ট্রাম্প। বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হলো নতুন দিন।
করোনাভাইরাসে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি, মহামারির ধাক্কায় নাজুক অর্থনীতি, ভেঙে পড়া পররাষ্ট্র নীতি, ক্ষমতা হন্তান্তর নিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চূড়ান্ত অসহযোগিতা আর সহিংসতার আশঙ্কার শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন।
শপথ নেওয়ার আগ মুহূর্তে টুইটে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন দিনের শুরু হলো। আর শপথ নেওয়ার পর সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম টুইটে বাইডেন বলেন, সংকট মোকাবিলায় আমাদের এক মুহূর্ত নষ্ট করার সময় নেই। এ কারণেই আজ (বুধবার) আমি ওভাল অফিসে যাচ্ছি কাজ শুরু করতে, বড় পদক্ষেপ নিয়ে পরিবারগুলোকে আশু স্বস্তি দিতে। খবর বিবিসি, সিএনএন, এএফপি ও রয়টার্সের।
ওয়াশিংটনে আমেরিকান কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের ওয়েস্ট ফ্রন্টে শপথ অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন সংগীত তারকা লেডি গাগা। এ সময় উপস্থিত সবাই বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে একাত্ম হন। এরপর প্রথা অনুযায়ী প্রথমে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে পথ নেন কমলা হ্যারিস। তাকে শপথ পড়ান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেয়র। এর মধ্য দিয়ে আমেরিকা ইতিহাসে প্রথম নারী, কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয় বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে অভিষিক্ত হলেন কমলা হ্যারিস।
কমলা হ্যারিসের শপথ গ্রহণের সময় তার স্বামী ডাউ এমহফ বাইবেল ধরে রাখেন। এর পর বিখ্যাত শিল্পী জেনিফার লোপেজ যুক্তরাষ্ট্রের দেশাত্মবোধক গানের মূর্ছনায় আচ্ছন্ন করে রাখেন অভিষেক অনুষ্ঠানের কিছুটা সময়। এরপর জো বাইডেনকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। নিজের পরিবারের ১২৭ বছরের পুরনো বাইবেলের একটি কপি হাতে বাইডেন শপথবাক্য পাঠ করেন। এ সময় পারিবারিক বাইবেলটি ধরে রাখেন বাইডেন স্ত্রী জিল বাইডেন। ৩৫ শব্দের শপথবাক্য উচ্চারণের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানান প্রধান বিচারপতি। জো বাইডেনকে কিছু সময়ের জন্য আবেগপ্লুুত দেখা যায়।
৭৮ বছর বয়সি জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়ে তিন মিনিটের মধ্যে তার আসনে বসেন কিছুক্ষণের জন্য। এ সময় তিনি কাঁদছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটি প্রেসিডেন্টের ৫৯তম শপথ অনুষ্ঠান। শপথ অনুষ্ঠানে বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের স্বামী ডাউ এমহফসহ দুই পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন বিদায়ি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। অন্যদের মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটন এবং সাবেক ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা, লরা বুশ ও হিলারি ক্লিনটন।
সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ জিমি কার্টার (৯৬) ও সাবেক ফার্স্টলেডি রোজালিন কার্টার অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। তারা বিষয়টি আগেই জানিয়ে দিয়ে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে তাদের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। আরও উপস্থিত ছিলেন সামরিক, বেসামরিক শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাজারখানেক অতিথি, যাদের অধিকাংশই কংগ্রেস সদস্য ও বাইডেন-হ্যারিস পরিবারের লোকজন। তবে এ অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উপস্থিত ছিলেন না। শপথ অনুষ্ঠানের তিন ঘণ্টা আগে স্ত্রী মেলানিয়াসহ তিনি ওয়াশিংটন ছেড়ে চলে যান।
১৮৬৯ সালে প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসনের পর এবারই প্রথম বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার উত্তরসূরির অনুষ্ঠানে থাকলেন না। অবশ্য অনেক আগেই ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন না। বাইডেনের শপথের পর বক্তব্য দেন বিদায়ি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে ক্যাপিটল হিলে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের ভয়াবহ তন্ডবের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা ছিল, এ নিয়ে ছিল অনেক উৎকণ্ঠাও। তবে শেষ পর্যন্ত স্বস্তিতেই শেষ হয়েছে শপথ অনুষ্ঠান। ট্রাম্পের মেয়াদের শেষ দুই সপ্তাহের ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ সময়ের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন বাইডেন।
‘আমি একনিষ্ঠভাবে শপথ গ্রহণ করছি যে, আমি বিশ্বস্থতার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের দায়িত্ব সম্পাদন করব এবং আমি আমার সামর্থ্যরে সবটুকু দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সুরক্ষা, সংরক্ষণ ও প্রতিপালন করব’- শব্দগুলো তিনি বাক্য হিসেবে উচ্চারণ করেন। এ শব্দমালা উচ্চারণের করার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্টে পরিণত হন। শপথ নেওয়ার পর জো বাইডেন হোয়াইট হাউজে চলে যান। হোয়াইট হাউজই তার আগামী চার বছরের কর্মস্থল ও বাসস্থান।
হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট ফ্রন্টে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত সিনেটর এমি ক্লোবুচার প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘আজ যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র উঠে দাঁড়ানোর সময়। সব গ্লানি মুছে সব সময়ের মতো যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেওয়ার দিন আজ।’
শপথ অনুষ্ঠানের চেয়ারপারসন রিপাবলিকান সিনেটর রয় ব্লান্ট তার বক্তব্যে গত ৬ জানুয়ারী যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর হামলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তার আহ্বানে শপথ অনুষ্ঠানে সমবেত সবাই দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।
সিনেটর এমি ক্লোবুচার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিষেক বক্তব্য রাখতে আহ্বান জানান। অভিষেক বক্তব্যে বাইডেন প্রত্যাশা ও প্রতিশ্রæতির কথা বলেন। গত চার বছরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্ব আমেরিকান যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে, তা থেকে বেরিয়ে আশাবাদের কথা বলেন তিনি।
নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, গণতন্ত্র খুবই মূল্যবান। আজ গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে। আমি পুরো যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে আমার সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহবান জানাই। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার কথা উল্লেখ করে বাইডেন শ্বেতাঙ্গ রক্ষণশীলতা, বর্ণ বিদ্বেষ ও সহিংসতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলার আহবান জানান। আমরা আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের নেতৃত্বের আসনে নিয়ে যেতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস নানা সংঘাতের মধ্য দিয়ে গেছে। আমরা সব সময় ঐক্যবদ্ধভাবে এসব উতরে গেছি। ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো শান্তি নেই। চলুন নতুন করে শুরু করি। আমরা একে অন্যকে শোনার, শ্রদ্ধা করা শুরু করি। চলমান ভাবমূর্তির চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেক ভালো দেশ। আমেরিকারা জাতি হিসাবে শ্রেষ্ঠ এ কথা আমাদের প্রমাণ করতে হবে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে কমলা হ্যারিসের অভিষেক মার্কিন সমাজ ও সাংস্কৃতিক মানসে পরিবর্তনের পরিচায়ক উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, আজকের এ সময় সব সংকট মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের মুহূর্ত। ঐক্যই এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র। যারা আমাকে ভোট দিয়েছে, আর যারা দেননি- সবার জন্যই সমান লড়াই চালিয়ে যাব। আমেরিকান অর্থনৈতিক সংকটে দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের কথা উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, আমার কাছে সব বার্তাই আছে।
আমরা আমদের হৃদয়কে সম্প্রসারিত করে নগর ও প্রান্তিক যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান সব বৈষম্য দূর করতে পারব। আমাদের সমনে চলার জন্য একে অন্যকে প্রয়োজন। এক জাতি হিসাবেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা এক হয়ে কঠিন এ সময়কে অতিক্রম করব।
বিশ্ববাসীর উদ্দেশে বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আজ ও আগামী দিনের বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। এ সময় তিনি পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে একযোগে এগিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষত মহামারি মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। বক্তব্যের শেষ দিকে বাইডেন বলেন, প্রিয় আমেরিকান বন্ধুরা, আমি আজ যেখানে শেষ করছি, সেখান থেকেই শুররু হচ্ছে। ঈশ্বর ও আপনাদের সবার সামনে পবিত্র শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি আমি সব সময় আপনাদের সঙ্গেই থাকব। তিনি বলেন, আমি সংবিধানকে রক্ষা করব। রক্ষা করব গণতন্ত্রকে। যুক্তরাষ্ট্রকে আমি আগলে রাখব। আর আমি আপনাদের সবাইকে বলছি, ক্ষমতার কথা না ভেবে সম্ভাবনার কথা ভেবে আমি আপনাদের সেবা দিয়ে যাব। ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, জনস্বার্থই হবে মূল।
আমরা সবাই মিলে কোনো শঙ্কা নয়, এক আমেরিকান আশার গল্প রচনা করব; বিভাজন নয়, ঐক্যের গল্প লিখব; অন্ধকার নয়, লিখব আলোর গল্প। এমন এক গল্প, যা ভদ্রতা ও মর্যাদা, ভালোবাসা ও শুভকামনার।
স্থানীয় সময় ১২টা ১৩ মিনিটে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার বক্তৃতা শেষ করেন। ‘ঈশ্বর যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করুন, ঈশ্বর সবাইকে রক্ষা করুন’, বলে জো বাইডেন তার অভিষেক বক্তৃতা শেষ করেন।
গত ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করে বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে বাইডেনের বিজয় ট্রাম্প পুরোপুরিভাবে মেনে নিতে পারেননি। আদালত পর্যন্ত তিনি যান। এছাড়া কংগ্রেসে বাইডেনের বিজয় অনুমোদনের দিন ৬ জানুয়ারী উগ্রপন্থি সমর্থকদের তিনি উসকানি দিয়েছিলেন। ওইদিন ক্যাপিটল হিলে সন্ত্রাসী হামলায় এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
সাধারণত প্রেসিডেন্টের অভিষেক হয়ে থাকে আনন্দ-উল্লাসমুখর পরিবেশে। হাজার হাজার মানুষ অভিষেক অনুষ্ঠান উদযাপন করতে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জড়ো হন। কিন্তু ৬ জানুয়ারীতে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের ভয়াবহ হামলার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেদিকেই এবার বেশি মনোযোগ দিতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। এবার ডিসিতে ২৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়। বেশকিছু রাস্তা বন্ধ করে ও উঁচু সব বেষ্টনী দিয়ে ক্যাপিটল ভবন সুরক্ষিত করা হয়। চলাফেরাতেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
বাইডেনের জন্য চিঠি রেখে গেছেন ট্রাম্প: যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার উত্তরসূরি জো বাইডেনের জন্য একটি চিঠি রেখে গেছেন। তবে চিঠিটির বিষয়বস্তুসম্পর্কে এখনো কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও তার উত্তরসূরি জিল বাইডেনের জন্যও একটি চিঠি রেখে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আধুনিক ইতিহাসের প্রথা অনুযায়ী প্রেসিডেন্টরা অভিষেকের দিনই তার পূর্বসূরিদের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়ে আসছেন। এসব চিঠিতে সাধারণত শুভেচ্ছা বার্তা এবং পরামর্শ লেখা থাকে। সাধারণত এসব চিঠি রাখা থাকে হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসের ডেস্কে। যাতে নতুন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করেই সেই চিঠিটা হাতে পান।
বারাক ওবামার কাছ থেকে একই রকম চিঠি পেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই চিঠিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছিলেন ওবামা। তিনি লিখেছিলেন, ‘প্রাত্যহিক রাজনীতির টানাপোড়েনের পরও আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী রাখার দায়িত্ব আমাদের, অন্ততপক্ষে যেমনটা পেয়েছিলাম, তেমনটা রেখে যাওয়াটা জরুরি।’
বিল ক্লিনটনকেও চিঠি দিয়ে গিয়েছিলেন জর্জ এইচডবিøউ বুশ। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘আপনার মঙ্গল কামনা করি। আপনার পরিবারের মঙ্গল কামনা করি। আপনার সফলতা এখন আমাদের দেশের সফলতা। আপনার ভিত্তি মজবুত রাখার জোরালো চেষ্টা করেছি আমি।’
ট্রাম্প সমর্থকদের সমাবেশ প্রত্যাহার: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা যে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। জরুরি অবস্থার কথা উল্লেখ করে সমাবেশ বাতিল করেছে পাবলিক অ্যাডভোকেট নামে গ্রæপটি। ট্রাম্পপন্থি অন্যান্য গ্রæপের নেতারা বলেন, তারা ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন না। তাদের একজন বলেন, ‘কংগ্রেস সদস্য, বাইডেনের কর্মকর্তা এবং ৬০ হাজার ন্যাশনাল গার্ড ছাড়া সেখানে আর কেউ থাকবে না। এদিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে বুধবার উৎসব করেছে ডেমোক্র্যাটরা। তবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনেক সমর্থকই শহরটিকে এড়িয়ে চলেছেন। (দৈনিক যুগান্তর)